ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

ই-টিকিটিংয়ের ফাঁদে যাত্রীরা

মো. মাসুম বিল্লাহ

অক্টোবর ২, ২০২২, ০১:৫০ এএম

ই-টিকিটিংয়ের ফাঁদে যাত্রীরা

অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ঠেকাতে রাজধানীর চারটি গণপরিবহনে পরীক্ষামূলক ই-টিকিটিং শুরু হয়েছে। তবে এ পদ্ধতিতে নতুন প্রতারণা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের। তারা বলছেন, ই-টিকিটিং বাসে টিকিট ছাড়াও যাত্রী তোলা হচ্ছে। কোনো কোনো স্টপেজে আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া।

অন্যদিকে টিকিট বিক্রেতাদের দাবি, ই-টিকিটিং আগের চাইতে প্রতি স্টপেজে ভাড়া দুই থেকে চার টাকা পর্যন্ত কমে গেছে।

গতকাল শনিবার মিরপুরের বিভিন্ন বাসস্টপেজ ঘুরে এসব তথ্য জানা যায়।

মিরপুর-১০ নম্বর বাসস্ট্যান্ড থেকে তিন সহপাঠী পরিস্থান পরিবহনে শেওড়া যেতে ২২ টাকা করে ই-টিকিট নিয়েছেন হূদয়। মিরপুর কলেজের এ শিক্ষার্থীরা সেখানে এক বন্ধুর বাড়িতে যাচ্ছেন। হূদয় বলেন, ই-টিকিটিং পদ্ধতি চালু হওয়ায় ভালো হয়েছে। তবে বাসের মধ্যে টিকিট ছাড়া যাত্রী উঠানো হচ্ছে। ড্রাইভার-হেলপাররা বাড়তি আয়ের উদ্দেশ্যে নিয়ম ভঙ্গ করছেন।

পরিস্থান পরিবহনে মিরপুরের ইনচার্জ মো. আসাদ বলেন, ই-টিকিটের ভাড়া সরকার থেকে নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করার সুযোগ নেই। তবে পরীক্ষামূলক হওয়ায় কয়েকটি স্টপেজের ভাড়া এখনো নির্ধারণ না হওয়ায় কিছুটা অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে দুই-একজন যাত্রীর সাথে বািবতণ্ডা হচ্ছে। তাদের বুঝিয়ে বললে তারা মানছেন। আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে এসব স্থানের ভাড়া আলাদা করা হবে।

তিনি বলেন, প্রজাপতি ও পরিস্থান পরিবহনে শতাধিক বাস রয়েছে। এটি মোহাম্মদপুর বসিলা থেকে আব্দুল্লাহপুর হয়ে কামারপাড়া পর্যন্ত চলাচল করে থাকে। মোট ৬৩টি বাসস্টান্ডে টিকিট দেয়া হচ্ছে। আগের চেয়ে স্টপেজ বাড়ানো হয়েছে। ই-টিকিটিং পদ্ধতি চালু হওয়ায় যাত্রীদের জন্য ভালো হলেও বাস স্টাফদের বাড়তি আয় কমে গেছে। অনেক চালক ডিউটি করতে চাচ্ছেন না। সে কারণে শনিবার রাস্তায় পরিস্থান পরিবহনের বাস সংকট দেখা গেছে।

মাহমুদা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। মিরপুর সেনপাড়ায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করেন। মিরপুর-১০ নম্বর থেকে খিলগাঁও যেতে তার কাছে ৩৫ টাকা ভাড়া রাখা হয়েছে। অথচ উত্তরা পর্যন্ত ৩৫ টাকা ভাড়া হলেও বাড়তি ভাড়া আদায় করা হয়েছে। নতুন পদ্ধতিতে নতুন চুরি বেড়েছে বলে অভিযোগ তার।

এ বাসস্টান্ডে ই-টিকিট বিক্রেতা জুয়েল জানান, ছাত্র ও কোনো কোনো যাত্রী টিকিট না নিয়ে জোর করে বাসের মধ্যে উঠে যাচ্ছেন। বাধা দিলে বাস হেলপারকে হুমকি দিচ্ছেন। কারও কথা তারা মানছেন না। অনেক স্থানে চেকপোস্ট রয়েছে। কেউ টিকিট ছাড়া উঠলে সেই বাসের হেলপারকে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হচ্ছে। শুক্রবার ৮-১০ জন হেলপারের কাছে জরিমানা আদায় করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

