অবৈধ সংযোগে গাজীপুরে গ্যাস সংকট

কাশিমপুর (গাজীপুর)প্রতিনিধি প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৫, ২০২৪, ১১:৪৭ এএম

গাজীপুরে অবৈধ আবাসিক গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা না হলে দেখা দিতে পারে তীব্র গ্যাস সংকট। ইতিমধ্যেই কাশিমপুর, কোনাবাড়ীসহ অনেক এলাকায় গ্যাস মধ্যরাতের অতিথি হিসেবে দেখা দিচ্ছে।

গ্যাস সংকটে ভুক্তভোগী তিতাসের বৈধ গ্রাহকদের অভিযোগ,একদিকে নতুন অবৈধ গ্রাহক অপর-দিকে যেসব বাড়িতে বৈধ গ্যাস সংযোগ রয়েছে এমন অনেক গ্রাহক নিজের খেয়াল খুশি মতো গ্যাসের চুলার সংখ্যা বৃদ্ধি করছে। একটি বৈধ গ্যাস সংযোগ থেকে একাধিক অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিলেও দেখার কেউ নেই। অনেকে আবার এসব অবৈধ সংযোগের জন্য মাসিক ভাড়াও নিচ্ছেন। গত কয়েক বছরে অসাধু ঠিকাদার ও গ্যাস দালালদের মিথ্যা প্রলোভনে মহানগরীর লাখ লাখ মানুষের কোটি কোটি টাকা গায়েব হয়েছে।

অসাধু ঠিকাদার ও দালালরা অনেক এলাকায় অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দিয়ে পগাড়পাড়।অথচ সেই ঋণের ঘানি আজও গ্রাহকদের টানতে হচ্ছে। হরিলুট থেকে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ‍‍`গ্যাস‍‍` রক্ষার দাবি জানিয়েছেন গ্রাহকরা। সেই সঙ্গে অসাধু ঠিকাদার ও গ্যাস দালালদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নিলে গাজীপুরে গ্যাস সংকট অচিরেই মহাসংকটে রূপ নিতে পারে বলে জানান গ্রাহকরা।

গ্রাহকদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে চন্দ্রা তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেডের একাধিক কর্মকর্তা জানান, কোনাবাড়ী, কাশিমপুরে অবৈধ আবাসিক গ্যাস গ্রাহকের সংখ্যা তাদের জানা নেই। তাদের মাঠ পর্যায়ে গ্যাস সংযোগ তদারকিতেও দেখা যাচ্ছে না। তবে তিতাসের কয়েকজন ঠিকাদার জানিয়েছেন, নতুন গ্যাস সংযোগে নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও কোনাবাড়ী, কাশিমপুরে অবৈধ আবাসিক গ্যাস গ্রাহক সংখ্যা ৪৫ হাজার বহু আগেই পেরিয়েছে।"

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোনাবাড়ী-কাশিমপুরের অধিকাংশ এলাকায় গত এক বছরে বহু নতুন বাসা-বাড়ি নির্মিত হয়েছে এবং হচ্ছে।মূলত গার্মেন্টস শ্রমিকদের ভাড়াটিয়া হিসেবে পাওয়ার আশায় এসব বাসা-বাড়ি নির্মিত হয়েছে। নতুন করে গড়ে উঠেছে এমন অসংখ্য টিনশেড, টিনশেড বিল্ডিংঘরসহ বহুতল ভবনে রাতের আঁধারে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়েছে।

কোথাও কোথাও অবৈধ সংযোগের জন্য সিটি করপোরেশনের অনুমোদন না নিয়েই পিচঢালাই রাস্তা কাটা হয়েছে। এসব অবৈধ সংযোগের সঙ্গে সম্পৃক্ত তিতাসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও ঠিকাদার, বিভিন্ন এলাকার মাতাব্বরের লোকজন। এই মাতব্বররা মূলত গ্যাসের দালাল। এরা অবৈধ সংযোগে লাগিয়ে দিচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ রাইজার।

অনেকেই আবার বেশি গ্যাস পাওয়ার লোভে এসব সস্তা রাইজারে নানা ধরনের কেরামতিও করেছেন। ফলে দেখা দিয়েছে বিস্ফোরণসহ মারাত্মক অগ্নিকান্ডের আশঙ্কা। অথচ ভুক্তভোগী বৈধ গ্রাহকরা নিয়মিত গ্যাস বিল পরিশোধ করেও গ্যাসের আশায় থেকে অবশেষে চিড়ামুড়ি খেয়ে রাত পার করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহারকারী জানিয়েছেন, তারা ভাড়ার উদ্দেশ্যে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বাসা-বাড়ি নির্মাণ করেছেন। কেউ জমি বিক্রি কেউ বা বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে এসব নির্মাণ কাজ শেষ করেছেন। নতুন গ্যাস সংযোগের সুযোগ অনিশ্চিত। কিন্তু থেমে নেই ব্যাংক ও এনজিওর মাসিক কিস্তি। অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ নিতেও তাদের গুনতে হয়েছে লাখ লাখ টাকা।

উক্ত বিষয়ে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড চন্দ্রা জোনের ব্যবস্থাপক মোস্তফা মাহবুব বলেন, অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহারের কোন সুযোগ নেই। আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এলেই তাৎক্ষণিকভাবে অবৈধ সংযোগের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

এইচআর