Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪,

উত্তর মিলছে না অনেক প্রশ্নের

প্রিন্ট সংস্করণ॥আব্দুল লতিফ রানা

ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৯, ০৫:৪০ এএম


উত্তর মিলছে না অনেক প্রশ্নের

*সিভিল এভিয়েশন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ক্ষোভ
*শাহজালালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বলেই অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ

হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল হওয়ার কারণেই বিমান ছিনতাই চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। ব্রিটিশ এভিয়েশন ফোর্সের আদলে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় এভিয়েশন সিকিউরিটি ফোর্স (এভসেক) ছাড়াও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে অস্ত্র নিয়ে বিমানে প্রবেশের ঘটনায় বিমানের যাত্রীরাসহ সর্বত্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার কোনো ত্রুটি নেই বলে গতকাল এক সংসাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ‘বিমান ছিনতাই চেষ্টা’র ঘটনা নিয়ে স্পষ্ট কিছুই বলেননি। ঘটনা তদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে বলে বিমান প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন। তা ছাড়া কথিত বিমান ছিনতাইকারী মাহাদী ওরফে পলাশ মাহবুবের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত অস্ত্রটি খেলনা নাকি আসল ছিল, তা নিয়ে কীভাবে সে বিমানে উঠল এসব প্রশ্নেরও জবাব নিশ্চিত করতে পারেননি। এদিকে এ ঘটনায় চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থানায় সিভিল এভিয়েশনের পক্ষ থেকে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।গতকাল সোমবার বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনা নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী। এ সময় সেখানে সচিব মহীবুল হক, সিভিল এভিয়েশনের চেয়াররম্যান এম নাঈম হাসান উপস্থিত ছিলেন।সংবাদ সম্মেলনে বিমান প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কলিগদের থেকে জানলাম, বিমান হাইজ্যাক হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা জোরদারের কথা বললাম। প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ হলে দেখলাম তিনি ঘটনা জানেন। কমান্ডো প্রসিড করতে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি (পিএম) সার্বক্ষণিক পুরো বিষয়টি মনিটর করেছেন। পরে জানলাম সবাই নিরাপদে রয়েছে। বিমানবন্দরের নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, এখানে এমন কোনো লিকেজ ছিল না বা নেই যে; একজন যাত্রী এভাবে বিমানে যেতে পারেন। বিমান সচিব মহীবুল হক অস্ত্র নিয়ে প্রবেশের বিষয়ে বলেছেন, সেটা অস্ত্র কি-না আমরা ওয়াকিবহাল নই। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে এটা নিয়ে বিস্তারিত বলতে পারব।তিনি বলেন, আমরা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখেছি, অন্য ১০ জন যাত্রীর মতো তাকেও তল্লাশি করা হয়েছিল। তার কাঁধে একটি ব্যাগ ছিল। সে স্ক্যানিং মেশিনের ভেতর দিয়ে গেছে, কিন্তু সেখানেও কিছু দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন তিনি। আগামি পাঁচ দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দেবে বলে সচিব জানিয়েছেন। সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান এম নাঈম হাসান বলেন, বিমান থেকে সবাই বেরিয়ে যাওয়ার পর ‘সো-কলড’ হাইজ্যাকার বিমানে একাই ছিল। আমরা সেদিন অনেক কিছুই শুনেছি। তদন্ত প্রতিবেদনে পুরো বিষয়টি বিস্তারিত জানা যাবে। বিমানে গুলি বিনিময়ের বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, এয়ারক্রাফটে গুলি বিনিময় হলে তার চিহ্ন থাকত। আমরা কোনো চিহ্ন কোথাও পাইনি। খেলনা পিস্তলেও শব্দ হয়। যাত্রীরা শব্দ শোনার কথা বলেছেন। তদন্ত না করে পিস্তল আসল নাকি নকল বলা যাবে না।বিমান ছিনতাই চেষ্টার ঘটনায় মন্ত্রণালয়ের পাঁচ সদস্যের কমিটিএদিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ময়ূরপঙ্খী বিমান ছিনতাই চেষ্টার ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। বিমান প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলীর নির্দেশে ওই কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটিতে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোকাব্বির হোসেনকে প্রধান করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেনÑ বিমান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব জনেন্দ্রনাথ সরকার, সিভিল এভিয়েশনের পরিচালক (ফ্লাইট সেফটি) উইং কমান্ডার জিয়া, সিকিউরিটি কনসালটেন্ট গ্রুপ ক্যাপ্টেন (অব.) আলমগীর এবং বিমানের পরিচালক (প্লানিং) এয়ার কমডোর (অব.) মাহবুব জাহান খান। গত রোবাবর রাতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা তানভীর আহমেদের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিমান ছিনতাইকারী মাহাদী পলাশ র‌্যাবের তালিকাভুক্ত ছিল
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ‘ময়ূরপঙ্খী’ উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী আগে থেকেই তালিকাভুক্ত অপরাধী বলে জানিয়েছে এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। তার নাম পলাশ আহমেদ। যদিও কমান্ডো অভিযানের পর বলা হয়েছিল, ক্রুকে ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী নিজের নাম ‘মাহাদী’ বলে জানিয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে র‌্যাবের এক বার্তায় বলা হয়, ছিনতাই চেষ্টায় কমান্ডো অভিযানে নিহত সন্ত্রাসী র‌্যাবের অপরাধী ডেটাবেইজের অন্তর্ভুক্ত। তার নাম মো. পলাশ আহমেদ। সে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার পিরিজপুরের দুধঘাটা ইউনিয়নের বাসিন্দা। তার বাবার নাম পিয়ার জাহান সরদার। র‌্যাব আরো জানায়, বিমানটি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দুবাইগামী হলেও কথিত ছিনতাইকারী পলাশ ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রী ছিল। তার কাছে থাকা টিকিট অনুযায়ী তার নাম ‘আহমেদ মো. পলাশ’। আর ফ্লাইটের-১৭ এ আসনের যাত্রী ছিল।র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান গণমাধ্যমকে বলেন, পলাশের তথ্য আমাদের অপরাধী ডেটাবেইজের তালিকাভুক্ত ছিল। তবে ঠিক কোনো ধরনের অপরাধের জন্য সে আমাদের ডেটাবেইজভুক্ত ছিল, তদন্তের স্বার্থে সে বিষয়ে এখনই কিছু জানানো যাচ্ছে না। উপযুক্ত সময়েই বিষয়টি গণমাধ্যমের কাছে জানানো হবে বলে জানান তিনি।

