বশেমুরবিপ্রবির ৩ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার ও অর্থদণ্ড

বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুন ১৩, ২০২৪, ০৪:০৯ পিএম
বশেমুরবিপ্রবির ৩ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার ও অর্থদণ্ড

ধর্মীয় অবমাননা, বান্ধবীর সঙ্গে আড্ডায় মত্ত হয়ে মারামারি এবং শ্রেণিকক্ষ নিজেদের দাবি করাকে কেন্দ্র করে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় বহিষ্কার করা হয়েছে ছয় শিক্ষার্থীকে। তারা সকলেই গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী। বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের করা হয়েছে অর্থদণ্ড।

বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. দলিলুর রহমান স্বাক্ষরিত পৃথক তিন বিজ্ঞপ্তিতে এই বহিষ্কারাদেশ জারি করা হয়।

বহিস্কারাদেশে বলা হয়, গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা সভা অনুষ্ঠিত হয়। শৃঙ্খলা সভায় আলোচ্য সূচি-১ এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মাসুদ মোল্লাকে ৪ সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়। এবং নগদ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানার সম্পূর্ণ টাকা আহত সঞ্জয় দাশের চিকিৎসার জন্য ব্যয় করা হবে। আহত সঞ্জয় দাশ কৃষি বিভাগ চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। গত ১৪ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিনসেড এলাকায় অভিযুক্ত মাসুদ মোল্লা কর্তৃক মারাত্মকভাবে জখমের শিকার হন। এতে তার ডান চোখের উপরের অংশ ফেঁটে যায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মাসুদ মোল্লাকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানা যায়।

শৃঙ্খলা সভার আলোচ্য সূচি-২ এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত আনায় বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগ ২০ বিএমবি ০১১ পরিচয়ধারী শিক্ষার্থী উৎসব কুমার গাইনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে এবং বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শদাতা ড. শরাফত আলীকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন, আইন বিভাগের প্রভাষক এবং সহকারী প্রক্টর মো. হুমায়ূন কবীর (কমিটির সচিব), আইন সেলের সেকশন অফিসার সাজিদুর রহমান (কমিটির সদস্য সচিব)।

এছাড়া শৃঙ্খলা সভার আলোচ্য সূচি-৪ এর সিদ্ধান্ত মোতাবেক সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ এবং ডিবেটিং সোসাইটির মধ্যে টিনশেডের একটি কক্ষকে উভয় পক্ষ নিজেদের বলে দাবি করায় সেখানে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে যায়। ওই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. কামরুজ্জামানকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। সে ঘটনায় মোট ৪ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয় এবং অর্থ জরিমানা করা হয়।

বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মাহমুদুর রহমান। তাকে ২ সেমিস্টার বহিষ্কার করা হয়েছে এবং দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সাথে ক্ষমা চেয়ে মুচলেকা প্রদান করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।

আইন বিভাগ ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. ইমন হোসেনকে এক হাজার টাকা জরিমানা এবং মুচলেকার আদেশ করা হয়েছে। আইন বিভাগ ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ জাকারিয়াকে এক সেমিস্টার বহিষ্কার করা হয়েছে এবং দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সাথে ক্ষমা চেয়ে মুচলেকার কথা বলা হয়েছে।

অন্য আরেক আইন বিভাগ ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী ইজাজুর রহমানের সার্টিফিকেট দুই বছরের জন্য স্থগিত করা হয়েছে এবং তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. দলিলুর রহমানের সাথে। তিনি বলেন, বিভিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট মোতাবেক শৃঙ্খলা কমিটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বহিষ্কারাদেশে অর্থদণ্ড কেন করা হয়েছে? কিংবা অর্থদণ্ড করা কতটা যুক্তিযুক্ত বলে আপনি মনে করেন? এই প্রশ্নের জবাবে রেজিস্ট্রার বলেন, অর্থদণ্ডের বিষয়টি শৃঙ্খলা কমিটির। তারা যেটা ভালো মনে করেছেন সেটাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

ইএইচ