টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভুল রক্ত পুশ করার অভিযোগে আব্দুর রউফ (৬৫) নামের এক রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। হাসপাতালের ল্যাব টেকনোলজিস্ট ভুল রক্তের গ্রুপ নির্ধারণ করায় এবং চিকিৎসকদের অসাবধানতায় সাতদিন ধরে যন্ত্রণায় ভোগার পর বুধবার দিবাগত রাত ২টা ৩০ মিনিটে মারা যান তিনি।
মৃত আব্দুর রউফ টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার কৌপাখী গ্রামের বাসিন্দা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাঁর ছেলে উজ্জ্বল হোসেন (রানা)।
১৮ জুন ‘টাঙ্গাইল ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে’ হাড়ের সমস্যা ও অন্যান্য শারীরিক জটিলতা নিয়ে ভর্তি হন আব্দুর রউফ। জরুরি ভিত্তিতে রক্ত প্রয়োজন হলে পরিবারের সদস্যরা ‘ও’ পজেটিভ রক্তদাতা নিয়ে আসেন। কিন্তু হাসপাতালের ল্যাব টেকনোলজিস্ট রঞ্জু রক্তের গ্রুপ এবি পজেটিভ বলে শনাক্ত করেন। এতে স্বজনরা আবার এবি পজেটিভ রক্ত জোগাড় করে দেন, যা সন্ধ্যায় রোগীর শরীরে পুশ করা হয়।
রক্ত দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই আব্দুর রউফের শরীরে প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। তখন চিকিৎসকরা রক্ত দেওয়া বন্ধ করে দেন এবং রোগীকে দ্রুত টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।
টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ আরও অন্তত চারটি বেসরকারি ক্লিনিকে পরীক্ষা করে রোগীর রক্ত ‘ও’ পজেটিভ পাওয়া যায়। অথচ পূর্বে জেনারেল হাসপাতাল এবং একটি বেসরকারি ক্লিনিকে করা পরীক্ষায় তা ‘এবি’ পজেটিভ দেখানো হয়েছিল।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. খন্দকার সাদিকুর রহমান বলেন, এটা পুরোপুরি ল্যাব টেকনোলজিস্টের গাফিলতি। আমরা দায় এড়াতে পারি না। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ল্যাব টেকনোলজিস্ট রঞ্জু দাবি করেন, বারবার পরীক্ষা করেও এবি পজেটিভই পেয়েছি। তবে রোগীর পরিবারের দাবি, ‘এই ভুলেই আমাদের বাবার জীবন গেল। যদি প্রথমবারেই সঠিক রক্ত দেওয়া হতো, হয়তো তিনি বেঁচে যেতেন।’
টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ভুল রক্ত পুশের কারণে রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছিল। আমরা যথাযথ চিকিৎসা দিয়েছি। পরে উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দেওয়া হয়।
রোগীর ছেলে উজ্জ্বল বলেন, একজন রোগীকে সঠিক রক্ত দিতে না পারলে সেই হাসপাতাল কীভাবে দায়িত্ব নেবে? আমরা তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি দাবি করছি।
বিআরইউ