অল্প বয়সে সন্তান প্রেমে জড়িয়েছে, আপনার দায়িত্ব কি?

সাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০২২, ০৭:২৩ পিএম

গত এক সপ্তাহ পূর্বে  ভারতের জামশেদপুর শহরের ঝাড়খন্ডে ১৫ বছরের এক নাবালিকা সম্পর্ক জড়ায় ৩৫ বছরের এক পুরুষের সাথে।এমনকি পালিয়ে বিয়ে করার সিদ্ধান্তও নিয়েছিল তারা। কিন্তু পালানোর সময় বাবা-মা দেখে ফেলায় কাল হয় তাদের । বাধাঁ দিলে প্রেমিক এবং সেই নাবালিকা কন্যা হাতুড়ি ও প্রেসার কুকার দিয়ে নৃশংসভাবে খুন করে মা-বাবকে।এমনকি এই প্রেমে বাধা দেওয়ায় আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটেছে ।চলতি বছরের মে মাসে  ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে ১৫ বছর বয়সী সাদিয়া সুলতানা নুপুর নামে দশম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী প্রেমে বাধা দেওয়ায় আত্মহত্যা করে।

যদি আপনার সন্তানের ক্ষেত্রে এমন হয় তাহলে কিভাবে পরিস্থিতি সামল দিবেন? অনেক সময় দেখা যায় যখন সন্তান এমন অল্প বয়সে সম্পর্কে জড়িয়ে পরে তখন মা-বাবা পরিবেশ অনুকূলে না নিয়ে বরং নানাভাবে হুমকি ও ভয় দেখায়। তাতে বিরুপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। এমন পরিস্থিতিতে জানা জরুরি  আপনার সন্তানের সাথে কেমন আচরণ করবেন?                                                                    
হরমোন পরিবর্তনের সময় কী ধরনের আচরণ করা উচিত?

কিশোর অবস্থাতে বিভিন্ন রকম পরিবর্তন দেখা যায়। হরমোনাল চেঞ্জ যাকে বলা হয়। এ পরিস্থিতিতে কোনো ছেলে মেয়েদের প্রতি এবং মেয়ে ছেলেদের প্রতি আকর্ষিত হওয়া সাধারণ বিষয়। এসময়ে মা-বাবার জন্য জরুরি যে, সন্তানদের বোঝা এবং তাদের সঙ্গে ভালোভাবে মিশে এই পরিস্থিতির সমাধান করা। তাদের এটা বোঝানো যে সবসময় তারা যে পদক্ষেপ নিচ্ছে তা ঠিক নয়। যদি ঠিক হয় তাহলে নির্দিষ্ট সময় রয়েছে। এজন্য কিছু বিষয় অনুসরণ করতে হবে। জেনে নিন সেগুলো।

সন্তানরা বয়ঃসন্ধিতে বহু জিনিস লুকায়

সন্তানরা যখন বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছাবে, এই পরিস্থিতিতে আপনার কাছে সন্তানরা বেশকিছু জিনিস লুকাতে পারে। অনেকবার এমন ঘটনা ঘটে যে মা-বাবা সন্তানদের রিলেশনশিপের বিষয়ে জানতে পারার পর বেশকিছু বিষয় মাথায় আসে। এ ধরনের ঘটনা কীভাবে হয়ে পড়ল, তার এভাবে এ ঘটনা ঘটানোর সাহস কীভাবে হলো, মানুষ কী বলবে? তোমরা আমার পরিবারের নাম খারাপ করে দিয়েছ, মা বাবার মস্তিষ্কে এই ধরনের প্রশ্ন রোধের সৃষ্টি করার চেষ্টা করে এবং এর জন্য শক্তি প্রদর্শন করে এবং সন্তানরা অনেক সময় ভুল পদক্ষেপ নিয়ে বসে।

 

কীভাবে ডিল করবেন?

ছেলে মেয়ের রিলেশনশিপ সংক্রান্ত এসব ঘটনায় মা-বাবাকে অনেক বেশি প্রয়োজন পড়ে। কারণ তাদের রাগ, আচরণের কারণে দূরত্ব তৈরি করে ফেলে। সন্তানদের রিলেশনশিপের বিষয়ে জানার পর আপনি কীভাবে পরিস্থিতি বুঝবেন এবং সন্তানদের সঙ্গে কথা বলবেন তা জেনে নিই।

 

সন্তানদের রিলেশনশিপে মঞ্জুরি দিন

যখন মা বাবা সন্তানদের রিলেশনশিপের বিষয়ে জানতে পারবেন, তখন সে সন্তানদের গ্রান্ট করুন এটা খুব কঠিন কাজ। কিন্তু সরাসরি যদি আপনি আপত্তি জানান তাহলে তারা আপনাদের প্রতি উল্টো মনোভাব প্রকাশ করবে। যদি আপনি সন্তানের রিলেশনশিপ নিয়ে খুব অস্থির থাকেন তাহলে অন্য কারও সঙ্গে কথা বলুন। মনোবিদের সঙ্গেও কথা বলতে পারেন। সবার আগে আপনি মস্তিষ্ককে শান্ত করুন এবং বিষয়টি নিয়ে শান্তভাবে চিন্তাভাবনা করুন। এ বিষয়ে সোজা বাচ্চাদের ওপর রাগ হলে আপনার পার্টনারের সঙ্গে কথা বলুন।

 

বন্ধুর মতো মিশতে হবে

এসময়ে সন্তানদের মস্তিষ্ক এবং মনের বেশকিছু বদল ঘটে বলে শারীরিক এবং মানসিক পরিবর্তন দেখা যায়। সেটা বোঝা খুব জরুরি। ইমোশনকে বুঝতে হবে। এই স্টেজে সন্তানদের অনেক সময় ইমোশনাল হয়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকে। যখন সন্তানরা নিজেদের বাবা-মায়ের থেকে আলাদা হয়ে নিজের স্বাধীনতার উপভোগ করতে চায় তখন তারা অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে। এসময় বন্ধুর মতো মিশে এ বিষয়টিকে ট্রিট করতে হবে। আপনাকে এটাই বুঝতে হবে আপনার সন্তানদের এখনও পর্যন্ত আপনার প্রয়োজন রয়েছে।

 

লাভ রিলেশনশিপ নিয়ে সন্তানদের সঙ্গে কথা বলুন

যদি আপনি সন্তানদের রিলেশনশিপের বিষয়ে জানতে পারেন তাহলে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে হবে। ব্যালেন্সের জন্য জরুরি হলে আপনি আপনার সন্তানদের মেয়ে এবং ছেলেদের বন্ধুত্বের বিষয়ে খুলে কথা বলুন। আপনি সন্তানকে কাউন্সিলরের কাছে নিয়ে যান এবং তাদের বন্ধুদের বিষয়ে জানান। তাদের ঘরে আমন্ত্রণ করুন এবং তাদের সঙ্গে টাইম স্পেন্ড করুন।

 

আমারসংবাদ/আরইউ