সন্দ্বীপে ঘরে ঘরে ভাইরাল কনজাংটিভাইটিস সমস্যা

সন্দ্বীপ (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২২, ২০২২, ০৭:৫৬ পিএম
সন্দ্বীপে ঘরে ঘরে ভাইরাল কনজাংটিভাইটিস সমস্যা

বেশ কিছুদিন যাবৎ সন্দ্বীপ উপজেলার ঘরে ঘরে চোখের সমস্যা দেখা দিয়েছে আশংকাজনক হারে। অনেকের চোখ মুখ ফুলে যাচ্ছে। বাদ যাচ্ছে না শিশু ছাত্র যুবক, বৃদ্ধ কেউ।  এতে করে দেখা দিয়েছে জনজীবনে দুর্ভোগ ভোগান্তি।

অনেকে বাড়িতে বিশ্রাম নিচ্ছেন, আবার শ্রমজীবী মেহনতি মানুষগুলো কাজের সন্ধানে যাচ্ছেন ঘরের বাইরে। অনেক অফিস পাড়ায় দেখা যাচ্ছে কর্মকর্তা কর্মচারী সংকট। যাদের চোখের সমস্যা তারা অফিসে অনুপস্থিত থাকছেন। এতে করে ভোগান্তি আরো বাড়ছে। সরেজমিন কথা বলে জানা গেছে, চোখের সমস্যার কারণে তারা তাদের নিত্য কাজ কর্ম করতে পারছেন না।

জানা গেছে, চোখ উঠাকে কনজাংটিভাইটিস বা রেড/পিংক আই বলে। অর্থাৎ কনজাংটিভা নামক চোখের পর্দায় প্রদাহ হলে তাকে চোখ উঠা রোগ বলা হয়। চোখ উঠার মূল কারণ ভাইরাসজনিত এবং এটি অতিমাত্রায় ছোঁয়াচে। আক্রান্ত কারও চোখে তাকালেই কারোর চোখ উঠে। কারও কারও চোখ ওঠা হয়তো তিনদিনে ভালো হয়ে যায়। আবার অনেকের তিন সপ্তাহও লাগতে পারে। সেটা নির্ভর করে কাকে কোন ধরনের ভাইরাস আক্রান্ত করেছে এবং সেই রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কেমন তার ওপর।

বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ‍‍`র এনাম নাহার শাখার প্রোগ্রাম অর্গানাইজার সাবিনা ইয়াসমিন বলেন আজ তিন দিন যাবৎ আমি আমার মেয়ে ও স্বামী চোখের সমস্যায় ভুগছি। গতকাল থেকে অফিস যেতে পারছি না। এনাম নাহার মোড়ের এক সিএনজি চালক বলেন ভাই ঘরে খাবার নেই তাই সমস্যা থাকার পরও পেটের তাগিদে বেড় হয়েছি।

এদিকে চোখ উঠা সমস্যার অনেক রোগীর ঔষধও মিলছে না। বিষয়টি এমন পর্যায়ে গড়িয়েছে সন্দ্বীপ উপজেলায় দেখা দিয়েছে ড্রপ সমস্যা। গতকাল শিবের হাটের বড় কয়েকটি দোকানে ছিল না কোন ড্রপ। সারিকাইত বাংলা বাজার রহিম ফার্মেসিতে গিয়ে দেখা যায় প্রতি ১ মিনিটে একটি চোখের সমস্যা নিয়ে রোগী আসছে নেই কোন ড্রপ।

সন্দ্বীপের অন্যতম ঔষধ পাইকারি খুচরা দামের মার্কেট এনাম নাহার হাই স্কুলের মোড়ে বেশ কিছু ঔষধের দোকানে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যাই কোন দোকানে এ রোগের ঔষধ ও ড্রপ মিলছে না। জিহানা ফার্মেসির মালিক নাজমুল আলম বলেন, প্রতি মিনিটে একটি রোগী আসছে সব ড্রাপ শেষ কোথা থেকে দিবো। সৌদিয়া মোডিকোর সত্ত্বাধিকারী ডা. মাঈনউদ্দিন কামরুল বলেন পরিস্থিতি ভয়াবহ। যে হারে চোখের সমস্যার রোগী আসছে ঔষধ দিতে পারছি না সব ঔষধ শেষ। তাহেরা ফার্মেসির মালিক আবদুল গাফফার বলেন চোখের সমস্যার রোগীর লাইন শেষ হচ্ছে না; কাল পরশু ঔষধ আসতে পারে।

ঔষধ কেন নেই জানতে চাইলে স্কয়ার ফার্মার সন্দ্বীপ অঞ্চলের এরিয়া ম্যানেজার মোঃ জাবেদ বলেন আমি নিজেও আক্রান্ত। চোখের ড্রপ শুধু সন্দ্বীপ নই পুরো চট্টগ্রামে সংকট চলছে। আশা করি কাল পরশু আসতে পারে। আমরা কোম্পানিকে জানিয়েছি। চট্টগ্রামে এ রোগ ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়ছে।

চিকিৎসকের বরাত দিয়ে জানা যায় একটি ভাইরাস সংক্রামিত হচ্ছে। এতে করে আক্রান্তজনিত ব্যক্তির সংস্পর্শে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। বিষয়টি সম্পর্কে সন্দ্বীপ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ  কর্মকর্তা ডা. ফজলুল করিম বলেন ভাইরাল কনজাংটিভাইটিস ইনকুনসানজনিত রোগ।  এটি সবাই যার যার অবস্থান থেকে সচেতন থাকতে হবে। কোন অবহেলা করা যাবে না। ঘরে থেকে বের হলে কালো সানগ্লাস পড়ে বের হতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

এসএম