রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার চারটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে প্রায় সাত মাস ধরে জনবল ও ওষুধের সংকট চলছে। এর ফলে প্রতিমাসে হাজারো মানুষ, বিশেষ করে নারী ও শিশুরা প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গর্ভবতী মায়েদের জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা, স্বাস্থ্য পরামর্শ এবং জ্বর, সর্দি, ডায়রিয়া জাতীয় সাধারণ রোগে আক্রান্ত রোগীরা প্রথম চিকিৎসার জন্য আসে। কিন্তু দীর্ঘ সাত মাস ধরে ওষুধের সরবরাহ বন্ধ থাকায় এখানে কার্যত চিকিৎসাসেবা বন্ধের মতো অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি চিকিৎসক ও কর্মী সংকটও সেবা কার্যক্রমকে প্রভাবিত করছে।
এলাকার মানুষের দাবি, দ্রুত চিকিৎসক সংকট ও ওষুধ সরবরাহসহ অন্যান্য সমস্যাগুলো সমাধান করে সঠিক ও সময়োপযোগী চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হোক।
এ বিষয়ে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘‘জনবল ও ওষুধ সংকটের বিষয়টি আমরা বহুবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তবে বাজেট ও প্রশাসনিক জটিলতার কারণে এখনও স্থায়ী সমাধান সম্ভব হয়নি। আমরা চেষ্টা করছি যাতে গর্ভবতী মায়েদের জরুরি সেবা বন্ধ না হয়। স্থানীয় সহযোগিতায় সীমিত পরিসরে কিছু সেবা চালু রয়েছে।’’
অন্যদিকে, দুটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রের ‘উপ-সহকারী পরিবার কল্যাণ পরিদর্শক (পুরুষ)’ পদ শূন্য থাকায় সঠিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন অসুস্থ রোগীরা।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে সেবা নিতে আসা স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আগে এখান থেকে ওষুধ ও পরামর্শ পেতেন, কিন্তু এখন ডাক্তার ও ওষুধের অভাবে বাধ্য হয়ে বাইরে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। অনেকের পক্ষে বাইরের ডাক্তার দেখানো সম্ভব না বলেও তারা উল্লেখ করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা লাভলী বেগম বলেন, ‘‘আগে এখানে ওষুধ ও পরামর্শ পাওয়া যেত, এখন না ডাক্তার আছে, না ওষুধ। বাধ্য হয়ে বাজার থেকে দাম দিয়ে চিকিৎসা নিতে হয়, যা সবার পক্ষে সম্ভব নয়।’’
এলাকাবাসী বারবার অভিযোগ করেও পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় হতাশ। তারা দ্রুত পদক্ষেপ না হলে ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির আশঙ্কা করছেন।
রংপুর জেলা পরিবার পরিকল্পনা উপপরিচালক সাইফুল ইসলাম জানান, ‘‘সারাদেশে উপ-সহকারী পরিবার কল্যাণ পরিদর্শকসহ বিভিন্ন পদে জনবল সংকট রয়েছে। ওষুধের সংকটও আছে। তবে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে এই সংকট নিরসন করা হবে।’’
ইএইচ