দুর্যোগপ্রবণ উপকূলীয় জেলা বরগুনায় নেই আবহাওয়া অফিস

বরগুনা প্রতিনিধি প্রকাশিত: মে ১৩, ২০২৩, ০১:১৬ পিএম

দেশের সর্ব দক্ষিণের জেলা সাগর তীরবর্তী বরগুনায় প্রতি বছরই কোনো না কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হানে। অথচ উপকূলীয় এ জেলায় এখনো আবহাওয়া সংশ্লিষ্ট কোনো অফিস নির্মাণ হয়নি।

ফলে সঠিক সময়ে সঠিক পূর্ভাবাস না পেয়ে বার বার প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত হচ্ছে এই জনপদ। ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে এখানকার সাধারণ মানুষ, জেলে ও কৃষকরা।

শুধু তাই নয়। অভিযোগ রয়েছে, বিগত দিনের ঘূর্ণিঝড় সিডর, মহাসেন, আইলা, রোয়ানু ও মোরার সময় আবহাওয়া অফিসের দেওয়া তথ্যের সঙ্গে ঝড়ের গতি ও স্থান পরিবর্তনের অমিল ছিল এখানে।

বরগুনা পাবলিক পলিসি ফোরামের আহবায়ক মো. হাসানুর রহমান ঝন্টু বলেন, বিগত প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ের সময় আবহাওয়া অফিসের তথ্যের সঙ্গে অনেক গরমিল থাকায় গোটা উপকূলীয় এলাকায়ই জনসাধারণের ওপর বন্যার গতি ও স্থান পরিবর্তনের প্রভাব পড়েছে।

তালতলীর পায়রা (বুড়িশ্বর) নদীর বেরিবাঁধ এলাকার হারুন মাঝি বলেন, আবহাওয়া অফিস না থাকায় ঘূর্ণিঝড়ের খবর পেলেই জলোচ্ছ্বাসের ভয়ে ঝুকিপূর্ণ বেড়িবাঁধের কাছে গিয়ে আমাদের রাত দিন বসে থাকতে হয়। একটি স্থানীয় আবহাওয়া অফিস আমাদের খুব দরকার।

বরগুনা জেলা নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন কামাল বলেন, বরগুনায় শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ আবহাওয়া অফিস নির্মাণ করা হোক। এখানে আবহাওয়া অফিস নির্মাণ করা হলে এখানকার মানুষজন আবহাওয়ার সঠিক পূর্ভাবাস পেয়ে সঠিক ব্যবস্থা নিতে পারবে।

বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, এখানে বসে সঠিক সময়ে আবহাওয়ার সংকেত না পাওয়ায় গভীর সাগরে থাকা জেলেদের আমরা তথ্য দিতে পারি না। যার ফলে প্রতি বছরই ঝড়ের কবলে পড়ে বহু জেলে ট্রলার ডুবিতে মারা যাচ্ছেন।

বরগুনা জেলা দুর্যোগ প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) উপ পরিচালক কিশোর কুমার সরদার বলেন, এ জেলায় আবহাওয়া সংশ্লিষ্ট কোনো অফিস না থাকার কারণে প্রায়ই আমাদের জনগণের তোপের মুখে পড়তে হয়। ঢাকা থেকে আবহাওয়ার তথ্য সংগ্রহ করতে যে সময় লেগে যায়, এখানে ততক্ষণে আবহাওয়া অনেক পরিবর্তন হয়ে যায়।

বরগুনার জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান বলেন,  বরগুনা দুর্যোগপ্রবণ একটি এলাকা এবং প্রতি বছরই এ অঞ্চলে বন্যা বা ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানায় জানমালের অনেক ক্ষতি হয়। এ কথা বিবেচনা করে আমরা ইতোমধ্যে ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় সব ধরনের পস্তুতি সম্পন্ন করেছি।

তিনি আরো বলেন, প্রয়োজন থাকার পরও আবহাওয়া অফিস না থাকায় এখানকার মানুষের দীর্ঘদিনের আক্ষেপ রয়েছে। আমি আশাবাদী শীঘ্রই এখানে একটি স্থানীয় আবহাওয়া অফিস স্থাপন হবে এবং বিষয়টি দ্রুত সরকারের নজরে আসবে।

বেলাল/এআরএস