কালীগঞ্জ (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি:
জুন ২৮, ২০২৫, ০১:১৮ পিএম
তিস্তা নদীতে বোমা মেশিন বসিয়ে রাতদিন চলছে অবৈধ বালু উত্তোলন। আর সেই বালু দিয়েই আবাদি জমির ওপর নির্মাণ করা হচ্ছে নতুন রাস্তা। অভিযোগ রয়েছে—স্থানীয়দের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বালু দস্যুরা পেশিশক্তির জোরে নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বলা হচ্ছে, এটি নাকি ‘স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা নির্মাণ’!
এই চক্রের ট্রাক চলাচলে নষ্ট হয়ে গেছে সরকারি অর্থে নির্মিত পুরোনো গ্রামীণ রাস্তা ও একটি সেতু। সেই রাস্তা দিয়ে বালু পরিবহন নিষিদ্ধ করায়—এখন জমি দখল করে তৈরি হচ্ছে বিকল্প রাস্তা।
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের মুন্সির বাজার এলাকায় ১০ বছর আগে নির্মিত হয়েছিল একটি গুচ্ছগ্রাম, ছিন্নমূল মানুষের পুনর্বাসনের জন্য। ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে গড়ে ওঠা ওই প্রকল্পে একটি রাস্তা ও প্রায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় একটি সেতু। প্রতি বছর সেটির সংস্কারেও খরচ হয়েছে সরকারি অর্থ।
কিন্তু বর্তমানে বালুবাহী ট্রাকের ভারে রাস্তাটি পরিণত হয়েছে চলাচলের অনুপযোগী পথে। স্থানীয়দের বাধা উপেক্ষা করে বালু দস্যুরা রাস্তার পাশ ঘেঁষে আবাদি জমির ভেতর দিয়ে নতুন রাস্তা বানাচ্ছে—যা সরকারি রাস্তা ও সেতুকে কার্যত অকেজো করে দেবে।
এদিকে তিস্তা নদীর বুক চিরে বোমা মেশিন বসিয়ে একাধিক পয়েন্টে চলছে বালু উত্তোলন। এতে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বদলে যাচ্ছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা—নদীভাঙনে বহু পরিবার জমি হারাবে। মুন্সির বাজার, চরাঞ্চলসহ আশপাশের গ্রামগুলো ইতিমধ্যে ভাঙনের আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।
স্থানীয় যুবক ইব্রাহীম খলিল উল্লাহ রানা বলেন, সরকারি রাস্তা ও সেতু থাকা সত্ত্বেও জমির উপর দিয়ে নতুন রাস্তা করা হচ্ছে। এর ফলে সেতুটি অকেজো হয়ে যাবে, আর পানি নিস্কাশন বন্ধ হয়ে শত শত একর জমি অনাবাদি হয়ে পড়বে। প্রশাসন সব জেনেও নিরব ভূমিকা পালন করছে।
বালু উত্তোলন বন্ধে এলাকাবাসী একাধিকবার উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। সম্প্রতি মানববন্ধনও করেন স্থানীয়রা।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকিয়া সুলতানা বলেন, বালু উত্তোলনের বিষয়ে আমরা জিরো টলারেন্স নীতিতে আছি। খবর পেলেই মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। দীর্ঘদিনের রাস্তা ও সেতু নষ্ট করে আবাদি জমিতে নতুন রাস্তা নির্মাণের কোনো সুযোগ নেই। অভিযোগের ভিত্তিতে দ্রুত তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিআরইউ