ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

চোখের বিনিময়ে স্বাধীনতার স্বপ্ন কিনলেন সেরাজুল

শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:

শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:

আগস্ট ২২, ২০২৪, ০১:৪৫ পিএম

চোখের বিনিময়ে স্বাধীনতার স্বপ্ন কিনলেন সেরাজুল

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের দরিদ্র মাছ বিক্রেতা জেন্দারের সন্তান সেরাজুল ইসলাম। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে স্নাতকে ভর্তি হয়েছেন সেরাজুল। স্বপ্ন দেখতেন, লেখাপড়া শেষ করে চাকুরি করে বাবা মায়ের পাশে দাঁড়াবেন। কিন্তু সেই স্বপ্নের মাঝখানে চীনের প্রাচীরের মত বাঁধা হয়েছিল "কোটা" নামের চরম বৈষম্য। জগদ্দল পাথরের মত চেপে বসা এই বৈষম্য ভেঙ্গে দিতে সারা দেশে সরব হয়ে ওঠে ছাত্র সমাজ। শুরু হয় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

আর সেই আন্দোলনে বন্ধুদের সাথে ছুটে যান সেরাজুল। কিন্তু কে জানতো পুলিশের নির্মম বুলেটে ঝাঁঝরা হয়ে যাবে শরীর, নিভে যাবে অমূল্য চোখের আলো! সারাদেশের ছাত্র সমাজ সম্মিলিত ভাবে বুকের উপর থেকে সরিয়েছে জগদ্দল পাথর, তরুণদের স্বপ্নের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা "কোটা " নামের প্রাচীরও নেই আর। তবে এই নতুন বাংলাদেশের সূচনা করতে সিরাজুলকে হারাতে হয়েছে অমূল্য চোখ, শরীরে ধারণ করতে হয়েছে ৭০টি বুলেট।

সরেজমিনে উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামে সেরাজুলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় অসংখ্য ক্ষতচিহ্ন শরীরে নিয়ে নিথর হয়ে পড়ে আছেন বিছানায়। চোখ হারিয়ে কালো চশমায় ঢেকে রেখেছেন কোঠর। সন্তানের এমন করুন দশায় যন্ত্রণা লাঘবে অনবরত মাথায় হাত বুলিয়ে চলছেন পাগলপ্রায় মা।

কথা হলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গিয়ে আহত সেরাজুলের বাবা জেন্দার ও মা রোজিনা জানান, সারাদেশের লাখ লাখ ছাত্রদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেয় সেরাজুল। তারা ধারাবাহিক ভাবে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে আসছিলো। সর্বশেষ গত ৪ আগস্ট এনায়েতপুর থানার সামনে কর্মসূচি পালন করতে নিলে পুলিশ অতর্কিত গুলি চালায়। নির্বিচারে চালানো মুহুর্মুহু সেই গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে যায় সেরাজুলের শরীর। রক্তাক্ত শরীরে রাস্তাতেই লুটিয়ে পড়ে সে। পরে তার বন্ধুরা উদ্ধার করে নিয়ে যায় খাঁজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে।

সেখানে পরীক্ষা করে চিকিৎসকরা জানান, মাথা, বুক, উড়ু, চোখসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে ৭০টি বুলেট আছে সেরাজুলের। সবচেয়ে বিপজ্জনক বুলেটটি ঢুকে গেছে চোখের ভিতরে। চিকিৎসকরা সেখানে চিকিৎসা করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পরে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করে বুলেট বের করলেও চোখের আলো নিভে যায় সেরাজুলের। এদিকে এখনো সেরাজুলের শরীরের বিভিন্ন অংশে বুলেট আছে। সেসব বুলেট এখনো যন্ত্রণা দিচ্ছে সেরাজুলকে।

আহত সেরাজুল বলেন, শরীরে অসংখ্য ক্ষতচিহ্ন থাকলেও তার কোন অভিযোগ নেই, অনুযোগ নেই। সান্ত্বনা একটাই, তার চোখের বিনিময়ে দেশে নতুন স্বাধীনতা এসেছে। তার শরীর থেকে ফিনকি দিয়ে বের হওয়া তাজা রক্তে ধুয়ে গেছে বৈষম্য। তিনি সকলের কাছে দোয়া প্রার্থনা করে বলেন, ভবিষ্যতে আর যেন কোন বৈষম্য না থাকে, ছাত্রদের সম্মিলিত ত্যাগের বিনিময়ে উন্মুক্ত হোক মানবিক দুয়ার।

বিআরইউ

Link copied!