পিস্তলটি ছিল খেলনা, বিস্ফোরকও পায়নি পুলিশ
উড়োজাহাজ ছিনতাই চেষ্টা প্রায় তিন ঘণ্টার উত্তেজনার পর ঘটনার অবসান হয়। কমান্ডো অভিযানে নিহত হয় কথিত বিমান ছিনতাইকারীর মাহাদী। আর তার কাছে পাওয়া পিস্তলটি ছিল খেলনা। এ ছাড়া তার সঙ্গে আর কোনো বিস্ফোরকও ছিল না। গত রোববার দিবাগত মধ্যরাতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মাহবুবার রহমান সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন। তিনি জানান, কমান্ডো অভিযানে নিহতের মরদেহ আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তার কাছে যে অস্ত্রটি পাওয়া গেছে সেটা ফেক, ওটা খেলনা পিস্তল ছিল।তার আগে গত রোববার রাত পৌনে ৮টার দিকে বিমানবাহিনীর চট্টগ্রাম জহুরুল হক ঘাঁটির কমান্ডার এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান ব্রিফিংয়ে বলেছিলেন, এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। তার বয়স ২৫-২৬ বছর। তার কাছ থেকে একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে। পিস্তলটি আসল কি-না তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। এরপর রাত রাত পৌনে ৯টার দিকে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সেনাবাহিনীর চট্টগ্রাম অঞ্চলের জিওসি মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী সেনা কমান্ডোরা চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অভিযান পরিচালনা করেন। প্রথমে ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তারের আহ্বান জানানো হলেও সে কমান্ডোদের ওপর চড়াও হয়। এ সময় আমাদের সঙ্গে গোলাগুলিতে সে আহত হয়। এরপর বাইরে মারা যায়।তিনি বলেন, নিহত ছিনতাইকারী নিজেকে মাহাদী হিসেবে দাবি করে। প্রধানমন্ত্রী ও তার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চান। কিন্তু নিজের স্ত্রীর কোনো ফোন নম্বর দিতে পারেনি। সৌভাগ্যবশত চট্টগ্রামে উপস্থিত ছিলেন হলি আর্টিসানের কমান্ডো অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইমরুল। তিনি ওই অভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছেন। মাত্র আট মিনিটেই অভিযান শেষ হয়। এর আগে ছিনতাইকারীকে কথায় ব্যস্ত রাখেন এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল নাঈম হাসান রাতেই এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ৭টা ১৭ মিনিট থেকে ৭টা ২২ মিনিট পর্যন্ত কম্বাইন্ড অপারেশন হয়েছে। তখন তিনি এই ছিনতাইয়ের কোনো কারণ জানাতে পারেননি। তবে তিনি বলেছিলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পারিÑ স্ত্রীর সঙ্গে বিবাদের জের ধরে সো-কলড ছিনতাইকারী বিমানটি ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। সে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলতে চেয়েছিল বলে আমরা জানতে পেরেছি। বিমানটির খবর আমরা জানতে পেরে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করি। পিএম অফিসেও কথা বলি। পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রী আমাদের কিছু নির্দেশনা দেন, সেই নির্দেশনা অনুযায়ী অভিযান পরিচালনা করা হয়।

