জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসার জন্য জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র (পঙ্গু হাসপাতাল) পরিদর্শনে গিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ‘নো ট্রিটমেন্ট, নো রিলিজ’ (না চিকিৎসা, না ছাড়পত্র) নির্দেশ দিয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা— এমনই অভিযোগ করেছেন আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ এক শিক্ষার্থী।
সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এ মামলার দ্বিতীয় সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন আবদুল্লাহ আল ইমরান নামের ওই শিক্ষার্থী। তার জবানবন্দিতে উঠে আসে উল্লেখযোগ্য এই দাবি।
ইমরান জানান, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই রাজধানীর বিজয়নগরের পানির ট্যাংক এলাকায় পুলিশের গুলিতে তিনি আহত হন। গুলি লাগে তার বাঁ হাঁটুর নিচে। পরে তাকে ভর্তি করা হয় আগারগাঁওয়ের জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে।
তিনি বলেন, “২৬ বা ২৭ জুলাই সকাল ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পঙ্গু হাসপাতালে পরিদর্শনে আসেন। তিনি আমার কাছে এসে ‘আপা’ বলে ডাকতে বলেন। এরপর আমার পড়াশোনার বিষয়, হলে থাকি কি না ইত্যাদি জানতে চান। যখন তিনি বুঝতে পারেন আমি আন্দোলনকারী, তখন জিজ্ঞেস করেন, ‘পুলিশ কি তোমাকে গুলি করেছে?’ আমি বলি, হ্যাঁ, পুলিশ সরাসরি গুলি করেছে।”
ইমরানের দাবি, শেখ হাসিনা চলে যাওয়ার সময় হাসপাতালের হেল্পডেস্কের কাছে গিয়ে বলেন, “নো ট্রিটমেন্ট, নো রিলিজ”— যা তিনি নিজ কানে শুনেছেন। যদিও তখন তিনি এর অর্থ বুঝতে পারেননি।
পরবর্তী অভিজ্ঞতা সম্পর্কে ইমরান বলেন, “আমি লক্ষ্য করি, যথাসময়ে আমার অস্ত্রোপচার হচ্ছে না, ওষুধ বাইরে থেকে কিনে আনতে পারছি না। বাবা আমাকে বাড়িতে নিতে চাইলেও হাসপাতাল ছাড়তে দেওয়া হয়নি। তখন বুঝি, ‘নো ট্রিটমেন্ট, নো রিলিজ’ নির্দেশের অর্থ কী ছিল।”
তিনি আরও দাবি করেন, “আমার পা কেটে দিয়ে কারাগারে পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল।”
এই ঘটনার জন্য তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দায়ী করেন।
সূত্র: প্রথম আলো
ইএইচ