Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

হতাশায় পদোন্নতিবঞ্চিত নার্সরা

প্রিন্ট সংস্করণ॥আসাদুজ্জামান আজম

ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৯, ০৭:০৪ পিএম


হতাশায় পদোন্নতিবঞ্চিত নার্সরা

নাসিং কর্মকর্তাদের দশম গ্রেড থেকে নবম গ্রেডে পদোন্নতি নিয়ে বৈষম্যের অভিযোগ ওঠেছে। সকল যোগ্যতা থাকার পরও জেলা পাবলিক হেলথ নার্স পদে কর্মরতদের পদায়ন করা হয়নি। ফলে অসন্তোষ বিরাজ করছে বঞ্চিত নার্সদের মধ্যে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, পদোন্নতির ক্ষেত্রে কোনো বৈষম্য হয়নি, নিয়ম অনুযায়ী সব করা হচ্ছে। সূত্র মতে, পদোন্নতি ও সিলেকশন গ্রেড নিয়ে দীর্ঘদিন সমস্যায় ছিলেন ৩৬ হাজার নার্স। উচ্চতর ডিগ্রিসহ সব ধরনের যোগ্যতা থাকলেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় একই পদে আছেন বছরের পর বছর। পরবর্তীতে গত বছর প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনায় নার্সদের গ্রেড পদ্ধতিতে আনা হয়। এরপর শুরু হয় পদোন্নতি প্রক্রিয়া। এরই অংশ হিসেবে ২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের আওতাধীন নার্সিং কর্মকর্তাদের দশম গ্রেড থেকে নবম গ্রেডে পদোন্নতির জন্য যোগ্যতারভিত্তিতে এসিআর ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রাদিসহ তালিকা চেয়ে নির্দেশনা পাঠায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে ওই চিঠিতে কোনো সাল উল্লেখ করা হয়নি। সূত্র জানায়, মন্ত্রণালয়ের চিঠির পর পদোন্নতির ক্ষেত্রে একটি মাত্র যোগ্যতা বিবেচনায় এনেছে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর। সেটি হলো চাকরিতে বয়সের জ্যৈষ্ঠতা, পদোন্নতি তালিকায় ৮৫ ব্যাচ পর্যন্ত মূল্যায়ন করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা না থাকলে চাকরি বয়স নির্ধারণ করে আটকে দেয়া হয়েছে কর্মরতদের পদায়ন। উচ্চতর ডিগ্রি বা মাঠে কাজ করার অভিজ্ঞতা বিবেচনায় আনা হয়নি। ইতোমধ্যে জেলা পাবলিক হেলথ নার্স পদে দশম গ্রেড থেকে নবম গ্রেডে পদোন্নতি নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। যা নিয়ে বঞ্চিতরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন। তথ্য মতে, গত বছর সিনিয়র স্টাফ নার্সদের দশম গ্রেড বা দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়। জেলা পাবলিক হেলথ নার্স পদে দীর্ঘ দিন নিজ বেতনে দায়িত্ব পালন করছেন সিনিয়র স্টাফ নার্সরা। জেলা পাবলিক হেলথ নার্স পদে পদায়নের পর প্রায় সবাই ছয় থেকে আট বছর ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এ নার্সদের অনেকেই বিএসসি, এমএসসি ও এমপিএইচ এবং পিএইচডি ডিগ্রিও অর্জন করেছেন। কিন্তু পদোন্নতির ক্ষেত্রে মাঠের অভিজ্ঞতাসহ উচ্চর ডিগ্রি বাদ রেখে জ্যৈষ্ঠতা বিবেচনায় আনা হয়েছে। আর এতে জেলা পাবলিক হেলথ নার্স পদে দায়িত্বরতদের এখন আবারো নিজ পদে ফিরে যেতে হচ্ছে। এটা অনেকটা চপেটাঘাতের মতো দেখছেন তারা। একাধিক জেলা পাবলিক হেলথ নার্সের অভিযোগ, দীর্ঘ সময় ওই পদে দায়িত্ব পালনের পরও পদোন্নতিবঞ্চিত করা হয়েছে। অধিদপ্তরের একটি চক্রের কারণে পদায়ন থেকে দূরে রাখা হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা বিভাগের একটি জেলার পাবলিক হেলথ নার্স পদে কর্মরত কর্মকতা জানান, ‘দীর্ঘ ছয় বছর ওই পদে চাকরি করে আসছি। নার্সিংয়ের একজন বড় কর্মকর্তা হিসেবে জেলার সবাই জানেন। এখন পদোন্নতি না পাওয়ায় আমাকে হাসপাতালে ফিরে যেতে হচ্ছে। এটা আমার জন্য কোনোভাবেই সুখকর নয়।’জানতে চাইলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ডা. শিব্বির আহমদে ওসমানী বলেন, পদোন্নতি যথাযথ নিয়মে হয়েছে। পদোন্নতির জন্য ৭০০ জনের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সেখান থেকে পিএসসির মাধ্যমে ২৯৩ জনকে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, জেলা পাবলিক হেলথ নার্সরা ভুল বুঝে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। আসলে নার্সদের গ্রেডিং পদ্ধতি নিয়ে দীর্ঘ দিনের জটিলতা ছিল। প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি নির্দেশনায় তা কেটেছে এবং পদোন্নতি চলছে। যারা এখন পদোন্নতি পেয়েছেন, তারা সকলে জ্যৈষ্ঠ। তাদের চাকরির বয়স শেষের দিকে। সাময়িক ক্ষুব্ধ হলেও পদায়নের জটিলতা কেটে গেছে, তারা অল্প সময়ের মধ্যে পদোন্নতি পাবেন। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। পুরো পদোন্নতি প্রক্রিয়া বিশ্লেষণ করার পরামর্শ দেন তিনি।