জুন ২২, ২০২৫, ০১:৩৪ পিএম
রাতের আধাঁরে ইরানের তিন পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে মার্কিন সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স বলেছেন, ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার ঘটনা সংবিধানের চরম লঙ্ঘন।
রোববার (২২ জুন) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা ও লন্ডনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি পৃথক প্রতিবেদনে জানায়, ইরানের তিন পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর এক বিবৃতিতে বার্নি স্যান্ডার্স বলেন, আমি একমত। আমি আপনাদের একটা কথা বলতে চাই, এই মাত্র যে খবরটা শুনলাম, যেটা আপনারাও শুনলেন, সেটা শুধু উদ্বেগজনকই নয়; বরং চরমভাবে সংবিধানবিরোধী।
স্যান্ডার্স আরও বলেন, আপনারা সবাই জানেন দেশকে যুদ্ধের দিকে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা কেবল মার্কিন কংগ্রেসের আছে। প্রেসিডেন্টের সেই অধিকার নেই।
এদিকে, জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস সামাজিকমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে ইরানে মার্কিন হামলাকে চলমান সংঘাতের তীব্রতার ‘ভয়াবহ বৃদ্ধি’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, সংঘাত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার বড় ধরনের ঝুঁকি’ তৈরি হয়েছে। এর ফলে বেসামরিক নাগরিক, মধ্যপ্রাচ্য ও বিশ্বের জন্য ভয়াবহ বিপর্যয়মূলক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। এই মুহূর্তে ‘শুধুমাত্র কূটনীতির মাধ্যমে’ এই সমস্যার সমাধান করে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব।
এর আগে, শনিবার দিবাগত রাতে ইরানের ফোর্দো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেন, যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরায়েলের সঙ্গে একযোগে ইরানের তিনটি প্রধান পারমাণবিক স্থাপনায় (ফোর্দো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহান) সামরিক হামলা চালিয়েছে।
নিজ মালিকানাধীন ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লেখেন, আমাদের এই সফল অভিযান সম্পন্ন হয়েছে। ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে আমরা সফল হামলা চালিয়েছি।
অন্যদিকে, ইরানের তিন পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার কথা নিশ্চিত করে ইরান জানায়, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহানেও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার আগেই তিনটি পরমাণু কেন্দ্রের পারমাণবিক উপকরণ সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। তাই তিন পারমাণবিক স্থাপনায় কোনো পদার্থ নেই যা তেজস্ক্রিয়তা সৃষ্টি করে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভির উপ-রাজনৈতিক পরিচালক হাসান আবেদিনি বলেন, আগেই আমরা তিনটি পরমাণু কেন্দ্র আগেই খালি করে ফেলেছিলাম। যদি ট্রাম্পের কথা সত্যি হয়ও আমরা বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়িনি। কারণ পারমাণবিক উপকরণ আগেই সরিয়ে ফেলা হয়েছিল।
এদিকে, তিন পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার প্রতিশোধ হিসেবে বাহরাইনে মার্কিন নৌবাহিনীর জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির প্রভাবশালী একজন উপদেষ্টা হোসেইন শরিয়তমাদারি।
জবাবে ইসরায়েল সেনাবাহিনী সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় চলে গেছে। তারা শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত করেছে, জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে এবং অপ্রয়োজনীয় সব ধরনের কাজ বন্ধ ঘোষণা করেছে। এ ছাড়া, ইসরায়েল তাদের আকাশসীমাও বন্ধ ঘোষণা করেছে বলে জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল।
বিআরইউ