শতকোটি টাকার তরমুজ বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা

ফেনীতে চরের অর্থনীতির পালে নতুন হাওয়া

এস এম ইউসুফ আলী, ফেনী প্রকাশিত: মার্চ ২৭, ২০২৪, ১২:৫৮ পিএম
ছবি: আমার সংবাদ

ফেনীতে ৬২৬ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ করা হয়েছে। ভালো ফলনের আশায় মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। পরিবেশ অনুকূলে থাকলে চাষিদের বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে শতকোটি টাকারও বেশি।

স্থানীয় কৃষি বিভাগ বলছে, প্রতিবছরের চেয়ে এবার সোনাগাজীর চরসহ ফেনীর ছাগলনাইয়ার ফেনী নদীর চরের ঘোপাল, শুভপুর, ফুলগাজী, পরশুরাম ও দাগনভূঞাঁয় বাড়ছে তরমুজের আবাদ। ফলটি চাষের জন্য এ অঞ্চলের মাটির গুণগত মান ভালো হওয়ায় ফলনও ভালো মিলছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ফেনী নদীর তীরের সমুদ্র উপকূলীয় জনপদ সোনাগাজী উপজেলার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলের। ধান, মাছ ও বিস্তীর্ণ ভূমির এ অঞ্চলের সমৃদ্ধিতে নতুনমাত্রা যোগ করেছে অর্থকরী ফসল তরমুজ। মাটির গুণগত মান ভালো হওয়ায় এখানকার উৎকৃষ্ট তরমুজ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সারা দেশে।চরের কৃষি অর্থনীতির পালে লেগেছে নতুন হাওয়া।

এ চরে বাণিজ্যিকভাবে তরমুজ আবাদ বেশি দিনের নয়। ২০১৭ সালে নোয়াখালীর সুবর্ণচর এলাকা থেকে আগত এক কৃষক পরীক্ষামূলকভাবে সোনাগাজীর চরদরবেশ ইউনিয়নে তরমুজ চাষ করেন।

ওই বছরে তার লাভজনক সফলতা দেখে ২০১৯ সালে ৮ থেকে ১০ জন কৃষক তাদের জমিতে রবি মৌসুমে তরমুজ চাষ করে লাভবান হন। সেই থেকে বাণিজ্যিক চাষাবাদ শুরু। গত মৌসুমে ৬০ কোটি টাকার বেশি তরমুজ বিক্রি করা হয়েছিল। এর আগের মৌসুমে বিক্রি হয়েছিল ২৬ কোটি টাকার তরমুজ।

সরেজমিনে দেখা যায়, সোনাগাজী উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়ন, চরচান্দিয়া, চরদরবেশ ইউনিয়ন, সোনাগাজী সদর ইউনিয়ন, আমিরাবাদ ইউনিয়নের ১০টি গ্রামের ফসলের মাঠে চলছে তরমুজ আবাদের মহাযজ্ঞ। চাষিদের ব্যস্ততায় খেত ঘিরে বিরাজ করছে প্রাণচাঞ্চল্য। অনেক জমিতে গাছে এসেছে ফুল-ফল। সার, পানি ছিটানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।

কৃষকরা বলছেন, ধান ও অন্য ফসলের চাইতে তরমুজে লাভ বেশি। সোনাগাজীর মাটিও তরমুজের জন্য ভালো। সে কারণেই তরমুজ আবাদে ঝুঁকেছেন তারা।

আব্দুল্লাহ আল নোমান নামের এক কৃষক বলেন,  চরের এ মাটিতে আগে তরমুজ চাষ হতো না। গত কয়েক বছর চাষ হচ্ছে। বৃষ্টি-খরা না থাকলে কৃষক লাভবান হয়ে থাকে। আমরাও ভালো লাভের আশা করছি।  

এছাড়া বছরের এ সময়ে তরমুজ পুরো এলাকার অর্থনীতিতে রাখে ইতিবাচক ভূমিকা। তরমুজ চাষে অর্থনৈতিক পরিবর্তন এসেছে অনেকের। এমনটা মনে করছেন স্থানীয়রা। চরের এসব তরমুজ কিনতে অনেকেই আসছে শহর থেকে।

নজরুল ইসলাম সাইমুম নামে অপর এক কৃষক জানান, তরমুজ চাষাবাদ, ফলন উঠানো ও পরিবহণকে ঘিরে এলাকার অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে উঠে। বিশাল জনগোষ্ঠী এ কর্মযজ্ঞের সঙ্গে জড়িত রয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ফেনীর উপ পরিচালক মো. একরাম উদ্দিন বলেন, তরমুজ ফেনীর একটি অন্যতম অর্থকরী ফসল হয়ে উঠছে। প্রতিবছর এ জেলায় তরমুজের আবাদ বাড়ছে। 

চলতি মৌসুমে পুরো ফেনী জেলায় তরমুজ আবাদ হয়েছে ৬২৬ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে শুধু সোনাগাজীতেই চাষ হয়েছে ৫৭৫ হেক্টর জমিতে।

এআরএস