ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

১১ ব্যাংকে এলসি খুলতে জটিলতা

মহিউদ্দিন রাব্বানি

জানুয়ারি ২৮, ২০২৫, ১২:০৬ এএম

১১ ব্যাংকে এলসি খুলতে জটিলতা
  • এলসি নিচ্ছে না বিদেশি অনেক ব্যাংকও
  • ব্যাংকগুলো বিলাসী নিত্যপণ্যে এলসিতে আগ্রহী
  • কমিশন কম থাকায় নিত্যপণ্যে আগ্রহ কম

ভুল নীতির কারণে দেশের মানুষ ও অর্থনীতি বিপদে পড়েছে— ড. জাহিদ হোসেন, সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ, বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়

গত মাসে প্রবাসী আয়ে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে। শুধু তাই নয়, প্রবাসীরা ২০২৪ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলে বৈধভাবে দুই হাজার ৬৮৯ কোটি ডলার (২৬ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন) সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা পাঠিয়েছেন। যা দেশের ইতিহাসে একক বছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। এরপরও দেশের ব্যাংকগুলোয় ডলারের সংকট তীব্র হয়ে উঠেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বাড়তি দামে রেমিট্যান্সের ডলার কিনছে বেশির ভাগ ব্যাংক। এ পরিস্থিতিতে ব্যাংকের পাশাপাশি খুচরা বাজারে ডলারের বিনিময় হার ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠেছে। এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতি ডলার ১২৫-১২৯ টাকায়ও কেনাবেচা হচ্ছে। 

শিল্পোদ্যোক্তারা বলছেন, কাঁচামাল আমদানিতে পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রা পাওয়া যাচ্ছে না। এলসি (ঋণপত্র) খুলতে বেশ কয়েকটি ব্যাংকে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। দুর্বল ১১ ব্যাংক ছাড়াও বিদেশি কয়েকটি ব্যাংকেও এলসি জটিলতা বিদ্যমান।   

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি সূত্র জানায়, এলসি খুলতে নানা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন ১১টি বেসরকারি ব্যাংকের গ্রাহকরা। ব্যাংকগুলো হচ্ছে— ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি, ন্যাশনাল ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক। এর আগে গভর্নর হিসেবে ড. আহসান এইচ মনসুর দায়িত্ব নেয়ার পর দেশের ১১টি বেসরকারি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডলার-সংকট উত্তোরণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নানা উদ্যোগ নিলেও রিজার্ভ দিন দিন কমছেই। ব্যক্তিপর্যায়ে ডলার কিনতে সমস্যা হচ্ছে এবং কৃত্রিমভাবে ডলারের দাম নির্ধারণে বাজারে বেশি দামে পাওয়া যাচ্ছে। অনেকেই ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে অর্থ নিয়ে আসছেন। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্যোগে কিছু সংস্কার প্রয়োজন এবং রপ্তানি ও রেমিট্যান্স বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিতে হবে।

জানা যায়, গত জুলাই মাসে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে মোট ডলার ছিল ছয় হাজার ৮৮ মিলিয়ন, আগস্টে পাঁচ হাজার ২৬৫ মিলিয়ন, সেপ্টেম্বরে চার হাজার ৯৮১ মিলিয়ন এবং অক্টোবরে চার হাজার ৬১৫ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত বছরের ডিসেম্বরে ডলারের সরবরাহে বড় ঘাটতি দেখা গেছে, যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। ডিসেম্বর শেষে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে মোট ডলার ছিল চার হাজার ২৫৫ মিলিয়ন, যা নভেম্বরে ছিল চার হাজার ৩৮৩ মিলিয়ন। অর্থাৎ এক মাসে ১২৮ মিলিয়ন ডলার সরবরাহ কমেছে। এর আগে ২০১৯ সালের নভেম্বরে ডলারের সর্বনিম্ন পরিমাণ ছিল চার হাজার ১৯১ মিলিয়ন।

সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে আগে থেকেই এ ব্যাংকগুলোর বেশির ভাগের অবস্থা নাজুক ছিল। শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় নতুন টাকা ছাপিয়ে এসব ব্যাংককে তারল্যের জোগান দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে নতুন গভর্নর দায়িত্ব নেয়ার পর অনৈতিক সে প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়া হয়। এতে সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোর তারল্য পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়ে ওঠে। আমানত তুলে নিতে বাড়তে থাকে গ্রাহকদের ভিড়। বিপরীতে নতুন করে টাকা জমা না হওয়ায় কিছু ব্যাংকের ‘ক্যাশ কাউন্টার’ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এ ব্যাংকগুলো ছাড়াও আগে থেকেই আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংক গ্রাহকদের আমানত ফেরত দিতে ব্যর্থ হচ্ছিল।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা জানায়, বিলাসী পণ্য ও প্রস্তুত পণ্য আমদানির জন্য ডলার দিতে বেশি আগ্রহী। কারণ সেগুলো থেকে বেশি কমিশন পাওয়া যায়। অন্যদিকে কাঁচামাল, নিত্যপণ্য এবং ফলমূলের এলসি খুলতে কম কমিশন আসে, তাই এসব পণ্যের জন্য প্রয়োজনীয় ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। যদি ডলারের রিজার্ভ না বাড়ে, তাহলে উৎপাদনে বড় সমস্যা হতে পারে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে এলসি নিচ্ছে না বিদেশি অনেক ব্যাংক। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের গঠনের পর ঘুরে দাঁড়ানোর নিরলস চেষ্টায় দেশের অর্থনীতি। যে কারণে দেশে আমদানি দায় ও বিদেশি ঋণ পরিশোধের চাপ কমে এসেছে। দুই বছর আগের তুলনায় বেড়েছে ডলার প্রবাহও। এরপরও দেশের ব্যাংকগুলো বৈদেশিক বাণিজ্য নিয়ে স্বস্তিতে নেই। ঋণপত্র (এলসি) খুলতে বিড়ম্বনা রয়েই গেছে। এর কারণ, বিদেশি ব্যাংকগুলো ঋণসীমা কমিয়েছে।  

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভও ওঠানামা করছে, বর্তমানে মোট রিজার্ভ দুই হাজার ৫২২ কোটি ডলার বা ২৫ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব, বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ এক হাজার ৯৯৩ কোটি ডলার। ১৫ জানুয়ারি এই পরিমাণ ছিল দুই হাজার ১৩ কোটি ডলার।

রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি না করে বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দিলে সাময়িকভাবে দর বাড়ত বলে মন্তব্য করেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘ডলারের দরকে বাজারের ওপর ছেড়ে না দিয়ে ধরে রাখা হয়েছিল। এ কারণে দেশের রিজার্ভের ক্ষয় হয়েছে, টাকার রেকর্ড অবমূল্যায়ন ঘটেছে, মূল্যস্ফীতি উসকে উঠেছে। ভুল নীতির কারণে দেশের মানুষ ও অর্থনীতি বিপদে পড়েছে।

Link copied!