বরিশালে অবরোধকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ, আহত অন্তত ৩০

বরিশাল ব্যুরো প্রকাশিত: জুলাই ৯, ২০২৫, ০৭:০২ পিএম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে বরিশালে মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বুধবার দুপুর ২টার দিকে বরিশাল সদর উপজেলার দুর্গাপুরে বরিশাল-ভোলা মহাসড়কে বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সামনে এই ঘটনা ঘটে।

দীর্ঘ দেড় মাস ধরে চলা আন্দোলনের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা ‘বিআইটি’ (বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি) মডেলে স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের এক দফা দাবিতে সকাল থেকেই পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সড়ক অবরোধ করেন। প্রবল বর্ষণের মধ্যেও শিক্ষার্থীরা বরিশাল-ভোলা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবস্থান নেন। এতে সড়কের দুই পাশে প্রায় সাত কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র যানজট দেখা দেয় এবং যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন।

ঘটনাস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ছাড়াও সেনাবাহিনীর সদস্যরাও ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থান নেন।

দুপুর ২টার দিকে পুলিশ শিক্ষার্থীদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিতে গেলে প্রথমে কথা কাটাকাটি ও পরে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করে অবরোধ তুলে দেয়। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ঘটনাস্থলে নারী পুলিশ সদস্য উপস্থিত থাকলেও ছাত্রীদের ওপর পুরুষ পুলিশ সদস্যরাই হামলা চালিয়েছেন।

আহতদের মধ্যে রয়েছেন—শুভ চন্দ্র সরকার, শাহবাজ আশরাফি, আয়নান চৌধুরী, সচেতন, অনুপম, বদর, মহিবুল্লাহ, আদিত্য কুন্ডু, রাকিব মিয়া, মেহেদী হাসান, মাহবুব, নয়ন এবং ছাত্রী ইয়াদ ও বিথী।

তবে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (বিএমপি) একটি দায়িত্বশীল সূত্র শিক্ষার্থীদের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ঘটনার পর কিছুটা শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ করলেও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

বিএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি বা মামলা দায়ের হয়নি। তিনি বলেন, “সকাল থেকে জাতীয় মহাসড়ক অবরোধের কারণে তিনটি বিভাগের সড়ক যোগাযোগে বিপর্যয় ঘটে। পুলিশ ও প্রশাসন সহনশীলতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে।” 
উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে বরিশাল, ফরিদপুর ও ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ২০ মে থেকে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। চলছে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’। গত সোমবার বরিশাল প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের দ্বৈত শাসন থেকে মুক্ত হয়ে বিআইটি মডেলে স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠানের দাবি জানিয়ে আসছি। বর্তমানে অধিভুক্ত তিনটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে।”

তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “দাবি না মানা হলে আন্দোলন আরও কঠোর হবে।”

ইএইচ