প্রিন্ট সংস্করণ॥আব্দুল লতিফ রানা
মে ১৩, ২০১৮, ০২:৩৫ এএম
জন্মই ‘আজন্ম পাপ’। ঘৃণা, লোকলজ্জা, সমাজের চোখরাঙানি ও তিরস্কারের কষ্টগাথা মায়ের হৃদয় যেন ছিন্নভিন্ন করে দেয়। জন্মের পরই মা-বাবার কোলের বদলে ডাস্টবিনে, ড্রেনে, ফুটপাত ও হাসপাতালের আঙিনায় অনেক নবজাতকের ঠাঁই হচ্ছে। আবার ডাস্টবিন, জঙ্গলে এসব নবজাতককে কুকুর, পিঁপড়া আক্রমণ করছে। অপরাধ বিজ্ঞানীরা বলছেন, আমাদের দেশের সামাজিক রীতি-নীতি আর না মানার কারণে এসব ঘটনা অহরহ ঘটছে। অথচ এই অনাগত সন্তানকে ঘিরে মা-বাবার কত না রঙিন স্বপ্ন থাকে। মায়ের কোলজুড়ে পৃথিবীতে এলে কী নামে তাকে ডাকা হবে এ নিয়ে ভাবনার অন্ত থাকে না। এই ধরণীতে নতুন অতিথি আসার আগেই অনেক বাবা-মা নতুন খেলনা ও পোশাক কিনে তাদের ঘর ভরে রাখেন। এমন ভালোবাসা চিরন্তন। বাঙালি জননীর হৃদয়-মনজুড়ে তার সন্তান। তাকে ‘দুধে-ভাতে’ বড় করার স্বপ্ন। আবার এই স্বপ্ন ও ভালোবাসার বিপরীত চিত্রও অন্ধকারের কালো নিকষে ভরা। সেখানে স্নেহ-ভালোবাসার ছিটেফোঁটার চিহ্নও নাই। পৃথিবীর আলো দেখার আগেই অনেক শিশুকে হত্যা করা হয়। প্রায়ই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে উদ্ধার হচ্ছে পরিচয়হীন নবজাতক। আর প্রতিনিয়তই এধরনের ঘটনা রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঘটছে। গতকাল শনিবার ভোরে রাজধানীতে আবারও ময়লার স্তূপ থেকে এক নবজাতককে উদ্ধার করেছে পুলিশ। মোহাম্মদপুরের জনতা হাউজিংয়ের পার্শ্ববর্তী কাঁচাবাজারের সামনে রাখা একটি ময়লা পরিষ্কার করতে গিয়ে এক মেয়ে
নবজাতকের দেখা পান ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) এক নারী পরিচ্ছন্নকর্মী (ঝাড়ুদার)। এরপর তার দেওয়া সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ গিয়ে ওই নবজাতককে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করেন। মোহাম্মদপুর থানার ডিউটি অফিসার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হারুন অর রশিদ জানান, ভোরবেলা ডিএনসিসির এক নারীকর্মী ময়লা পরিষ্কার করতে এসে শিশুর কান্নার আওয়াজ শুনতে পান। পরে ডাস্টবিনের কাছে গিয়ে দেখেন কাপড়ে পেঁচানো এক মেয়ে নবজাতক। তখনও শিশুটির শরীরে সদ্যজন্ম নেওয়ার আভা স্পষ্ট। পরে ওই নারীকর্মী বিষয়টি সিটি কর্পোরেশনের ঊর্ধ্বতন এক পরিদর্শককে জানালে তিনি থানায় সংবাদ দেন। এরপর থানা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে। তাকে চিকিৎসার জন্য মোহাম্মদপুর টেম্পুস্ট্যান্ড সংলগ্ন গ্লাস আরমান হেলথ কেয়ারে ভর্তি করা হয়েছে। শিশুটিকে দেখাশোনা করছেন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক হোসেন। মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, মানবশিশু জন্মের পরই তাকে ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া গুরুতর আপরাধ। এসব ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়। তবে আমার পুলিশের চাকরির জীবনে নবজাতক উদ্ধারের কোনো ঘটনায় উদ্ধারকৃত নবজাতকের বাবা-মা’কে সনাক্ত করার মতো দেখি নাই।