Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে পল্লবী রণক্ষেত্র

মো. মাসুম বিল্লাহ

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২২, ০১:৩৩ এএম


আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে পল্লবী রণক্ষেত্র

আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষে ঢাকার পল্লবীতে পুরো একটি এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়; যান চলাচল ও দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। রাজধানীর পল্লবীতে কাছাকাছি দূরত্বে আওয়ামী ও বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার পর পল্লবী ৬ নম্বর মুসলিম বাজার এলাকায় ওই সংঘর্ষ শুরু হলে পুলিশ দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে বলে পল্লবী থানার ওসি পারভেজ ইসলাম জানান। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশকে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়তে দেখা যায়।

তবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে পল্লবী ৬ নম্বর বাজারের পশ্চিমপাশে মুকুল ফৌজ মাঠে সমাবেশ ডেকেছিল বিএনপি। অন্যদিকে সদ্য প্রয়াত নেতা সাজেদা চৌধুরীর স্মরণে পল্লবী ১২ নম্বর সেকশনের ডি ব্লকের ঈদগাহ মাঠে শোকসভার আয়োজন করেছিল আওয়ামী লীগ।

ওসি পারভেজ বলেন, দুই দলের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে যেতে থাকলে উত্তেজনা শুরু হয়। ৬ নম্বর মুসলিম বাজারের কাছ দিয়ে দুই পক্ষের মিছিল যাওয়ার  সময় বিএনপির মিছিল থেকে আওয়ামী লীগের মিছিলে ঢিল নিক্ষেপ করে কেউ। এতে উত্তেজনা বাড়ে এবং দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ সক্রিয় হলে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এসময় যান চলাচল বিঘ্নিত হয় ও দোকানপাটও বন্ধ হয়ে যায়।

পল্লবী থানার পরিদর্শক (অপারেশন্স) উদয় কুমার মণ্ডল সাংবাদিকদের জানান, আওয়ামী লীগের সভাটি বেলা আড়াইটার দিকে শুরু হয়ে বিকাল ৪টার দিকে শেষ হয়। অন্যদিকে পুলিশের সাথে সংঘর্ষের পর বিএনপির সমাবেশ আর হয়নি।

এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক বলেন, আমরা পুলিশের অনুমতি নিয়ে সেখানে সমাবেশ করতে নেতাকর্মীদের আসতে বলেছি। নেতাকর্মীরা যখন মিছিল নিয়ে আসছিল, তখনই আওয়ামী লীগ, যুব লীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়, পুলিশ টিয়ার গ্যাস মেরেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদের আমাদের এই কর্মসূচি চলছে রাজধানীর বিভিন্ন থানায়। সেখানে এই হামলার ঘটনা প্রমাণ করে, তারা ফ্যাসিস্ট কায়দায় আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকারকে রুখে দিতে চায়।

ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানুল্লাহ আমান অভিযোগ করে বলেছেন, পুলিশের সহযোগিতায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এই জোনের ডিসির সাথে আমি কথা বলছি। তিনি দুপুরে অনুমতি দিয়েছেন। যখন আমাদের নেতাকর্মীরা সমাবেশে আসছে, তখনই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। বিএনপি প্রতিরোধ গড়ে তোলে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যখন পিছু হটে ঠিক সেই সময় পুলিশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পক্ষ নেয়।

আমানুল্লাহ আমান বলেন, পুলিশ বিএনপির নেতাকর্মীরা যেদিক থেকে আসছে সেদিকেই টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে। এতে বহু আমাদের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আমার ডিসিকে আগেই বলেছি, আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করব। আমরা যে কর্মসূচি শুরু করেছি। এটি চলবে। আজকেও বিভিন্ন জায়গায় কর্মসূচি চলছে। যেকোনো প্রতিরোধ আমরা প্রতিহত করব।

অন্যদিকে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগের থানা কমিটির পূর্ব নির্ধারিত একটি সমাবেশ ছিল। কিন্তু একই জায়গায় বিএনপিও সমাবেশ করার ঘোষণা দেয়।

পরে বিএনপি জায়গা পরিবর্তন করলেও দূরত্ব কাছাকাছি ছিল। কাছাকাছি উভয় দলের কর্মসূচি থাকায় সব ধরনের ঝামেলা এড়ানোর ‘নির্দেশনা’ ছিল মন্তব্য করে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, কিছু অতি উৎসাহী মানুষ এসব ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ে।

পল্লবী থানার ওসি পারভেজ বলেন, পরিস্থিতি অল্প সময়ে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আসি আমরা। বিএনপির কোনো সমাবেশ আর ওই স্থানে হয়নি।  

Link copied!