কুষ্টিয়ায় স্কুল শিক্ষিকাকে কুপিয়ে হত্যা

নজরুল ইসলাম মুকুল, কুষ্টিয়া প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২২, ০৪:৪৫ পিএম

কুষ্টিয়ায় এক স্কুল শিক্ষিকাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। সোমবার বেলা ১১টার দিকে শহরের হাউজিং ডি ব্লকের ২৮৫ নম্বর বাসার নিজ কক্ষের বিছানার ওপর থেকে রোকশানা খানম (৫২) রুনা নামে ওই স্কুল শিক্ষিকার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

রোকশানা খানম কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের ইংরেজী বিষয়ের একজন সিনিয়র শিক্ষিকা ছিলেন। তার স্বামী খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান এলজিইডি’র যশোর চৌগাছার হিসাবরক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। 
অপর দিকে কুষ্টিয়ার খোকসার গড়াই নদী থেকে যুবকের গলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, ওই স্কুল শিক্ষিকার নিজের ৬তলা বিশিষ্ট একটি বাড়ি আছে। তার ওই বাড়িতে নিঃসন্তান ওই স্কুল শিক্ষিকা দ্বিতীয় তলায় একাই বসবাস করতেন। ওই বাসার চতুর্থ তলায় থাকতেন ওই শিক্ষিকার মৃত ভাই এ কে এম নূরে আসলামের পরিবার।

ভাতিজা নওরোজ কবির নিশাত জানান, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ফুপু রোকশানা খানমকে তারা ডাকতে গিয়ে দেখেন দরজা ভেতর থেকে লক করা। অনেক ডাকাডাকি করার পরও দরজা না খোলায় তারা জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে বিষয়টি জানালে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তার দরজা ভেঙে ফেলার জন্য বলে।

কয়েকজন মিলে দরজা ভেঙে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে তারা দেখতে পান দোতালার দক্ষিণ পাশের শয়ন কক্ষের বিছানার ওপর কাত হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় তার মরদেহ পড়ে রয়েছে। মাথায় জখমের চিহ্ন। ওই ঘরের আসবাবপত্র, কাপড়-চোপড়, ড্রয়ার সবকিছু ছড়ানো-ছিটানো অবস্থায় মেঝেতে পড়ে রয়েছে। পুলিশকে খবর দেওয়া হলে বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ, র‌্যাব, পিআইবি, ডিবি পুলিশসহ আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায়।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন খাঁন জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি একটি হত্যাকাণ্ড। তবে কারা, কী উদ্দেশ্যে তাকে হত্যা করেছে, বিষয়টি এখনো স্পষ্ট নয়। দুর্বৃত্তরা দোতালার বারান্দার দরজা ভেঙে ওই বাড়িতে প্রবেশ করে এবং হত্যাকাণ্ড শেষে আবার ওই দরজা দিয়েই পালিয়ে যায়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। সার্বিক বিষয় পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।

এ ব্যাপারে কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ এফতে খাইরুল ইসলাম বলেন, রোকশানা খানম তার স্কুলের একজন সিনিয়র ইংরেজীর শিক্ষিকা ছিলেন। একজন ভালো শিক্ষিকা হওয়ার পাশাপাশি তিনি একজন ভালো মানুষ ছিলেন। তার কোনো শত্রু থাকতে পারে, এটা আমার বিশ্বাস হয় না। তিনি স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে শিক্ষিকা রোকশানা খানমের হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

কেএস