ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

আমার আমিকে চিনেছি আমি?

রাজু আহমেদ

রাজু আহমেদ

এপ্রিল ২৬, ২০২৪, ১০:২৫ এএম

আমার আমিকে চিনেছি আমি?

আমি কেমন মানুষ? আমি যে ভালো মানুষ না-সেটা আসলে আমি জানি না! যারা আমাকে আমার কাছে চেনায়, যারা আমাকে ঘিরে রাখে কিংবা যারা আমাকে ব্যবহার করে ফায়দা হাসিল করে তাদের কাছে আমি ভগবান! আমার আরাধনায় তারা গুণকীর্তন করে! যারা আমাকে সত্যিকারে চেনে, যারা আমার ন্যাচার জানে তাদের গালাগাল আমার পর্যন্ত পৌঁছায় না! যে স্তাবকরা আমাকে আবৃত ও আচ্ছন্ন কররে রাখে ওরা সেগুলোকে রসগোল্লা ভেবে টুপ করে লুফে নেয়! প্রশংসা শুনতে শুনতে আমি ভাবি, আমি যা করি তাই সঠিক! বিলকুল ভুলের ঊর্ধ্বে আসন করেছি!

যখন আমার কথায় শ্রোতা বিগলিত হয়, যখন আমার পদক্ষেপে শ্রোতা মারহাবা মারহাবা বলে কিংবা আমার নিক্ষেপিত কফ-থুতুতেও একদল মেশক-অম্বর খোঁজে তখন আমার চূড়ান্তভাবে নষ্ট হওয়াটা সহজ হয়! আমি তখন আর মানুষ থাকি না! আজাজিল শয়তানে পরিণত হই! যখন আমার অন্যায়ের প্রতিবাদ করার কেউ থাকে না, যখন আমার লোভ দমন করার ক্ষমতা কেউ রাখে না, যখন আমার অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে কেউ জাগে না তখন সজাগ অবস্থাতেই আমি মানুষরূপী জানোয়ারে বদলে যাই! আমাকে কেন্দ্র করে যাদের রুটি-রুজির ব্যবস্থা হয় তারা আমার প্রত্যেক কদমে কদমে হুক্কাহুয়া করতে থাকে! মুখে আলপনা আর মনে কুত্তার ছানা সমানুপাতিক রাখে!

দুর্নীতিতে বড় বড় রুইকাতলা চিতপটাং হয়ে যায়-শুনি! কিন্তু রুইটাকে হাঙর হতে সাহায্য করেছে যে ছোট্ট ছোট্ট রুইগুলো সেগুলোর আর কোন খোঁজ থাকে না- যখন বড় রুইটি বড়শিতে আটকায়! অথচ ওই চ্যালাগুলোই লোভাতুর বানিয়েছিল, ছোট ছোট অন্যায়ের সময়ে প্রতিবাদ না করে বড় অন্যায়ের দিকে ঠেলে দিয়েছিল! মাথা পাঁচ পাই নিলে লেজও দুই পাই নিয়েছিল! অথচ আজ বিপদের কালে কেউ কাছে নাই!

ভাবখানায় যেন চেনেও না এমন হাবভাব! চিরতরে বখে যাওয়ার কালে, বিপথে পা বাড়ানোর হালে সমর্থন করে যারা প্রশংসাসূচক স্তুতি গেয়েছিল তারা বিপদের সময়ে পগারপার হয়েছে! বড়পাপে বড়টারে ধরেছে! ছোটপাপ তো ছোটদের জন্যেও আছে!

স্বার্থবাদের দেয়াল ভেঙে বিপরীত মতে আয়নার সামনে দাঁড়াতে হবে! অন্তত আত্মমর্যাদার স্বার্থে নিজেকে নিজের চিনতে হবে। পরমত সহিষ্ণুতার অভাব হলে সেটা গোয়ার্তুমির চূড়ান্তে পোঁছ। বিরুদ্ধমত মোকাবেলার সাহস না থাকলে তাকে কাপুরুষ বলে। যারা আমার কাছে স্বার্থ খোঁজে তারা আমার ত্রুটি দেখিয়ে কখনোই শোধরাতে সাহায্য করবে না। যার সাথে আমার স্বার্থের সম্পর্ক নাই কিংবা প্রয়োজন মুহূর্তের মাধ্যমেই শুধু সাক্ষাৎ সে মুখের ওপর সত্য বলতে পারে। যদি কেউ সমালোচনা করে তবে এতান্তে সেগুলো নিয়ে ভাবতে হবে। মানুষের আসল সৌন্দর্য তো তার স্বভাবে। ব্যক্তির কথা ও আচরণে মনুষ্যত্ব এবং লালিত মূল্যবোধ লুকিয়ে থাকে। যারা আমার নিন্দা করে, ত্রুটি ধরিয়ে দেয়- তারাইতো আমার মানুষ হয়ে ওঠার যাত্রায় শত-জনমের আপনজন।

যারা আমার বদগুণেও শুভের ছায়া দেখে তারা আমার বিকাশের পথে বিপজ্জনক! বড় হওয়ার রাস্তায় কাঁটা! কেউ যদি আমার সব সিদ্ধান্তে জি হুজুর জাঁহাপনা একমত, সহমত; বলে তবে তারাই আমার চূড়ান্ত ধ্বংস ও ধ্বসের জন্য যথেষ্ট এবং কারণ হিসেবে অনিবার্য! মানুষ হিসেবে আমার অপূর্ণতার অন্ত নাই, ত্রুটির সীমা-পরিসীমা নাই অথচ যারা সেগুলোতেও আলোর ছায়া দেখে ভূয়সী প্রশংসা করে ওরা প্রতারক, মহাভন্ড। চাটুকারিতা করার জন্য যাদের অখণ্ড অবসর, যারা  প্রয়োজন পূরণ করতে প্রিয়জন সাজে তারা আমার আমিকে আমার কাছে ধরা দিতে দেয় না। সাম্রাজ্যে স্বার্থ যতদিন মজুদ থাকে ততদিন প্রশংসার অন্ত নাই কিন্তু কাজ ফুরোলেই ব্যাটা বজ্জাত-পাজি বলে গাল পাড়ে! কারো অনুপস্থিতিতে সত্য-মিথ্যা মিশ্রিত করে নিন্দা করা আমাদের অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে! দালালির প্রকোপ বেড়েছে বলে সত্যও আজকাল বাহবা পায় না!

ভন্ড-মুখোশধারীরা সভ্যতার সবটুকু আলো উপড়ে ফেলতে জোট বেঁধেছে! অন্ধকারে কি আমার আমিকে চিনতে পারব? একাকিত্বের একমনে!

 

বিআরইউ

Link copied!