২০১৫ সালের ৩ মার্চ রাজধানীর উত্তরা ৪ নম্বর সেকশনের ২০/ডি রোডের ১৭ নম্বর বাড়ির সামনে ড্রেনের পাশ থেকে দুই মাসের একটি মেয়ে শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর গত ২০১৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি জন্মের পরই ভবন থেকে নিচে ফেলে দেওয়া নবজাতককে উদ্ধারের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে রমনা থানা পুলিশ। রমনার বেইলি রোডের পিঠাঘর-সংলগ্ন একটি বাসার চারতলা থেকে সদ্য ভূমিষ্ঠ ওই ছেলে নবজাতকটিকে ফেলে দেন মা বিউটি। ওই ঘটনাটি চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। নবজাতকটি উদ্ধারের ২৬ দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় ‘বেবি অব বিউটি’ মারা যায়। এছাড়া, গত ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি খিলগাঁওয়ের ৪২৭/সি ভবনের সামনে থেকে ভবনের ৫ম তলার বাসিন্দা শাহিনুর বেগম তাকে উদ্ধার করে। পরে পুলিশকে খবর দিলে প্রথমে শিশুটিকে খিলগাঁও খিদমা হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। তাছাড়া, মিরপুর স্টেডিয়াম গলির মুখে গত ২৫ মার্চ রাত সাড়ে ৮টার দিকে এক নবজাতকের কান্নার আওয়াজ ও নড়াচড়া দেখতে পান নাফিসা ইসলাম অনন্যা নামে এক নারী। পরে তার স্বামী ইঞ্জিনিয়ার মেহেদি হাসান আহাদ খবর পেয়ে ঘটপনাস্থলে হাজির হন। এসময় তিনি নবজাতকের শারীরিক অবস্থা ভালো নয় দেখে আসাদগেটস্থ কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের শিশু অধিকার পরিস্থিতি ২০১৭ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে গত বছর রাস্তা/ডাস্টবিন বা ঝোপ থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ের ১৭টি নবজাতক কুড়িয়ে পাওয়া যায়। আর ২০১৬ সালে ফেলে দেওয়া বা কুড়িয়ে পাওয়া নবজাতকের সংখ্যা ছিল ৯টি। এ ধরনের ঘটনা বাড়ে ৮৮ দশমিক ৮৯ শতাংশ। আর গত বছর অজ্ঞাত পরিচয়ের ২৪ শিশুর লাশ পাওয়া যায়, যার ৯৯ শতাংশই ছিল নবজাতক। নারী ও মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, সামাজিক অবক্ষয়ের কারণেই বিয়ে বহির্ভূত অনেক ধরনের সম্পর্কে জড়িয়ে যাচ্ছে নারী-পুরুষ। এজন্য নবজাতকের জন্ম যেমন বেড়ে গেছে, তেমনি বেড়ে গেছে জীবন্ত নবজাতককে ফেলে দিয়ে সব দায় থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার ঘটনা। এতে করে নবজাতকের জন্মদাতা বাবা-মা হয়তো নিষ্কৃতি পাচ্ছেন। কিন্তু ফেলে যাওয়া নবজাতকের কপালে কী ঘটছে?
এরপর আগে রাজধানীর কাফরুলের পুরনো বিমানবন্দরের মাঠের ঝোপে সিমেন্টের খালি বস্তায় মোড়ানো আবর্জনার স্তূপের পাশ থেকে এক নবজাতককে উদ্ধার করা হয়। একদল কুকুর সেই বস্তা থেকে নবজাতককে টেনেহিঁচড়ে বের করে টানাটানি করছিল। কুকুরের ঘেউঘেউ শব্দে পাশের মাঠে খেলতে থাকা কয়েক কিশোর প্রথমে ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। জাহানারা নামের স্থানীয় এক নারী নবজাতককে উদ্ধার করেন। এ সংবাদ প্রচারের পর প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডের (নিওনেটোলজি বিভাগ) তৎকালীন প্রধান অধ্যাপক ডা. আবিদ হোসেন মোল্লার নেতৃত্বে গঠন করা হয় পাঁচ সদস্যের চিকিৎসক বোর্ড। তাদের চেষ্টায় শিশুটিকে সুস্থ হয়। পরে তার নাম রাখা হয় ‘ফাইজা’, যার অর্থ বিজয়নী। এরপর শিশুটিকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের ছোটোমণি নিবাসে হস্তান্তর করা হয়। নানা আইনি ঝামেলা সত্ত্বেও অনেকেই তাকে দত্তক নিতে চেয়েছিলেন। আদালতের অনুমতি না থাকায় আপাতত ছোটোমণি নিবাসেই তার ঠাঁই হয়।
