Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কে পরিবহন চালকদের গলার কাটা থ্রি-হুইলার

বরিশাল ব্যুরো

বরিশাল ব্যুরো

জুন ২৭, ২০২২, ০৩:০৭ পিএম


বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কে পরিবহন চালকদের গলার কাটা থ্রি-হুইলার

যাত্রা আরও নিরাপদ করতে এক্সপ্রেসওয়ের পর বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কে থ্রি হইলার সহ কম গতির যান চলাচল বন্ধের দাবি জানিয়েছেন পরিবহন চালক-শ্রমিকরা।

ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে বরিশালে আসা পরিবহন চালক মোখলেসুর রহমান বলেন, স্বপ্নের পদ্মাসেতু উদ্বোধনের কারণে ঢাকা-বরিশাল রুটের ফেরিযুগের অবসান ঘটলো। এখন থেকে আর কাউকে ফেরিঘাটের অসহনীয় ভোগান্তি পোহাতে হবে না এবং ফেরিতে বসে এ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে আর কোন মৃত্যুর ঘটনাও ঘটবে না। 

তবে যাত্রা নিরাপদ করতে এখন শুধু প্রয়োজন ভাঙ্গা থেকে বরিশাল পর্যন্ত মহাসড়ক থেকে থ্রি-হুইলার যেমন, অটোরিক্সা, অটোভ্যান, সিএনজি, মাহিন্দ্রা, নছিমন, করিমন, টমটম,ভ্যানগাড়ী এগুলো চলাচল বন্ধ করা। আর এগুলো চলাচল বন্ধ হলে আমরা একটু নিশ্চিন্তে ও নির্বিঘ্নে গাড়ি চালাতে পারবো। 

তিনি বলেন, মহাসড়কে যত দুর্ঘটনা ঘটে তার বেশিরভাগের পেছনেই ট্রাক ও বাসের থেকে স্বল্প গতি এবং থ্রি হুইলারের কারণে ঘটে। আর থ্রি হুইলারের চালকরা তেমন একটা দক্ষও নন। তবে খুব দ্রুত থ্রি হুইলারের সঙ্গে মহাসড়কের পাশে থাকা হাট-বাজার দোকান-পাটগুলো অপসারণ প্রয়োজন। পদ্মাসেতু উদ্বোধনের প্রথম ও দ্বিতীয় দিনেই ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে অনেকটা। আর ভাঙ্গার পর থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত মহাসড়ক জুড়ে থ্রি হুইলার যানবাহন অবাধে চলাচল করছে। 

এরফলে নির্বিঘ্নে গাড়ি চালানো  সম্ভব হয় না। এছাড়া সড়কের পাশে থাকা হাট-বাজার দোকানপাট আরও চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার অনেক জায়গায় দেখা যায় মহাসড়কের পাশ ধরেই গাছ কেটে ফেলে রেখেছেন সমিলের মালিকরা। এক কথায় ভাঙ্গা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত মহাসড়কটি অনেকটা বিপদজনক। 

ঈগল পরিবহরের চালক আলম বলেন, শুধু মহাসড়কের পাশে বাজার আর থ্রি-হুইলারের কারণে বরিশাল শহরের কাশিপুর গরিয়ারপাড়, রহমতপুর উজিরপুরের ইচলাদি, জয়শ্রী, গৌরনদীর বাটাজোর, মাহিলারা, টরকী, বার্থী সহ বেশ কিছু স্থানে বাজার এলাকা পার হতে ভোগান্তির শেষ থাকে না আমাদের। আবার বরিশাল থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত যেতে নথুল্লাবাদ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। 

তিনি আরো বলেন, মহাসড়কে যারা থ্রি হুইলার চালান তাদের যে আচরণটি সব থেকে ভয়ের, সেটি হলো আকস্মিক যানবাহন ঘুরিয়ে ফেলা, সড়কের মাঝে চলে আসা নয়তো সাইড লেন থেকে আকস্মিক মহাসড়কে উঠে আসা। আর এসময় পরিবহন চালকরা আকস্মিক ব্রেক দিলে গতিতে থাকা গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে।

একইভাবে বাজার এলাকায় মানুষজন আপনমনে রাস্তা পার হন, এখনকার বাসগুলোতে শব্দ না থাকায় কেউ যদি রাস্তা পার হতে ডানে-বামে না তাকান তাহলেই বিপদ। আর বাজার এলাকায় যে যার মতো রাস্তা পার হওয়ার কারণে দুর্ঘটনাও ঘটছে প্রায়ই। 

বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের দপ্তর সম্পাদক অমল চন্দ্র দাস বলেন, নছিমন, করিমনসজ মহাসড়কে আতঙ্কের নামই হচ্ছে থ্রি-হুইলারগুলো। এগুলো চলাচল বন্ধ না হলে দুর্ঘটনা বাড়বে। আর এখন তো বরিশাল-ঢাকা রুটে উচ্চ গতি সম্পন্ন বিলাসবহুল গাড়ির সংখ্যা বেড়েছে, এর সংখ্যা আরও বাড়বে। তাই এখন সময় এগুলো মহাসড়ক দিয়ে উঠিয়ে দেওয়ার। তবে পদ্মা সেতু চালুর পর এখনও তেমন কোন কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। এদিকে মহাসড়কে যানবাহন চালনার ক্ষেত্রে দক্ষ চালক নিয়োগের কথা বলছেন যাত্রীরা। 

এ বিষয়ে বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার দে বলেন, পদ্মা সেতু চালুর আগেই দূরপাল্লার রুটের বাস মালিকদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি, যেন এই রুটে দক্ষ ও লাইসেন্সধারী চালক নিয়োগ করা জন্য। কেন না নতুন বাস নিয়ে যেসব চালকরা বরিশালে বা বরিশাল থেকে যাত্রী পরিবহন করবেন তারা সকলে এই রুটেও নতুন। সেতু চালুর পর সচেতনতা আর নির্ধারিত সময়ের বেশি যাতে বাস ড্রাইভিং না করে সেই বিষয়ে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে।

আমারসংবাদ/এআই

Link copied!