জানুয়ারি ২২, ২০১৬, ০২:২২ পিএম
সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছিল শুক্রবার। আর তাই শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের নিয়ে জমে উঠেছে বিজ্ঞান মেলা। ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের অভাবনীয় আবিষ্কার ও প্রজেক্ট দেখতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীরা। যা থেকে বাদ যায়নি ছোট্ট শিশুটিও।
তথ্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কল্যাণে মানব সভ্যতার ব্যাপক উন্নতি সাধন এবং শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানের জ্ঞান প্রদানের লক্ষেই এ মেলার আয়োজন। রাজধানীর লায়েন্সল্যাবে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) আয়োজনে শুরু হয় বিজ্ঞান, শিল্প ও প্রযুক্তি মেলা।
শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দারুণ উৎসাহ-উদ্দীপনায় অংশ নিয়েছে এক ঝাঁক ক্ষুদে ও তরুণ শিক্ষার্থী। যাদের বলা চলে ক্ষুদে বিজ্ঞানীও। মেলায় অংশ নেয়া ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের স্বপ্ন যেন আকাশ ছোঁয়া। দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য কিছু করার ভাবনা প্রতিনিয়ত তাড়িত করে তাদের।
বিসিএসআইআর প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এই মেলায় রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন গ্রুপের ৬২টি প্রতিষ্ঠান এবং ১৫টি বিজ্ঞান ক্লাবের ৭৭০জন ক্ষুদে বিজ্ঞানী। নিজেদের মেধা ও শ্রম দিয়ে তৈরি করেছে নানা ধরনের প্রজেক্ট। শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী চিন্তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে এই মেলাতে।
যার মধ্য দিয়ে তারা জানান দিয়েছে, সুযোগ পেলে তারাও পাল্টে দিতে পারে বিশ্বকে। প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশের জন্য, বিশ্বের জন্য তারাও আবিষ্কার করতে পারেন নতুন কিছু। যা এর আগে কেউ ভাবেনি, আবিষ্কারও করেনি। এই সকল পজেক্ট নিয়ে ক্ষুদে বিজ্ঞানীরা হাজির হয়েছে মেলাতে। ক্ষুদে শিক্ষার্থী, শিক্ষক-অভিভাবক থেকে শুরু করে বাদ যায়নি ছোট্ট শিশুটিও। একটির পর একটি ষ্টল ঘুরেছেন আর বিস্ময় ভরা চোখে ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের কাছে বর্ণনা শুনেছেন। ক্ষুদে বিজ্ঞানীরাও উৎসাহ নিয়েই প্রজেক্টের খুঁটি-নাটি ব্যাখ্যা করেছেন দর্শনার্থীদের কাছে। মেলা পরিবেশ ও বায়ু দুষণ রোধে সুপরিকল্পিক ও পরিবেশ বান্ধব শহর তৈরি প্রজেক্ট দিয়েছে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা।
রাজধানীতে যানবাহন ও শিল্পকারখানা থেকে নির্গত কালো ধোঁয়ায় প্রতিনিয়ত বিষাক্ত হচ্ছে পরিবেশ। অলিগলি থেকে শুরু করে গোটা শহর এখন এই বিষাক্ত বায়ুতে বিপর্যস্ত। মুক্ত নিঃশ্বাস নেয়ার জায়গাটুকুও যেন নেই। বাতাসে মিশতে না দিয়ে রিসাইকেলের মাধ্যমে এই বিষাক্ত ধোঁয়া থেকে লবণ ও পানি উৎপাদন করার প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন ঢাকা কলেজের এই শিক্ষার্থীরা। নিজেদের প্রচেষ্টায় প্রকল্পটির একটি মডেল (রুপরেখা) তৈরি করেছেন এই ক্ষুদে বিজ্ঞানীরা।
এদিকে শহীদের স্মৃতি কলেজের তিন শিক্ষার্থী তৈরি করেছে উপকারী পোকা চাষ করে কিভাবে পরিবেশ দূষণ থেকে দেশকে রক্ষা করা যায়। শিক্ষার্থীরা বলেন, বীজ থেকে চারা জন্মানোর আগেই তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো এবং দেশটাকে পরিবেশ বান্ধব করতে কীটনাশক ব্যবহার না করে উপকারী পোকা-মাকড় চাষ করে। উৎপাদন বৃদ্ধি ও পরিবেশ দূষণ হয় না।
এছাড়াও কেউ এসেছে যানজট বিহীন নগরী গড়ার প্রকল্প নিয়ে। ভূমিকম্প থেকে কীভাবে রক্ষা পাওয়া যাবে তারই উপায় সন্ধান করেছে কেউ। জ্বালানি বিহীন গাড়ি চালানোর কৌশলও উপস্থাপন করেছে কেউ। আবার বাতাস থেকে বিদ্যুৎ উদ্ভাবন, গ্যাস সাশ্রয় পদ্ধতি, আবর্জনা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন কীভাবে সম্ভব তাও দেখাতে চেয়েছে এই ক্ষুদেবিজ্ঞানীরা।