চোখের পানি নির্ণয় করবে শরীরের রোগ

সাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রকাশিত: আগস্ট ১১, ২০২২, ০৫:৫৭ পিএম

চোখের পানিকে সাধারণত দুঃখের প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। মাঝেমধ্যে অতি আনন্দতেও চোখের পানি বের হয়।এমন অনেক সময় আছে যে পেঁয়াজ কাটতেও চোখের পানি পড়ে। বলা হয়ে থাকে চোখের পানি কোনোভাবেই মানুষের কল্যাণ হতে পারে না। তাই কারণ ছাড়া চোখের পানি ফেলতে নেই ।

তবে বিষ্ময়কর ঘঠনা হলো এবার চোখের পানিকেই কাজে লাগিয়েছেন বিজ্ঞানিরা।  

দুঃখে বা অতি আনন্দে মানুষের চোখ দিয়ে পানি পড়ে। আবার অনেক সময় পেঁয়াজ কাটতে গেলেও চোখ দিয়ে পানি বের হয়। কিন্তু বলে হয়ে থাকে, চোখের পানি নাকি কোনো দিক থেকেই ভালো হতে পারে না। তাই অকারণে চোখের পানি ফেলতে নেই।

তবে এবার চোখের পানিকেই কাজে লাগিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। কয়েক ফোঁটা পানির সাহায্যে মানব শরীরের রোগ শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন তারা।

চিনের ওয়েনঝউ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন গবেষক এ অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের মায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ার ফেই লিউ বলেছেন, ‘রোগ শনাক্তকরণের জন্য চোখের পানি কতটা কার্যকর হতে পারে, আমরা তা পরীক্ষা করতে চেয়েছিলাম।’

গবেষণায় এমনই আশাব্যঞ্জক ফল পাওয়া গেছে যে একজন মানুষের পুরো শরীর পরীক্ষা করার জন্য কেবল কয়েক ফোঁটা চোখের পানি হলেই চলে। ফেই লিউ বললেন, এমন একটি দিন আসবে যখন মানুষ নিজেই নিজের চোখের পানি পরীক্ষা করে শরীরের রোগগুলো সম্পর্কে জানতে পারবে।

লালা এবং প্রস্রাবের মতোই চোখের পানিতে সেলুলার মেসেজে পরিপূর্ণ কিছু ক্ষুদ্র থলি থাকে। যদি বিজ্ঞানীরা এই মাইক্রোস্কোপিক মেলব্যাগগুলোকে আটকাতে পারেন, তাহলে তারা শরীরের ভেতরে কী ঘটছে, সে বিষয়ে জানতে পারবেন। কিন্তু এক্সোসোম নামে পরিচিত এই থলিগুলো যথেষ্ট পরিমাণে সংগ্রহ করা কঠিন। শরীরের অন্যান্য অংশের তরলের থেকে অনেকটাই আলাদা চোখের পানি। এর ভেতরে থাকা ক্ষুদ্র থলিগুলো সংগ্রহ করতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়।

সেখানেই একটি কৌশল অবলম্বন করেন ফেই লিউ এবং তার গবেষণা দলটি। তারা চোখের পানির ক্ষুদ্র ভলিউম থেকে থলিগুলো ক্যাপচার করার জন্য একটি নতুন উপায় বের করেছেন।

প্রথমে গবেষকরা এই গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে চোখের পানি সংগ্রহ করেছিলেন। তারপর তারা দুটি ন্যানোপোরাস মেমব্রেনসহ একটি ডিভাইসে অশ্রুযুক্ত একটি দ্রবণ যোগ করেন, যা ঝিল্লি কম্পিত করে এবং দ্রবণটি চুষে নেয়। কয়েক মিনিটের মধ্যে কৌশলটি ছোট অণুগুলোকে পালাতে সাহায্য করে এবং বিশ্লেষণের জন্য থলিগুলোকে পেছনে ফেলে দেয়।

গবেষকরা করেন, বিভিন্ন ধরনের শুষ্ক-চোখের রোগ মানুষের চোখের পানি তাদের নিজস্ব আণবিক আঙুলের ছাপ ফেলে। তার থেকেও বড় কথা হলো, একজন রোগীর ডায়াবেটিস কীভাবে অগ্রসর হচ্ছে, তা নিরীক্ষণ করতে চিকিৎসকদের সাহায্য করতে পারে চোখের পানি।

আমারসংবাদ/আরইউ