Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

পদ্মা সেতুর দুই পাড়েই যানজট

মো. মাসুম বিল্লাহ

জুন ২৬, ২০২২, ১১:৩২ এএম


পদ্মা সেতুর দুই পাড়েই যানজট

উদ্বোধনের একদিন পর রবিবার ভোর থেকে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে পদ্মা সেতু। ভোর ছয়টায় সেতু খুলে দেয়ার পর সেতুর দুই প্রান্তে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে বলে জানা যায়। যানজট থাকলেও তা নিয়ে মানুষের মধ্যে খুব একটা আক্ষেপ চোখে পড়ছে না

টোল প্লাজায় এক একটি যানবাহনের টোল আদায় করতে যে সময় লাগছে, তার তুলনায় যানবাহনের চাপ অনেক বেশি হওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এছাড়া প্রথম দিন সেতু পার হতে আগ্রহীদের সংখ্যা অনেক বেশি হওয়াও যানজটের একটা কারণ বলে জানিয়েছেন টোল কর্তৃপক্ষ।

দুই প্রান্তের ১৪টি টোল গেট চালু করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ। সবকটিতে ম্যানুয়ালি আদায় করা হচ্ছে। তবে প্রথম দিনে অনেকেই টোলের পরিমাণ না জানায় কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে বলে জানান টোল প্লাজার কর্মীরা। 

জাজিরা প্রান্তের টোল ম্যানেজার কামাল হোসেন বলেন, যানবাহনের চাপ কিছুটা বেশি। তবে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো সমস্যা হয়নি। আসলে অনেকেই জানেন না টোল কত, সে কারণেও কিছুটা সময় লাগছে। দু-একদিনের মধ্যে চাপ আরও কিছুটা কমে আসবে আশা করছি।

মাওয়া ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ জিয়া বলেন, পদ্মা সেতু সকাল ৬টা থেকে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। এজন্য রাত থেকেই কিছু গাড়ি সেতু পারের জন্য টোল প্লাজায় অপেক্ষা করছিল। এ জন্য কিছুটা যানজট সকালে দেখা দিয়েছিল। এখন অনেকটাই স্বাভাবিক আছে। 

একজন যাত্রী জানান, গাড়ির চাপ থাকায় খুব ধীরে ধীরে এগোচ্ছে গাড়িগুলো। সামনে এক কিলোমিটারের মত দীর্ঘ যানজট রয়েছে। প্রায় আধা ঘণ্টার মতো সময় লাকছে টোল প্লাজায় যেতে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এক একটি গাড়ির টোল আদায় করতে দু-তিন মিনিটের মত লাগছে। মোট ছয়টা বুথ থেকে টোল আদায় করা হলেও, যানবাহনের চাপ অত্যধিক হওয়ায় এই যানজট তৈরি হয়েছে। পদ্মা সেতু প্রথমবারের মত পার হওয়া নিয়ে মানুষের উচ্ছ্বাস এত বেশি যে যানজট নিয়ে খুব বেশি অভিযোগ তার চোখে পড়েনি।
 
শরীয়তপুর থেকে আসা এক দম্পতি সাথে কথা হলে তিনি বলেন, প্রথম দিন সেতু পার হওয়ার জন্যই আসা। "সারা জীবন এখান থেকে ফেরি পার হয়েছি। যখন সেতু তৈরি হচ্ছিল তখনও বিশ্বাস হয়নি, কোনদিন এই সেতু পার হতে পারবো। তাই নিজের অবিশ্বাস দূর করার জন্য আজ এসেছি" ।

সেতু পার হওয়ার অপেক্ষায় থাকা আরেকজন বাসযাত্রী বলেন, 'পদ্মা নদীকেও যে বশে আনা যায়' সেটা তার বিশ্বাস করতে এখনো কষ্ট হচ্ছে।

এর আগে শনিবার পদ্মা সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

যান চলাচলের সঙ্গে খুলে দেওয়া হয় দুই প্রান্তের ১৪টি টোল গেট। সবকয়টি গেটে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে টোল আদায় করা হচ্ছে। নির্ধারিত টোল পরিশোধ করে থ্রি-হুইলার ছাড়া যেকোনো গাড়ি পার হতে পারছে।

সরকারের নির্ধারণ করা টোল হার অনুযায়ী, ছোট বাসে ১৪০০ টাকা, মাঝারি বাসে ২০০০ টাকা এবং বড় বাসে ২৪০০ টাকা টোল দিতে হবে। ছোট ট্রাকের টোল ১৬০০ টাকা, মাঝারি ট্রাকে ২১০০-২৮০০ টাকা, বড় ট্রাকে ৫৫০০ টাকা। পিকআপের টোল ১২০০ টাকা। কার ও জিপের টোল ধরা হয়েছে ৭৫০ টাকা, মাইক্রোবাসে ১৩০০ টাকা এছাড়া মোটরসাইকেলে ১০০ টাকা।

পদ্মা সেতু নির্মাণে মোট খরচ করা হচ্ছে ৩০ হাজার ১৯৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা। গত বছরের ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যয় করা হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা। এসব খরচের মধ্যে রয়েছে সেতুর অবকাঠামো তৈরি, নদীশাসন, সংযোগ সড়ক, ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন ও পরিবেশ, বেতন-ভাতা ইত্যাদি।

ইএফ

Link copied!