Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

বগুড়া-১: জরিপ সংস্থার প্রতিবেদন

ঈগল প্রতিকের পক্ষে ৪২ শতাংশ জনমত

নিজস্ব প্রতিবেদক

জানুয়ারি ৪, ২০২৪, ০৫:০৯ পিএম


ঈগল প্রতিকের পক্ষে ৪২ শতাংশ জনমত

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র দুই দিন বাকি। বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত বগুড়া-১ সোনাতলা সারিয়াকান্দি আসনে ঈগল প্রতীকে অংশ নেওয়া মোস্তাফিজুর রহমান শ্যামল ৪২ শতাংশ ভোটে এগিয়ে আছে বলে জরিপে উঠে আসে। বগুড়ার এ আসনটিকে কেইস স্টাডি ধরে প্রায় দশ হাজার মানুষের মতামত গ্রহণ করেছে সরকার অনুমোদিত সোসাইটি অব এনলাইটেড পিপুল নামের একটি জরিপ সংস্থা।

সংস্থাটির জরিপের তথ্য অনুযায়ী এ আসনে প্রায় দশ হাজার মানুষের মতামতের ভিত্তিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান শ্যামলের ঈগল প্রতীক ৪১ শতাংশ মতামত পেয়ে শীর্ষে রয়েছে। ২৮ শতাংশ মতামত পক্ষে পেয়ে দ্বিতীয় বৃহৎ অবস্থানে রয়েছে স্থানীয় সংসদ সদস্য শাহাদারা মান্নানের নৌকা প্রতীক এবং শাহজাদী লিপির তবলা প্রতীক ২২ শতাংশ ভোটারের মতামত পেয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। এর বাইরে স্বতন্ত্র আরেক প্রার্থী বিএনপি থেকে পদত্যাগ করা শোকরানার কেটলি ৮ শতাংশ মানুষের মতামত পেয়ে চতুর্থ স্থানে রয়েছে।

বুধবার বগুড়া শহরের হোটেল লা-ভিলায় অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে সোসাইটি অব এনলাইটেড পিপুলের পরিচালক আহসান উল্লাহ সাংবাদিকদের সামনে এ তথ্য তুলে ধরেন।

জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক পরিষদ- জানিপপের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডক্টর নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, গণতন্ত্রের প্রয়োজনে নির্বাচন দরকার আর নির্বাচনের প্রকৃত চিত্র বুঝতে জরিপ প্রয়োজন। নির্বাচন যাতে অংশগ্রহণমূলক হয় এজন্য সবার প্রচেষ্টা প্রয়োজন। আজকের জরিপ একটা এটাকেইস স্টাডি। এ ধরনের জরিপ অবশ্যই পজেটিভ। মাঠ পর্যায় থেকে সাধারণ ভোটারদের এ ধরনের তথ্য উঠে আসা উচিত। এই জরিপকে আমি স্বাগত জানাই।

সোসাইটি অব এনলাইটেড পিপুল এর পরিচালক আহসান উল্লাহ সাংবাদিকদের সামনে জরিপের তথ্য উপস্থাপন করে বলেন, সোনাতলা—সারিয়াকান্দি এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ২০০ শিক্ষার্থী গত ২৬ ডিসেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ৫ দিন ধরে জরিপ পরিচালনা করে। এসব শিক্ষার্থী প্রায় ১০ হাজার ভোটারের সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রশ্নোত্তর সার্ভের মাধ্যমে তুলে এনেছেন তাদের ব্যক্তিগত মতামত। সেখানে ১৬ থেকে ৪০ বছর বয়সী ভোটারের হার ৫৯ শতাংশ। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যুবকরা ভোট দানের ক্ষেত্রে উপযুক্ত প্রতিনিধি নির্বাচন করতে সক্ষম, একবিংশ শতাব্দিতে যুব সম্প্রদায় শুধু জনপ্রিয়তা বা রাজনীতিতে সক্রিয় এমন প্রার্থীকে নয়, বরং সবদিকে যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীকে ভোট দিয়ে থাকে। জরিপে অংশগ্রহণকারীর মধ্যে ৩৩ শতাংশ মানুষের পেশা কৃষিকাজ, ২৮ শতাংশ চাকুরীজীবী, ২২ শতাংশ ব্যবসা করেন, ১৪ শতাংশ গৃহিণী এবং ৩ শতাংশ মানুষ অন্যান্য পেশায় নিয়োজিত। এ থেকে বোঝা যায়, বগুড়া-১ আসনে ভোটের প্রতি আগ্রহ রয়েছে সর্বস্তরের জনগণের।

জরিপের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, অংশগ্রহণকারীরা ভিন্ন ভিন্ন দলকে সাপোর্ট করলেও ভোটদানের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দিচ্ছেন যোগ্যতার, যা ৬৭ শতাংশ মানুষ। ২৫ শতাংশ ভোটার দলকে সাপোর্ট করছেন এবং ৮ শতাংশ ভোটার বিচক্ষণতা নয় শুধু মার্কা দেখেই ভোট দিচ্ছেন। ৬৫ শতাংশ অংশগ্রহনাকারী নির্বাচন চায় এবং ২৪ শতাংশ লোক ভালো নির্বাচন হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন। অপরদিকে সংখ্যালঘু হলেও ১১ শতাংশ ভোটার বলেছেন নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে না। প্রায় ২৬০ জন নির্বাচন বর্জন করেছেন বা ভোট দান থেকে বিরত থাকবেন বলে জানিয়েছেন। প্রার্থীর রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নিয়ে সোনাতলা-সারিয়াকান্দির ভোটাররা বেশ সচেতন। ৭২ শতাংশ ভোটার চায় স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচিত হোক। যেখানে দলীয় প্রার্থীর প্রতি আগ্রহ মাত্র ২৮ শতাংশ। বিএনপি অধ্যুষিত বগুড়া এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি প্রার্থীরা এমপি হলেও, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ না করলে অন্যান্য প্রতীকের প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা কম নেই।

সোসাইটি অব এনলাইটেড পিপুল এর পরিচালক আহসান উল্লাহ বলেন, বগুড়া বিএনপি অধ্যুষিত এলাকা হওয়ার পরেও জেলার সাতটি আসনে প্রতিটিতেই আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি সমর্থিত জোটের প্রার্থীর বাইরে বেশ কিছু সৎ ও যোগ্য স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনী তৎপরতার কারণে বগুড়ার মানুষ আজ অনেকটাই ভোটমুখী। পাঁচ বছর পর ফিরে আসা এই জাতীয় নির্বাচনে ভোট উৎসব থেকে বঞ্চিত না হওয়ার আকাঙ্ক্ষাও পরিলক্ষিত হয়েছে সাধারণ ভোটারদের মাঝে।

এইচআর

Link copied!