Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪,

রাণীনগর ও আত্রাইয়ে

১৫ হাজার মানুষের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো

নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁ প্রতিনিধি

জানুয়ারি ২৩, ২০২৩, ০২:৫২ পিএম


১৫ হাজার মানুষের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো

নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই দুই উপজেলার সীমানায় ঘোষগ্রাম-আন্ধারকোটা পারঘাটে ছোট যমুনা নদীর উপর দিয়ে পারাপারের জন্য বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা এলাকার মানুষের। প্রতিদিন পারঘাটে বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রায় দেড় থেকে দুই হাজার মানুষের চলাচল করতে হচ্ছে। ফলে ঘোষগ্রাম-আন্ধারকোটা পারঘাটে একটি ব্রিজের অভাবে চড়ম দুর্ভোগে পড়েছেন দু’পারের কয়েকটি গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ।

জানা যায়, রাণীনগর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত ঘোষগ্রাম-আন্ধারকোটা পারঘাট। সেখানে রয়েছে ছোট যমুনা নদী। নদীর এপারে রাণীনগরের অংশে ঘোষগ্রাম আর ওপারে আত্রাইয়ের অংশে আন্ধারকোটা। সেখানে নেই কোন ব্রিজ। ওই পারঘাটে গেলেই দেখা মিলবে বাঁশ ও বাঁশের চারাটের দ্বারা স্থানীয়দের নির্মাণ করা বাঁশের সাঁকো। ওই সাঁকো দিয়ে মোটরসাইকেল, ভ্যানগাড়ি ও সাইকেলসহ দু’পারের হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন চলাচল করছে। বর্তমানে ওই পারঘাটে পারাপারের জন্য এলাকার মানুষের একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁরিয়েছে বাঁশের সাঁকো।

স্থানীয়রা জানান, পারঘাটে এপারের ঘোষগ্রাম মোল্লাপাড়া, সরদারপাড়া, নান্দাইবাড়ি, মালনঞ্চি এবং ওপারের আন্ধারকোটা, আটগ্রাম, ছোট কালিকাপুর, ক্ষিদ্র কালিকাপুরসহ ৮ গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ চলাচল করেন। বর্তমানে বাঁশের সাঁকো দিয়ে এলাকার কৃষক, শ্রমিক, শিক্ষার্থীসহ নানা পেশার দেড় থেকে দুই হাজার মানুষ চলাচল করছেন। আর বর্ষা মৌসুমে ঘোষগ্রাম-আন্ধারকোটা পারঘাটে নদীতে ভরপুর পানি হওয়ায় নৌকা দিয়ে চলাচল করতে হয়। একটু বৃষ্টি হলেই নদীর দুইপাড়ে কাঁদা-পানিতে একাকার হওয়ার কারণে পানিতে পড়ে আহত হওয়ার ঘটনাও একাধিকবার ঘটেছে। ফলে ওই স্থানে একটি ব্রিজের অভাবে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এলাকাবাসী।

ঘোষগ্রামের আহাদ আলী, ফজলে রাব্বীসহ কয়েকজন জানান, স্বাধীনতার ৫১ বছরেও আমাদের এই এলাকায় এখনো আধুনিকতার ছোঁয়াই লাগেনি। ডিজিটাল সময়ে এসেও আজ আমাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই পারঘাটে বাঁশের সাঁকো দিয়ে এপার থেকে ওপার পারাপার হতে হচ্ছে। বর্তমানে পারঘাটে পারাপারের জন্য বাঁশের সাঁকোই আমাদের একমাত্র ভরসা। তারা বলছেন, যখন এলাকায় নির্বাচন আসে তখন নেতারা নানান প্রতিশ্রæতি দেন, আর নির্বাচন চলে গেলেই খোঁজ নেওয়ার আর কেউ থাকে না। ফলে তাদের দেওয়া আশ্বাস আমাদের মাঝে থেকেই যায়। আর আমাদের এই দুর্ভোগ কবে শেষ হবে একমাত্র সৃষ্টিকর্তায় ভালো জানেন।

আন্ধারকোটা গ্রামের কৃষক শাহাদাত, শামীমসহ অনেকেই জানান, গ্রামের মাঠে আমাদের জায়গা-জমি আছে। প্রতি মৌসুমে জমিতে উৎপাদনকৃত ফসল আমরা ঘরে তুলি। কিন্তু পারঘাটে ব্রিজ না থাকায় কোন ব্যবসায়ী ফসল কিনতে গ্রামে আসতে চায়না। তারা আরও জানান, ঘাট পার হলেই ঘোষগ্রাম পাকা সড়ক। সেখান থেকে ১ কিলোমিটার দুরে বেতগাড়ি বাজারে গাড়িযোগে যেতে লাগে ৫ টাকা। আর আমাদের আন্ধারকোটা গ্রাম থেকে পারঘাটে বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়ে ১ মন ধান ভ্যাগযোগে করে বেতগাড়ি বাজারে নিয়ে যেতে লাগে ২০ থেকে ২৫ টাকা। আবার সব সময় গাড়িও মিলে না। তখন নিজেরাই কষ্ট করে ফসল কাঁধে করে পার করতে হয়। ফলে পারঘাটে একটি ব্রিজের অভাবে আমরা এলাকার লোকজন চড়ম দুর্ভোগে রয়েছি। দ্রæত পারঘাটে একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

এ ব্যাপারে নওগাঁ এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী তোফায়েল আহম্মেদ বলেন, ঘোষগ্রাম-আন্ধারকোটা পারঘাটে ছোট যমুনা নদীর উপর একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য সকল প্রকারের কাগজপত্রাদি উপর মহলে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন ও বরাদ্দ পেলেই সেখানে একটি ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে।

আরএস

Link copied!