Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪,

পেকুয়ায় ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মোকাবেলায় প্রস্তুত

পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

মে ১৩, ২০২৩, ০৮:২৭ পিএম


পেকুয়ায় ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মোকাবেলায় প্রস্তুত

কোলে শিশু,মাথায় জিনিসপত্র আর হাতে রশি ধরে নিয়ে যাচ্ছে গবাদিপশু। ছুটছেন আশ্রয় কেন্দ্রে। পরিবারের লোকজন তাদের জানমাল রক্ষার্থে নিরাপদ স্থানে চলে যাচ্ছে। আবার অনেকে এখনো বাড়িতে অবস্থান করছেন। সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই ব্যস্ততা বেড়ে গেছে। শনিবার সকাল থেকেই ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে বৃষ্টি শুরু হয়েছে কক্সবাজারের পেকুয়ায়। সময় গড়ানোর সাথে সাথে আশ্রয়কেন্দ্রমূখী হচ্ছে মানুষ।

ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবেলায় ইতিমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন। মানুষকে সতর্ক করতে ও নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে সিপিপিসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা মাইকিংসহ নানা মাধ্যমে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। আশ্রয়কেন্দ্রে আগত লোকজনকে শুকনো খাবার ও রান্নাকরা খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়েছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পূর্বিতা চাকমা। মানুষের জানমাল রক্ষা করতে যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ করেছেন।

আশ্রয়কেন্দ্র ও নিরাপদ স্থানে লোকজনকে সরিয়ে নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। গঠন করা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। প্রতিটি ইউনিয়নে মেডিকেল টিমও গঠন করা হয়েছে। ইউএনও পূর্বিতা চাকমা, থানা প্রশাসন ও স্ব স্ব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন। তারা সুবিধা অসুবিধার খোঁজখবর নিচ্ছেন।

শনিবার দুপুরের দিকে পেকুয়া উপজেলার উপকূলীয় অঞ্চল উজানটিয়া, মগনামা ও রাজাখালী ইউনিয়নে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় আশ্রয়কেন্দ্র অল্প সংখ্যক লোকজন আশ্রয় নিয়েছে। বেশিরভাগ মানুষ এলাকা ছেড়ে পার্শ্ববর্তী উপজেলা চকরিয়ার উঁচু অঞ্চলের আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। এখনো যাচ্ছে। যাদের সেখানে স্বজন কিংবা থাকার মতো কেউ নেই তাঁরা নিজ নিজ এলাকায় থেকে গেছেন। তৎমধ্যে অধিকাংশ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিচ্ছে। সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছে গবাদী পশু ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র।

মোখা থেকে বাঁচতে পার্শ্ববর্তী দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া থেকেও লোকজন আশ্রয় নিতে পেকুয়ার দিকে ছুটে আসছেন। ড্যানিশ বোট,ফিশিং বোটে পরিবারের লোকজন তাদের মালামাল ও গবাদপশু নিয়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিচ্ছেন।

অধিকাংশ আশ্রয়কেন্দ্রে বিশুদ্ধ পানির সংকটের শঙ্কা রয়েছে। তবে উপজেলা প্রশাসন ও বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে বিশুদ্ধ পানি জেনারেটরের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

উজানটিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা ও সিপিপির সদস্য রাশেদুল ইসলাম টিপু বলেন, ৮ নং বিপদ সংকেত দেখানোর পর থেকে এলাকাবাসীকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে বেশিরভাগ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। যারা এখনো নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করছে তাঁরাও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও গবাদীপশুগুলো নিরাপদ জায়গায় রেখে এসেছে।

মগনামা ইউপির চেয়ারম্যান ইউনুস চৌধুরী বলেন,তার ইউনিয়নে ১৩টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। তলোকজনকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতে সিপিপির পাশাপাশি গ্রাম পুলিশসহ ১৫০জন লোক কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। মানুষের জানমাল রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পূর্বিতা চাকমা বলেন, মোখা মোকাবেলা উপজেলার ১২১টি আশ্রয়কেন্দ্রের জন্য বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

তীব্র ঝুঁকিপূর্ণ মগনামা-উজানটিয়া-রাজাখালী এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে সিপিপি‍‍`র সদস্যদের সাথে উপজেলার মনিটরিং টিম সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছে। সিপিপি,গ্রাম পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের পাশাপাশি থানা পুলিশও সার্বক্ষণিক কাজ করছে। কয়েকটি বেড়িবাঁধের ভাঙা অংশ রিফাইরিং করা হয়েছে। 

আরএস
 

Link copied!