ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যার একটি পরিকল্পনা করেছিল ইসরায়েল। তবে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভেটোয় সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি।
খোদ এক মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এই বিস্ফোরক তথ্য জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা জানান, সম্প্রতি ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছিল তারা খামেনিকে হত্যার একটি “সুনির্দিষ্ট ও সুসংগঠিত পরিকল্পনা” করেছে। তবে পরিকল্পনাটি উপস্থাপনের পর হোয়াইট হাউস থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই পদক্ষেপের ঘোর বিরোধী।
এই তথ্য প্রথম প্রকাশ করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এমন সময়ে এই তথ্য সামনে এলো, যখন ইসরায়েলি হামলায় ইরানের সামরিক বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা নিহত হয়েছেন এবং গত তিন দিন ধরে দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চলছে।
ওই মার্কিন কর্মকর্তার ভাষ্যমতে, ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার মধ্যে খামেনিকে হত্যা করা হলে তা বড় ধরনের যুদ্ধের দিকে গড়াতে পারত। ট্রাম্প প্রশাসন ইরানের পরমাণু কর্মসূচি থামাতে সামরিক অভিযান পরিচালনার পক্ষে থাকলেও সরাসরি নেতার হত্যাকে বিপজ্জনক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করেছিল।
এই বিষয়ে ফক্স নিউজের “স্পেশাল রিপোর্ট উইথ ব্রেট বেয়ার” অনুষ্ঠানে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে প্রশ্ন করা হলে তিনি সরাসরি কোনো উত্তর না দিয়ে বলেন, “আমরা যা প্রয়োজন মনে করি, তা করে থাকি এবং ভবিষ্যতেও করব। আমি বিশ্বাস করি, যুক্তরাষ্ট্রও জানে তাদের কী করা উচিত।”
পরে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র ওমের দোস্ত্রি এ ধরনের পরিকল্পনার খবর “ভুয়া” বলে দাবি করেন।
সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেন, “ইরানের শাসনব্যবস্থা এখন দুর্বল। চলমান সংঘাতে দেশটির সরকারে পরিবর্তন আসতে পারে।”
অন্যদিকে, রোববার ভোরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, “ইরানে ইসরায়েলের হামলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সম্পর্ক নেই।” তবে ইরানের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রই ইসরায়েলকে অস্ত্র ও গোয়েন্দা সহায়তা দেয়, ফলে এই হামলার দায় তারা এড়াতে পারে না।
এ প্রসঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়ে ট্রাম্প আরও লেখেন, “ইরান যদি যুক্তরাষ্ট্রের ওপর হামলা চালায়, তাহলে আমাদের সামরিক বাহিনী এমন শক্তি প্রয়োগ করবে, যা বিশ্ব আগে কখনও দেখেনি।”
তবে কয়েক ঘণ্টা পর কিছুটা সুর নরম করে ট্রাম্প বলেন, “ইরান ও ইসরায়েল একটি চুক্তিতে পৌঁছাবে, এবং তা যেকোনো সময়ই হতে পারে।”
স্থানীয় সময় রোববার সন্ধ্যায় জি-৭ সম্মেলনে যোগ দিতে কানাডার রকি পর্বতমালার উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে হোয়াইট হাউসের সামনে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আমি আশা করি একটি চুক্তি হবে। তবে দেখা যাক কী হয়। অনেক সময় লড়াই করেই সমাধানে পৌঁছাতে হয়।”
তিনি আরও বলেন, “সংঘাত নিরসনে আমার রেকর্ড আছে। যেমন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা থামিয়েছিলাম, তেমনি ইরান-ইসরায়েল ইস্যুতেও শান্তি ফিরিয়ে আনতে পারব।”
ইএইচ