ঝুঁকিপূর্ণ সেতুই একমাত্র ভরসা, নাগরপুরে চরম ভোগান্তি

নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০২৫, ০৪:০৯ পিএম
ঝুঁকিপূর্ণ সেতুই একমাত্র ভরসা, নাগরপুরে চরম ভোগান্তি

টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার ভাদ্রা ইউনিয়নের কাওনহোলা এলাকায় একটি পাকা সেতুর অভাবে দীর্ঘদিন ধরে চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। 

সরকারি কোনো স্থায়ী সেতু না থাকায় ২০১৯ সালে এলাকাবাসী নিজেদের অর্থায়ন ও স্বেচ্ছাশ্রমে ২৬০ ফুট দীর্ঘ একটি বাঁশ ও কাঠের অস্থায়ী সেতু নির্মাণ করেন। বর্তমানে ওই ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর ওপরই নির্ভর করে ২৪টি গ্রামের হাজারো মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করছেন।

সেতুটি মেঘনা বনগ্রাম বাজার থেকে কাওনহোলা হয়ে ধুবড়িয়া ইউনিয়নের সেহরাইল সড়কের সঙ্গে সংযুক্ত। এটি স্থানীয় কৃষিকাজ, শিক্ষা, চিকিৎসা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহৃত একমাত্র সংযোগ সেতু। তবে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে নির্মিত হওয়ায় এটি টেকসই নয় এবং বর্ষা মৌসুমে চলাচল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুটি আপাতত ব্যবহারের উপযোগী থাকলেও কাঠামো অনেকটাই নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

স্থানীয় কাওনহোলা জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা আব্দুল কাদের বলেন, “এই সেতু দিয়েই মুসল্লি, শিক্ষার্থী, রোগী—সবাই যাতায়াত করে। বর্ষায় রাস্তায় হাঁটাও যায় না। এমনকি মৃতদেহ দাফনেও কষ্ট হয়। আমরা চাই, এখানে একটি পাকা সেতু নির্মাণ হোক।”

একজন দোকানদার জানান, “প্রতিদিন মালামাল আনতে-নিতে এই সেতু ও রাস্তা ব্যবহার করি। বর্ষায় অবস্থা এতটাই খারাপ হয় যে, ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। সেতুটি যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে।”

স্থানীয়দের দাবি, “দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর যেন আর কোনো বিলম্ব না হয়। দ্রুত একটি পাকা সেতু ও সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে ২৪টি গ্রামের মানুষের ভোগান্তির স্থায়ী সমাধান করা হোক।”

ভাদ্রা ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য লুৎফর রহমান বাবুল বলেন, “এলাকাবাসীর নিজস্ব উদ্যোগে নির্মিত বাঁশ-কাঠের সেতুই এখন একমাত্র ভরসা। তবে পাকা সেতু না থাকায় এবং সংযোগ সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে মানুষ চরম দুর্ভোগে রয়েছে। আমরা একাধিকবার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।”

এ বিষয়ে উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. তোরাপ আলী আমার সংবাদকে বলেন, “ধুবড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ অফিস থেকে বনগ্রাম বাজার হয়ে সেহরাইল পর্যন্ত প্রায় ২,৩০০ মিটার রাস্তা এবং কাওনহোলা খালের ওপর ৪০ মিটার দীর্ঘ একটি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করে আমরা ২৩ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ে পাঠিয়েছি। এটি ‘অনূর্ধ্ব ১০০ মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণ প্রকল্প’-এর আওতায় অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু করা হবে।”

ইএইচ