ভিন্ন পথে অস্ত্র বিমানে উঠল কি-না খতিয়ে দেখা হচ্ছে : বেবিচক
কোনোভাবেই অস্ত্রধারী বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বেষ্টনী পার হয়ে এয়ারক্রাফটে ওঠা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল নাঈম হাসান। ঘটনার পরপরই জরুরি বৈঠক করে বেবিচক। পরে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেছেন তিনি। তিনি আরো বলেন, আমরা অবাক হয়েছি বটে। কারণ বিমানবন্দরের নিরাপত্তা খুবই জোরদার। এখানে কেউ একটি সুঁইও নজরের বাইরে নিতে পারবে না। এটি (অস্ত্র) বাইরের কোনো পথে এয়ারক্রাফটে পৌঁছে দেয়া হয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

নারী অপহরণ মামলায় র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিল পলাশ
পলাশ আহমেদকে গত ২০১২ সালে এক নারীকে অপহরণের ঘটনায় গ্রেপ্তার করেছিল র‌্যাব। তখন তার বয়স ছিল ১৮ বছর। তখন সে ২০ দিন কারাগারে ছিল।গতকাল সোমবার দুপুরে র‌্যাব সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান। তিনি বলেছেন, গত ২০১২ সালের মার্চ মাসে পলাশ আহমেদ ও তার এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার অপরাধ ছিল, সে একজন নারীকে অপহরণ করে আট লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। র‌্যাবের ক্রিমিনাল ডেটাবেইজ অনুযায়ী তার জন্মসাল ১৯৯৪ ইং। তখন গ্রেপ্তারের পর নিজেকে বিবাহিত বলে দাবি করে পলাশ। তিনি আরো জানান, উড়োজাহাজ ছিনতাই চেষ্টার ওই ঘটনার পর র‌্যাব-৭ ঘটনাস্থলে যায়। র‌্যাবের বোমা ডিস্পোজাল ইউনিট কাজ করে। তার শরীরে বিস্ফোরক সদৃশ্য যা পাওয়া গেছে তাতে কোনো বিস্ফোরক ছিল না। এটা ফেক একটা জিনিস ছিল, যেখানে ভুয়া তার-সার্কিট দিয়ে ভেস্টের মতো তৈরি করা হয়েছিল।

ছেলের লাশ নিতে অস্বীকৃতি পলাশের বাবার
নিহত পলাশের লাশ নিতে তার পরিবার অস্বীকৃতি জানিয়েছে। পলাশের বাবা পিয়ার সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘পলাশ পরিবারের অবাধ্য সন্তন ছিল। এ জন্য আমরা তার লাশ গ্রহণ করব না।’ বিমানে থাকা ফিঙ্গার প্রিন্ট অনুসন্ধান করে র‌্যাবের ডেটাবেইজে থাকা একজনের তথ্যাদির সঙ্গে পলাশের তথ্যের মিল পাওয়া যায়। এলাকাবাসী জানায়, মাদ্রাসায় পড়াশোনা করলেও পলাশের গান-বাজনার প্রতি অনেক ঝোঁক ছিল। পরবর্তীতে সে নাটক-সিনেমার সঙ্গে জড়িয়ে উচ্ছৃঙ্খল হয়ে যায়। পলাশের বাবা পিয়ার জাহান আরো বলেন, ‘ছেলে বেয়াড়া ছিল। কী করত, কোথায় থাকত, তা জানতাম না।’ সর্বশেষ একটানা ১৫ দিন বাড়ি ছিল পলাশ। এর আগে এতটা সময় সে বাড়ি থাকেনি। দুবাই যাওয়ার কথা বলে গত শুক্রবার বাড়ি ছেড়ে যায় পলাশ।