এছাড়া, গত ২০১১ সালের ৩ মে রাজধানীর সেন্ট্রাল রোড থেকে এক নবজাতককে উদ্ধার করেন মানবাধিকারকর্মী এলিনা খান। ততক্ষণে শিশুটির পা পিঁপড়ায় কামড়ে খেয়েছিল। ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসার পর সে সুস্থ হয়ে ওঠে। হাসপাতালের নথিপত্রে এলিনা খান শিশুটির নাম দেন ‘সান অব দ্য ওয়ার্ল্ড’। পরে নাম রাখেন তামজীদ। এখন এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে তামজিদ আদরে বেড়ে উঠছে। আবার গত ২০১৩ সালের ১৪ অক্টোবর নূরজাহান রোডে ডাস্টবিন থেকে হঠাৎ ভেসে আসে শিশুর কান্না। শিশুর কান্না শুনে সেখানে জড়ো হন উৎসুক পথচারীরা। এর মধ্যেই খবর চলে যায় পুলিশের দপ্তরে। মুহূর্তেই ছুটে আসে পুলিশের ভ্যানও। পরে ডাস্টবিনের ভেতরে কাপড়ে মোড়ানো ২ দিনের নবজাতক শিশু উদ্ধার করেন। এসময় নূরজাহান রোডের বাসিন্দা মিজানুর রহমান ও তার স্ত্রী মিম আক্তার ফুটফুটে শিশুটিকে কোলে তুলে নেন তারা। ওই পরিবার শিশুটি লালন-পালনের দায়িত্ব নেন। আবার কুড়িয়ে পাওয়া অথবা অবৈধ প্রেমের অবৈধ ফসল জন্মের পর তা একধরনে চক্র কৌশলে চুরি করে নিয়ে বিক্রি করছে। গত ২০১৬ সালের ২০ জানুয়ারি রাজবাড়ি এলাকায় এক গৃহপরিচারিকার কিশোরী মেয়েকে গৃহকর্তা দ্বারা ধর্ষিত হন। এরপর হাসপাতালে সন্তানের জন্ম দেয় সে। একপর্যায়ে সেই গৃহকর্তা ওই নবজাতক শিশুটিকে মৃত বলে প্রচার করেন। এর আগে গৃহকর্তা একাধিকবার সন্তান নষ্ট করার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় আদালতে মামলা করা হয়। রাজবাড়ী জেলা সদরের পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের এলাইল গ্রামের মৃত খন্দকার সামাদের ছেলে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী খন্দকার তৈমুর রহমান তোতার বাড়িতে গৃহপরিচারিকা কাজ করতেন। এ সুবাদে তার কিশোরী মেয়েও ওই বাড়িতে নিয়মিত যাওয়া-আসা করতো। গৃহকর্তা তোতা ছাড়া বাড়িতে আর কেউ থাকত না। এ সুযোগে লম্পট তোতা তার মেয়েকে ধর্ষণ করে। এছাড়া, রাজধানীর রমনার বেইলী রোডের ২৬ নম্বর প্রোপার্টিজ ম্যানশনের ছয়তলার একটি ফ্ল্যাটে মা বিউটি আক্তার গৃহকর্মীর কাজ করেন। বাসার বয়স্ক দম্পতির দেখাশোনাই তার কাজ। আর বিউটি আক্তারের সঙ্গে আরও একজন গৃহকর্মী ছিলেন। আর বিউটি আক্তারের কথা তিনি তার এক আত্মীয়ের (দুলাভাই) ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। যা আগে প্রকাশ করেননি। নবজাতক শিশুটি ভূমিষ্ঠ হওয়ার সময় বাসার আরেক গৃহকর্মী তাকে সহায়তা করেন। এসময় গৃহকর্ত্রী বাসায় ছিলেন না। এরপর তারা দুজনে সিদ্ধান্ত নিয়ে নবজাতকে ব্যালকনি থেকে ফেলে দেন। কিন্তু দ্বিতীয় তলার সানসেটে আটকা পড়ায় নবজাতকটি মারাত্মক আহতাবস্থায় বেঁচে যায়। পুলিশ নবজাতককে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। মাকেও চিহ্নিত করার পর চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনাটি রাজধানীসহ সারাদেণে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের তথ্যমতে, প্রতি বছর শুধু রাজধানীতেই শতাধিক নবজাতকের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে মামলা-জিডি হলেও অধিকাংশ ঘটনায় পুলিশ নবজাতক