ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

ব্যস্ততম শিমুলিয়া নৌ-বন্দর এখন সুনসান নীরবতা

মো. রমজান হোসাইন খান রকি, লৌহজং (মুন্সীগঞ্জ)

মো. রমজান হোসাইন খান রকি, লৌহজং (মুন্সীগঞ্জ)

জুন ২৮, ২০২২, ০৩:১৪ পিএম

ব্যস্ততম শিমুলিয়া নৌ-বন্দর এখন সুনসান নীরবতা

মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া নৌ-বন্দর ছিলো সবচেয়ে জাঁকজমকপূর্ণ ঘাট। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ পারাপার হতেন এই ঘাট দিয়ে। কিন্তু স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরু হওয়ার পর থেকে হারিয়েছে শিমুলিয়া ঘাটের চিরচেনা সেই রূপ। 

ফেরি ঘাট এলাকায় যানবাহনগুলো অলস পড়ে আছে। সিবোট ও লঞ্চঘাট, বাস টার্মিনালেও নেই কোন যাত্রীদের পদচারনা। নেই সিবোট চালক, লঞ্চ চালক ও বাসের হেলপারের ডাকাডাকি। যানবাহন ও যাত্রী শুন্য ঘাটে নেই কোন কোলাহল।

মঙ্গলবার ( ২৮জুন) সকালে শিমুলিয়া ঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, অলস পরে আছে এতোদিন পদ্মায় দাপিয়ে বেড়ানো সিবোট, লঞ্চ ও ফেরিগুলো। ঢাকা-মাওয়া রুটে চলাচল করা বাসগুলো যেনো মরুভূমির বুকে পার্কিং করে রাখা হয়েছে। ফাঁকা পরে আছে সারি সারি খাবারের দোকান। লঞ্চ ঘাটেও নেই যাত্রীদের চাপ। সিবোট ঘাটেও নেই যাত্রীদের আনাগোনা। 

সারি সারি যানবাহন ফেরি আর লঞ্চের ভেপুর শব্দ আর লোকজনের কোলাহলে মুখরিত শিমুলিয়া ঘাট যেন আজ বিরান ভূমি। পদ্মায় চলাচল করা ফেরিগুলো বসে আছে তিনদিন ধরে। লঞ্চ ও সিবোট চালকরা ঘাটে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করেও পাচ্ছে না কোন যাত্রীর দেখা। অলস সময় কাটছে তাদের। ব্যস্ত ঘাটে ব্যস্ততা হল প্রতিদিনকার। আজ ঘাট বন্ধ, গাড়ি নেই, নেই যাত্রী।

সেই সুযোগে যেন একটু শান্তির বিশ্রাম। সারি সারি খাবারের দোকানেও নেই তেমন ভিড়-বাট্টা। যেন এতোদিনের ক্লান্তিতে একটু ঝিমিয়ে নিচ্ছে। লঞ্চ ঘাটে নেই সেই চীরাচরিত দৃশ্য। সারি ধরে ঘাটে দাঁড়িয়ে দুলছে ঢেউ এর তালে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় খুশি ঘাট সংশ্লিষ্ট সকলেই। 

শিমুলিয়া- মাঝিবাড়ী নৌরুটে চলাচলকারী লঞ্চের সারেং আবু বক্কর জানান, পদ্মাসেতু হওয়াতে মনটা আনন্দে ভরে গেছে। আমরা অনেক খুশি। বহু বছর ধরে দক্ষিন বঙ্গের যাত্রীরা নানা ভোগান্তি নিয়ে পদ্মা পাড়ি দিয়েছেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেরি পারাপার ও লঞ্চের জন্য অপেক্ষা করতো। 

তবে আনন্দের পাশাপাশি আমারদের বোবা কান্নাও আছে, কেননা এখন ঘাটে যাত্রী নেই, সারাদিনে একটা টিপ দিতে পারছিনা। যে পরিমাণ যাত্রী হচ্ছে এতে তেলের টাকাও উঠছে না। এতো বছর লঞ্চে যাত্রী পারাপার করেছি সেই মায়ায় এখনও ঘাটে আছি।

এদিকে সিবোট চালক মো.দানেশ মাতবর বলেন, পদ্মাসেতু উদ্বোধনের আগের দিন ঘাট এলাকায় যাত্রী ছিলো। পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পর এখন সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। সেতু চালু হওয়ার পর যাত্রীরা আর ঘাটে আসছে না। আমরা আমাদের জীবিকা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি। পদ্মা সেতু উদ্বোধন হওয়ায় খুশি হয়েছি কেননা পার হওয়া যাত্রীদের দুর্ভোগ নিজ চোখে দেখেছি। তবে আমি সরকারের কাছে দাবি জানাই আমাদের জীবিকার যেনো কোনো ব্যবস্থা করে দেন। 

শিমুলিয়া লঞ্চ ঘাটের মোল্লা হোটেলের মালিক মো. শামসুল মোল্লা জানান, আগে হোটেলে দিনরাত ইলিশ ভাজা, মাছ, মুরগি বিক্রি করতাম। এখন সারাদিনে টুকটাক বিকি কিনি করি। পদ্মাসেতু চালু হওয়াতে ঘাট এলাকায় দক্ষিন বঙ্গের কোন যাত্রী আসা যাওয়া করছেনা। 

তিনি আরো জানান, পদ্মাসেতু চালুর পর সেতু এলাকায় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে লোকজন ঘুরতে আসে। শিমুলিয়া এলাকায় বহু অভিজাত খাবার হোটেল রয়েছে। সেখানে দর্শনার্থীরা ছুটে যাচ্ছেন। কিন্তু আমরা এখন বিকি কিনি করতে পারছিনা। 

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) শিমুলিয়া বন্দর কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন জানান, সকাল থেকেই লঞ্চ-স্পিডবোট যথানিয়মে চলাচল করছে তবে যাত্রী সংখ্যা অনেক কম। ২৬ জুন ভোর হতে পদ্মা সেতু জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার পরই পদ্মা সেতুর উপর দিয়েই দক্ষিন বঙ্গের মানুষ যাতায়াত করছেন। 

বিআইডব্লিউটিএর শিমুলিয়া ঘাটের সহকারী পরিচালক শাহাদাত হোসেন বলেন, ১৯৮৬ সালে লৌহজং উপজেলার মাওয়ায় ফেরিঘাট স্থাপন করা হয়। পদ্মা সেতু চালু হলো, এখন থেকে ঘাটের লঞ্চ ও স্পিডবোট গুলোকে অন্যত্র সরিয়ে বিভিন্ন রুটে চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। এ বিষয়ে লঞ্চ ও স্পিডবোট মালিকদের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। রুট ব্যবহারের ক্ষেত্রে তাদের পছন্দকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে।

Link copied!