মিরপুর-১ নম্বরে রাজধানী পরিবহনের ই-টিকিট দেন মো. হিরা। নির্ধারিত ইউনির্ফম শরীরে থাকার কথা থাকলেও সাধারণ পোশাকে তাকে টিকিট বিক্রি করতে দেখা গেছে। তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ই-টিকিটিং হওয়ায় বাস ভাড়া কমেছে। তবে কিছু স্থানে ভাড়া বেশি দিতে হচ্ছে। অ্যাপে যে ভাড়া সরকারিভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে তাই আদায় করা হচ্ছে। ভাড়ার পরিমাণ টিকিটে উল্লেখ থাকে। গন্তব্য অনুযায়ী সেই ভাড়া যাত্রীদের পরিশোধ করতে হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, অ্যাপে টিকিট পদ্ধতি চালু হওয়ায় বাস ভাড়া আগের চাইতে কিছুটা কমেছে। বাড়তি ভাড়া আদায় করার কোনো সুযোগ থাকছে না। ওয়েবিল ও চেকার বন্ধ হলেও প্রতিটি এলাকার জন্য একজন ম্যানেজার রয়েছে। তারা চেকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকার একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে টেকনিশিয়ান হিসেবে কাজ করেন মাহমুদা আক্তার। বাসা মিরপুর এক নম্বরে। প্রতিদিন বাসে করে যাতায়াত করেন।

বললেন, সকালে দিশারি পরিবহনের বাসে ধানমন্ডি আসেন। ভাড়া দিতে হয়েছে ২৫ টাকা। রাতে ফেরার সময় আসাদগেট থেকে প্রজাপতি পরিবহনের বাসে যেতে ২০ টাকা দিতে হতো। তবে দুদিন ধরে প্রজাপতি বাসে ই-টিকিটিং ব্যবস্থা চালুর ফলে রাতে ফেরার সময় একদিন ১৩ টাকা, আরেক দিন ১৫ টাকা ভাড়া দিয়েছেন। রাজধানীর পরিবহনে মিরপুর আনসার ক্যাম্প থেকে উত্তর বাড্ডা পর্যন্ত ৩০ টাকা নেয়া হলেও ই-টিকিটিংয়ের মাধ্যমে ৪৩ টাকা আদায় করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রফিকুল ইসলাম আজাদ নামে এক যাত্রী।

তিনি বলেন, আনসার ক্যাম্প থেকে উত্তর বাড্ডার ভাড়া ছিল ৩০ টাকা। টিকিট সিস্টেম চালু হয়েছে কয়েকদিন। একলাফে ভাড়া বেড়েছে ১৩ টাকা। জ্বালানির তেলের মূল্যবৃদ্ধির পর ভাড়া সমন্বয় করা হলে সেটি ৩০ টাকা হয়। এখন আবার কিসের বৃদ্ধি? সিটিং সার্ভিসের কথা বলা হলেও দাঁড়িয়ে লোক নেয়া হচ্ছে। সব লাইনের বাসেই একই দশা। কিলোমিটার হিসাব করলে ভাড়া হবে অনেক কম। এগুলো কি দেখার কেউ নেই? এই পরিবহন সন্ত্রাস, ভাড়া নৈরাজ্য কতদিন চলবে বলে প্রশ্ন তোলেন তিনি।

ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে চারটি পরিবহনে ই-টিকিটিং শুরু হয়েছে। প্রথম এ পদ্ধতি চালু করেছে মিরপুর-১২ নম্বর থেকে ঢাকেশ্বরীগামী মিরপুর সুপার লিংক, ঘাটারচর থেকে উত্তরাগামী প্রজাপতি ও পরিস্থান, গাবতলী থেকে গাজীপুরগামী বসুমতি পরিবহনের বাস। ২৮ সেপ্টেম্বর আরও তিনটি অছিম পরিবহন, রাজধানী পরিবহন ও নূরে মক্কা পরিবহনে এ ব্যবস্থা চালু হবে। সহজ ডটকম ও যাত্রী নামে দুটি কোম্পানি এ কাজে সহায়তা করছে।

তিনি বলেন, পরিবহন খাতকে নিয়মনীতির আওতায় আনার জন্য বিশাল কাজ হাতে নিয়েছি। বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবে নতুন পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। এতে যেসব সমস্যা তৈরি হবে ধীরে ধীরে তা সমাধান করা হবে। বাড়তি ভাড়া, টিকিট ছাড়া যাত্রী বাসে নেয়া যাবে না। সে কারণে রোববার বাস মালিকদের সাথে বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে এসব বিষয়ে আলোচনা করা হবে।

ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি জানায়, রাজধানীতে অতিরিক্ত বাসভাড়া আদায় নিয়ে বিভিন্ন সময় যে অভিযোগ উঠেছে, তা নিরসনে ই-টিকিটিংয়ের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় ঠেকাতে পরিবহন মালিকদের সাথে আলোচনা করে পরীক্ষামূলকভাবে চারটি পরিবহন কোম্পানিতে ই-টিকিটিং চালু হয়েছে। ২২ সেপ্টেম্বর এটি চালু হয়। স্টপেজে গিয়ে যাত্রী কোথায় যাবেন, তা বলার সাথে সাথে টিকিট বের করে তা হাতে তুলে দিচ্ছেন বিশেষ পোশাক গায়ে দেয়া কর্মীরা।

Link copied!