হত্যার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করতে পারে না। অপরদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, নবজাতক হত্যা ৩০২ ধারায় ফৌজদারি অপরাধ। জন্মের পরপরই শিশুকে ডাস্টবিনে বা অন্য কোনো অরক্ষিত জায়গায় ফেলে গেলেও মা-বাবার বিরুদ্ধে শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করার বিধান রয়েছে। তবে বছরে কত নবজাতকের লাশ উদ্ধার করা হয়Ñ এমন কোনো পৃথক পরিসংখ্যান পুলিশের কাছে নেই। জাতিসংঘ শিশু সনদ অনুচ্ছেদ-৬-এ বলা হয়েছে, প্রতিটি শিশুর বেঁচে থাকার জন্মগত অধিকারকে স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্রগুলো স্বীকৃতি দেবে। আর শিশুর বেঁচে থাকা ও উন্নয়নের জন্য যথাসম্ভব সর্বাত্মক নিশ্চয়তার ব্যবস্থা করবে রাষ্ট্র। কোনো ধর্ম, সমাজ, কোমল প্রাণ হত্যাকে সমর্থন করে না। ধর্মে ভ্রূণ ও শিশুহত্যা অন্য হত্যার মতোই অপরাধ বলে গণ্য। আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের সহকারী পরিচালক (সার্বিক) মোহাম্মদ হালিম সাংবাদিকদের বলেছেন, প্রতি বছর গড়ে রাজধানীতে একশ পরিচয়হীন নবজাতকের লাশ দাফন করা হয়। ময়নাতদন্তের পর এর অধিকাংশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গ থেকে দেওয়া হয়। আবার অনেক শিশু জন্মের পরপরই ডাস্টবিনে, জঙ্গলে, ময়লার স্তূপে, হাসপাতালের আঙিনায়, বাস ও রেলস্টেশনের পাশে ফেলে রাখা হয়। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কারণে কোনো নারী সন্তানসম্ভবা হলে লোকলজ্জার কারণে গর্ভপাত ঘটানো হয়। এছাড়া অনেক স্বামী-স্ত্রী ‘অনাকাক্সিক্ষত’ সন্তান বিবেচনা করে গর্ভপাতের আশ্রয় নেন। অনেক ক্ষেত্রে পরকীয়ার সম্পর্কে জড়িয়ে কোনো নারী সন্তানসম্ভবা হলে ভ্রূণ হত্যা করা হয়। নারীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অনেক পুরুষ দৈহিক সম্পর্কে জড়ান। ওই নারী সন্তানসম্ভবা হলে তাকে মেনে নেন না বা অনেকে পালিয়ে যান। পরে বাধ্য হয়ে ওই নারীকে গর্ভপাত ঘটাতে হয়। নবজাতক কন্যা হলে তাকে হত্যা করার ঘটনা ঘটছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এক কর্মকর্তা জানান, নবজাতক উদ্ধারের ঘটনায় যেসব মামলা ও জিডি হয়, তা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে সবচেয়ে ‘ক্লুহীন’ মামলা। এসব নিয়ে তদন্ত চালিয়ে যাওয়া তারা বাড়তি ‘ঝামেলা’ মনে করেন। রাজধানীতে কিছু নিবন্ধনহীনমেটারনিটি ক্লিনিকে অবৈধ গর্ভপাত করানো হচ্ছে। তারাই মূলত অনাকাক্সিক্ষত সন্তানের মা ও বাবাকে সন্তান হত্যায় প্ররোচনা দেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমোলজি বিভাগের শিক্ষক ও অপরাধ বিজ্ঞানী শাহারিয়া আফরিন আমার সংবাদকে জানান, আমাদের দেশের সামাজিক ব্যবস্থার কারণে এগুলো হচ্ছে। আবার অনেকেই নানা ধরনের ব্যবসার কারণেও করতে পারে। অনেক সময় দেখা যায়, স্বামীর সঙ্গে কোনো মেয়ের ডিভোর্স হচ্ছে। ঠিক তখন তার গর্ভে সন্তান এসেছে। ওই সময় গর্ভপাত ঘটানো যায় না। পরে যখন শিশুর মায়ের পেট থেকে জন্মের পর তারা ফেলে দিতে পারে। অথচ মাতৃগর্ভে ভূমিষ্ঠ ওই নবজাতকের কোনো অপরাধ ছিল না। পশ্চিমা দেশগুলোতে আমাদের দেশের সামাজিকতার ভিন্ন রূপ রয়েছে। সেখানে এসব ঘটনাকে তারা কিছুই মনে করছে না।