‘ইসরায়েল’-এর প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এবং বেশ কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে একটি ফৌজদারি তদন্ত শুরু করেছে স্পেনের জাতীয় আদালত।
অভিযোগ, গত মাসে গাজাগামী একটি মানবিক ত্রাণ জাহাজে ‘ইসরায়েলি’ বাহিনীর হামলা।
সংবাদ সংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, গত ২ জুলাই তদন্ত শুরু হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্প্যানিশ সংসদ সদস্য জাউমে অ্যাসেনস।
তিনি এক্স হ্যান্ডেলে জানান, এই তদন্ত মূলত ১ জুন ‘ম্যাডলিন’ নামের জাহাজে ‘ইসরায়েলি’ অভিযানের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে।
জাহাজটি আন্তর্জাতিক জলসীমায় ছিল এবং এতে ১২ জন আন্তর্জাতিক কর্মী ও মানবিক ত্রাণ ছিল। ‘ইসরায়েলি’ বাহিনী জাহাজটি আটক করে। আটক হওয়াদের মধ্যে ছিলেন সুইডিশ পরিবেশ আন্দোলনের নেত্রী গ্রেটা থানবার্গ এবং ফরাসি-ফিলিস্তিনি মানবাধিকার আইনজীবী রিমা হাসান।
স্প্যানিশ নাগরিক সার্জিও টোরিবিও ও আরব কজ-এর প্রতি সংহতি কমিটি নামের একটি সংগঠন এই মামলাটি করেছে। তারা স্পেনের সর্বজনীন বিচারব্যবস্থার নীতির আওতায় এটি দায়ের করেছে, যার ফলে বিশ্বের যেকোনো স্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ স্পেনে বিচারযোগ্য হয়।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী ড্রোন ও টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করেছে এবং বেসামরিক নাগরিকদের অবৈধভাবে আটক করেছে, যা গাজায় চলমান সংঘাতের অংশ হিসেবে বড় ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের এক উদাহরণ।
স্পেনের আদালত রায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) সঙ্গে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে এবং এই ঘটনাকে গাজায় গণহত্যার প্রেক্ষাপটের সঙ্গে যুক্ত করে দেখানো হয়েছে।
এই প্রথমবারের মতো স্পেন সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে গাজা যুদ্ধ নিয়ে ‘ইসরায়েলি’ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে।
স্প্যানিশ এমপি জাউমে অ্যাসেনস বলেন, ‘এটি দায়মুক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের এক বড় পদক্ষেপ। যখন কোনো রাষ্ট্র তাদের দায়িত্ব পালন করে না, তখন নাগরিক সমাজেরই দায়িত্ব হয় ন্যায়বিচারকে একটি নৈতিক, আইনি ও রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা।’
এই তদন্ত চালু থাকলে ভবিষ্যতে নেতানিয়াহু ও অন্য ‘ইসরায়েলি’ কর্মকর্তাদের ইউরোপ সফর বাধাগ্রস্ত হতে পারে, এমনকি গ্রেপ্তারি পরোয়ানার সম্ভাবনাও তৈরি হতে পারে।
তবে এখনো পর্যন্ত দখলদার ‘ইসরায়েল’ সরকার এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
ইএইচ