ফরিদপুরে বিএনপির সমাবেশে হামলা-ভাংচুর, সমাবেশ পন্ড

ফরিদপুর প্রতিনিধি প্রকাশিত: নভেম্বর ৩০, ২০২২, ০৮:২৯ পিএম
ফরিদপুরে বিএনপির সমাবেশে হামলা-ভাংচুর, সমাবেশ পন্ড

ফরিদপুরে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ককটেল নিক্ষেপ আর মঞ্চ ভাংচুর করায় সমাবেশ পন্ড হয়ে যায়। বিএনপির অভিযোগ আওয়ামী লীগ,যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এ হামলা ও ভাংচুর চালিয়েছে। আওয়ামী লীগের ভাষ্য, হামলা ভাংচুরের সাথে আওয়ামী লীগ,যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কোনো নেতাকর্মী জড়িত নয়।

বুধবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে ফরিদপুর প্রেসক্লাব চত্তরে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশের মিথ্যা মামলা, গায়েবি মামলা, পুলিশী নির্যাতন ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ফরিদপুর মহানগর শাখা। এতে সভাপতিত্ব করেন ফরিদপুর মহানগর বিএনপির আহবায়ক এ এফ এম কাইউম জঙ্গী। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেওয়ার কথা ছিল যথাক্রমে বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান ও বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদের।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সমাবেশ উপলক্ষে ফরিদপুর প্রেসক্লাব চত্তরে একটি মঞ্চ করা হয়। বিকেল পৌনে চারটার দিকে সমাবেশের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ তখনও ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছেননি। ওই সময় মঞ্চে অন্যান্যদের মধ্যে বসা ছিলেন জেলা বিএনপির আহবায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী ও সদস্য সচিব এ কে এম কিবরিয়া স্বপন।

বিকেল চারটার দিকে হেলমেট ও মুখে মাক্স পড়া অনুমানিক ৩০ থেকে ৩৫ জন তরুণ-যুবক লাঠি ও ইট পাটকেল নিয়ে সভাস্থলে হামলা করে। হামলাকারীরা ব্যানার ছিনেয়ে নেয়, চেয়ার ভাংচুর করে। এ সময় হামলাকারীরা তিনটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। এসময় পুলিশ সিজান নামে ছাত্রদলের এক কর্মীকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে। এ সময় আটককে কেন্দ্র করে পুলিশের সাথে বিএনপির নেতাদের ধ্বস্তাধস্তি হয়। পরে বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান ও বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ঘটনাস্থলে আসেন।

এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে শামা ওবায়েদ জানান, পুলিশের গুলিতে বিএনপির ১১ জন নেতা-কর্মী নিহত হয়েছেন। তার প্রতিবাদে গত চারদিন আগে আমরা এ বিক্ষোভ কর্মসূচি দিয়েছি। যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের সমাবেশে হামলা ভাংচুর চালায়। তিনি আরও বলেন, পুলিশের তত্তাবধানে ছাত্রলীগ-যুবলীগ এ হামলা করেছে। আমরা দেখেছি তারা বিভিন্ন জায়গায় ককটেল রেখে গায়েবী মামলা দিচ্ছে। সেই ধারাবাহিকতায় আজ তারা ফরিদপুরে প্রেসক্লাবে ককটেল ফাটিয়ে আমাদের লোকদের ধরপাকড় করেছে।  

এ ব্যাপারে ফরিদপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ কে এম কিবরিয়া স্বপন বলেন, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীদের হামলায় অন্তত ৮ থেকে ১০ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। পুলিশ রিতু, কামাল, রাজীব ও সিজানসহ বেশ কয়েকজন তরুণ কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

এ ব্যাপারে ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ তামজিদুল রশিদ চৌধুরী রিয়ান বলেন, হামলা-ভাংচুরের সাথে ছাত্রলীগের কোন সম্পর্ক নেই। ছাত্র লীগের কোন নেতাকর্মী এর সাথে জড়িত নয়।

এ বিষয়ে ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল বলেন, ফরিদপুর বিএনপি দুইভাগে বিভক্ত। এক গ্রুপ শামা ওবায়েদ ও আরেক গ্রুপ নায়াব ইউসুফের। তাদের নিজেদের মধ্যে বিরোধ থেকে সভাস্থলে হামলা ও ভাংচুর হয়েছে।

তিনি বলেন, হামলা ঠেকাতে গিয়ে পুলিশের ৫ সদস্য আহত হয়েছে। এ সময় পুলিশ ১১টি সর্টগানের গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ বিষয়ে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মোঃ ইসতিয়াক আরিফ বলেন, এর সাথে আওয়ামী লীগ,যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কোন সংশ্লিষ্ট নেই এবং কেউ জড়িত না। বিএনপির নিজেদের অভ্যন্তরীন কোন্দলের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। তারা নিজেরা নিজেরা ঝামেলা করে অন্যদের উপর দোষ চাপাচ্ছে।

কেএস