Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

জঙ্গিহামলার তথ্য নেই তবুও ঈদকে ঘিরে বিশেষ সতর্কতা

জাহিদুল ইসলাম সিহাব॥প্রিন্ট সংস্করণ

আগস্ট ৩০, ২০১৭, ০৫:৫৭ এএম


জঙ্গিহামলার তথ্য নেই তবুও ঈদকে ঘিরে বিশেষ সতর্কতা

কয়েকদিন আগেও রাজধানীসহ দেশের সকল শ্রেণীর মানুষের মধ্যে জঙ্গি নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় ছিল তুঙ্গে। এখন তা না থাকলেও কাটেনি তার রেশ। বসে নেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক তছনছ হলেও প্রথম সারির আরও কয়েকজন জঙ্গির অবস্থান নিশ্চিত করা এখনও সম্ভব হয়নি। ফলে জঙ্গিদের আবারও সংগঠিত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। আগামি ২ সেপ্টেম্বর ঈদুল আজহার দিন দেশের কোথাও ঈদগাহে জঙ্গিহামলার আশঙ্কাও করছেন সাধারণ মানুষ।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ পরিদর্শক সহেলী ফেরদৌস আমার সংবাদকে বলেন, জঙ্গি ইস্যুটি চলমান। ঈদুল আজহায় কোনও জঙ্গিহামলা ঘটবে কি না গোয়েন্দা সংস্থার সুস্পষ্ট কোনো রিপোর্ট আমাদের কাছে নেই। তবে ঈদকে সামনে রেখে আমরা সতর্ক আছি। যাতে কোনো প্রকার দুর্ঘটনা না ঘটে।

জানা গেছে এবার কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় সাত একর জমির উপর ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহে জঙ্গিহামলা সম্পর্কে কোনো গোয়েন্দা তথ্য না থাকলেও যেহেতু ২০১৬ রমজানের ঈদে ঈদগাহের কাছে জঙ্গিহামলা হয়েছিল, তাই ২ সেপ্টেম্বর ঈদুল আজহায় আলাদা নজর থাকবে পুলিশের। এ ঈদগাহে প্রতি ঈদে নামাজ পড়তে আসেন লাখো মানুষ। মসনদ-ই-আলা ঈশা খাঁর ষষ্ঠ বংশধর দেওয়ান হয়বত খান বাহাদুর কিশোরগঞ্জের জমিদারি প্রতিষ্ঠার পর ১৮২৮ সালে এ ঈদগাহ চালু করেন। প্রথম জামাতে সেখানে সোয়া লাখ মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন বলে মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখি মাঠ’।

পরে উচ্চারণের বিবর্তনে তা পরিণত হয় আজকের নাম শোলাকিয়ায়। ঈদ জামাতে দূরদূরান্ত থেকে মুসল্লিদের আসার সুবিধার্থে ‘শোলাকিয়া স্পেশাল’ নামে দুটি বিশেষ ট্রেনেরও ব্যবস্থা করে রেল কর্তৃপক্ষ। গত ২০১৬ সালের পহেলা জুলাই ঢাকার গুলশানে বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন জঙ্গিহামলার ঘটনায় ২০ জন নিহতের পর থেকে দেশের প্রধান সব ঈদ জামাতেই বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। শোলাকিয়াতেও ওয়াচ টাওয়ার থেকে এবং ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার সাহায্যে প্রতি মুহূর্তের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। ঈদের সকাল থেকে ঈদগাহ মাঠ ও আশপাশের এলাকায় থাকবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য।

উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদুর রহমান আমার সংবাদকে বলেন, আমাদের কাছে জঙ্গিহামলা ঘটার ব্যাপারে গোয়েন্দা সংস্থার কোনো তথ্য নেই। তবে আমরা সতর্ক আছি যাতে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে।

জানা যায়, ২০১৬ সালের ৭ জুলাই ঈদের সকালে বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির ঘটনায় শোলাকিয়া মাঠের জামাতে অংশ নিতে জড়ো হওয়া হাজার হাজার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। কথাছিল, বরাবরের মতোই মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ ঈদের জামাত পরিচালনা করবেন। কিন্তু এই গোলযোগের মধ্যে তিনি না পৌঁছানোয় শেষ পর্যন্ত স্থানীয় বড় বাজার জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা সোয়াইব আবদুর রউফের ইমামতিতে শোলাকিয়ার ঈদ জামাত হয়।

এবার ঈদের জামাত পরিচালনা করার জন্য মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ যাবেন কিনা এব্যাপারে জানতে চাইলে কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন খান আমার সংবাদকে জানান, তিনি ঈদের জামাত পরিচালনা করার জন্য যাবেন না।