নোয়াখালী প্রতিনিধি
ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৪, ০৫:৫৮ পিএম
নোয়াখালী প্রতিনিধি
ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৪, ০৫:৫৮ পিএম
আত্মগোপনে গিয়ে অপহরণের নাটক সাজিয়ে প্রতারণার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে নোয়াখালী জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেপ্তারকৃত কথিত ভিকটিমের নাম শেরআলী (৩২)। সে জেলার কবিরহাট উপজেলার নলুয়া গ্রামের সামছুদ্দিনের ছেলে।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে নোয়াখালী গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে, গতকাল রোববার রাত ৯টার দিকে কক্সবাজার পৌর বাস টার্মিনালের মারছা বাস কাউন্টারের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জানা যায়, নিজে আত্মগোপনে থেকে অপহরণের নাটক সাজিয়ে শের আলী, তার চাচাকে দিয়ে অপহরণ মামলা দায়ের করান।
পুলিশ জানায়, জেলার হাতিয়া বাজার এলাকার জনৈক মোবারকের (৩২) সঙ্গে চট্টগ্রাম হালিশহরে একই সঙ্গে সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালানোর সুবাদে শের আলীর সাথে ওস্তাদ-শিষ্য সম্পর্ক গড়ে উঠে। ২০২২ সালের ২২ জুলাই ওস্তাদ মোবারক মোটরসাইকেল ক্রয় করতে শিষ্য শের আলীকে নিয়ে চট্টগ্রাম কাপ্তাই রাস্তার মাথাধীন মৌলভী বাজার মোটরসাইকেল শো-রুমে যায়। মোবারক লুঙ্গি পরে যায় এবং কথিত ভিকটিম শেরআলী প্যান্ট পরে যাওয়ায় সুবাধে মোবারকের মোটরসাইকেল কেনার এক লাখ ২০ হাজার টাকা ও একটি এন্ড্রয়েট মোবাইল সেট শের আলীর কাছে রাখতে দেয়। সে টাকা নিয়ে কৌশলে সটকে পড়ে কথিত ভিকটিম।
পুলিশ আরও জানায়, মোবারক মোটরসাইকেল শো-রুমে ঢুকে মোটরসাইকেল দরদাম করে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করার জন্য ছবি ও ভোটার আইডি কার্ড প্রিন্ট করার জন্য অন্য দোকানে গেলে এ সুযোগে শেরআলী মোবারকের টাকা ও মোবাইল সেট নিয়ে পালিয়ে নিজ এলাকায় চলে আসে। ২০২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর মোবারক ও তার বন্ধু ইউসুফ নলুয়া জনতা বাজারে এসে উক্ত বিষয়ে স্থানীয় লোকজনকে জানালে সেখানে সালিশ বৈঠক হয়। সালিশে বিষয়টি অমীমাংসিত থাকায় স্থানীয় লোকজন বিষয়টি সমাধানের জন্য হাতিয়ার হরণী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আক্তার হোসেনের শরণাপন্ন হয়। একই দিন মোবারক ও শেরআলী হরণী ইউনিয়নের বয়ারচর বাজারে যায়। সেখানে মোবারক শেরআলীকে দোতলা বিল্ডিংঘরে রেখে চেয়ারম্যানকে আনার গেলে ভিকটিম কৌশলে পালিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী জানান, পরবর্তীতে তার চাচা দেলোয়ার হোসেন বিটু শেরআলী ও তার ছেলে মারুফ অপহরণ হয়েছে দাবি করে তার সঙ্গে জায়গা-জমি নিয়ে পূর্ব বিরোধ থাকা শামছুল হক মাঝিসহ ওই এলাকার আরো ৯ জন সহ মোবারক ও তার বন্ধু ইউসুফের বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ১২ জুলাই আদালতে অপহরণ মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে কবিরহাট থানায় উক্ত বিষয়ে নিয়মিত মামলা রুজু হয়। মামলাটি রুজু হওয়ার পর কবিরহাট থানা পুলিশ তদন্ত করে। পরবর্তীতে মামলার তদন্ত ভার ডিবি নোয়াখালীতে ন্যস্ত হয়।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, কথিত ভিকটিম শের আলী পেশায় একজন ড্রাইভার। সে খুবই চুতর ও ধূর্ত প্রকৃতির। সে ঘনঘন মোবাইল সিম পরিবর্তন করায় তাহার সঠিক অবস্থান নির্ণয় করা কঠিন হয়ে পড়ে। তার মোবাইল নাম্বারের কললিস্ট পর্যালোচনায় দেখা যায় সে ক্সবাজার, বান্দরবন, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা, গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জসহ একেক সময় একেক স্থানে অবস্থান করে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। কথিত ভিকটিম শের আলীকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিজ্ঞ আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে।
এআরএস