মার্চ টু যমুনা

জবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচিতে উপাচার্য-কোষাধ্যক্ষ

জবি প্রতিনিধি প্রকাশিত: মে ১৪, ২০২৫, ০৪:০৫ পিএম
জবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচিতে উপাচার্য-কোষাধ্যক্ষ

তিন দফা দাবিতে রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৪ মে) দুপুরে শিক্ষার্থীদের এই কর্মসূচিতে যোগ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শারমিন।

এর আগে পুলিশের টিয়ারগ্যাস, লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেডে আহত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন 'যমুনা'র উদ্দেশে পদযাত্রা শুরু করে এক হাজারের বেশি শিক্ষার্থী। তারা গুলিস্তান, মৎস্য ভবনের পুলিশি ব্যারিকেড অতিক্রম করে কাকরাইল মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ অতর্কিতে হামলা চালায়। শুরু হয় টিয়ারগ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও গরম পানির ব্যবহার। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছত্রভঙ্গ, আতঙ্ক ও আহতের ঘটনা ঘটে।

আহতদের মধ্যে রয়েছেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দিন, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক নাসিরউদ্দিন, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. বিলাল হোসাইন, সহকারী প্রক্টর নাইম সিদ্দিকি, সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন লিমন, ঢাকা ট্রিবিউনের প্রতিনিধি সোহানুর রহমান এবং দৈনিক সংবাদের প্রতিনিধি মেহেদী হাসান।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি অন্তত ৩০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে রয়েছেন ওমর ফারুক, সাকিব, আরিফ আসলাম, ইমন, রেদোয়ান, আসিফ, মুজাহিদ, জিহাদ, রায়হান, আবু বক্কর, নিউটন ইসলাম, রাসেলসহ অনেকে।

বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে আরও কয়েকশ শিক্ষার্থী আন্দোলনস্থলে এসে যোগ দেন। বৃষ্টির মধ্যে শিক্ষার্থীরা কাকরাইল মোড়ে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যান। এসময় ‘দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরব না’ স্লোগানে মুখর ছিল পুরো এলাকা।

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. রইছ উদ্দিন বলেন, “শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা অনভিপ্রেত ও অমানবিক। এই ঘটনার বিচার এবং তিন দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখানেই থাকব।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক বলেন, “পুলিশ আমার সহকারী প্রক্টরের ওপরও হামলা করেছে। আমরা কোনোভাবেই এই ঘটনার ন্যায্যতা মেনে নিতে পারি না। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দৃষ্টান্তমূলক জবাবদিহি চাই।”

এর আগে মঙ্গলবার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের প্রতিনিধিরা ইউজিসিতে গিয়েছিলেন। তবে আশানুরূপ সাড়া না মেলায় শিক্ষার্থীরা ‘লং মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

তাদের তিন দফা দাবি—

  • ২০২৫–২৬ অর্থবছর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি কার্যকর করতে হবে;
  • ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করে অনুমোদন করতে হবে;
  • বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করতে হবে।

রমনা জোনের ডিসি মাসুদ বলেন, ‘যমুনা ভবনের সামনে যাওয়ার সুযোগ নেই।’ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

বিআরইউ