Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

টাঙ্গাইলে আ.লীগের সমর্থন পেতে মরিয়া বিএনপি কর্মী

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

সেপ্টেম্বর ২১, ২০২২, ০৬:০০ পিএম


টাঙ্গাইলে আ.লীগের সমর্থন পেতে মরিয়া বিএনপি কর্মী

টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার সল্লা ইউনিয়নের জাবরাজান গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে হাসানুজ্জামান তালুকদার রঞ্জু সিরাজগঞ্জ থেকে এসে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সমর্থন পেতে মরিয়া হয়ে ওঠেছেন। তিনি টাঙ্গাইল জেলা পরিষদ নির্বাচনে সদস্য পদে (টাঙ্গাইল-৬, কালিহাতী) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। হাসানুজ্জামান তালুকদার রঞ্জু সিরাজগঞ্জ শহরে একটি কোচিং সেণ্টার পরিচালনা করছেন এবং সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন।  

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাসানুজ্জামান তালুকদার রঞ্জু পারিবারিকভাবে প্রথমে জাসদ ও পরে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। ভূঞাপুর ইবরাহীম খাঁ মহাবিদ্যালয়ে ছাত্রাবস্থায় তিনি জাসদ ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন। কর্মজীবনের শুরুতে তিনি টাঙ্গাইল শহরের একটি স্বনাম খ্যাত বেসরকারি ক্যাডেট কোচিংয়ে শিক্ষকতা করেন। শিক্ষকতা করাকালীন তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের পরিচালকের শ্যালিকাকে বিয়ে করেন। ওই পরিচালক সিরাজগঞ্জ শহরে শাখা খুললে নৈতিক স্খলনজনিত কারণে তাকে টাঙ্গাইল থেকে সরিয়ে সিরাজগঞ্জ শাখার দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেখানে দায়িত্ব পালনকালে সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন তালুকদারের হাত ধরে রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। জেলা বিএনপির বিভিন্ন মিটিং-মিছিল ও সমাবেশে তার অংশগ্রহন ছিল নিয়মিত।

এক পর্যায়ে তিনি সিরাজগঞ্জ বিএনপির এক নারী কর্মীকে তার প্রতিষ্ঠানে আয়া পদে চাকুরি দেন। পরে ওই নারীর সাথে অনৈতিক সম্পর্কের কারণে তাকে বিয়ে করতে বাধ্য হন। ওই দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকে তিনি বিএনপির রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন এবং আওয়ামী ঘরাণার লোকদের সাথে ঘনিষ্ঠতা তৈরিতে প্রয়াস পান। বিয়ের প্রথম স্ত্রী ঢাকায় অবস্থান করলেও তিনি দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে সিরাজগঞ্জে বসবাস করছেন। গত ইউপি নির্বাচনে কালিহাতী উপজেলার সল্লা ইউনিয়ন থেকে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। সে লক্ষে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে তৎপরতা চালিয়ে ব্যর্থ হন।

সম্প্রতি জেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলে তিনি সদস্য পদে(টাঙ্গাইল-৬, কালিহাতী) মনোনয়নপত্র সংগ্রহ এবং জমা দেন। অতঃপর আবার তিনি ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের নেতাদের সমর্থন পেতে মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছেন।

স্থানীয় আবেদ আলী, শাহালম মাস্টার, হযরত আলী সরকার, আবুল কালাম সহ অনেকেই জানান, হাসানুজ্জামান তালুকদার রঞ্জু মূলত: বিএনপি ঘরাণার মানুষ। তিনি এলাকার ভোটার হলেও সিরাজগঞ্জে বসবাস করেন। তাছাড়া তিনি শুধুমাত্র নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য এলাকায় আসেন। ইউপি নির্বাচনের সময় এসে আবার চলে গিয়েছিলেন, এখন জেলা পরিষদে সদস্য পদে নির্বাচন করতে এসেছেন।

হাসানুজ্জামান তালুকদার রঞ্জু জানান, তিনি স্কুলে পড়াকালীন সময় থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তিনি সব সময়ই আওয়ামী রাজনীতির সাথে যুক্ত। তবে কোন পদ-পদবীতে যাননি। যারা ভিন্ন কথা বলে তারা মিথ্যা বলছেন। নির্বাচন করতে আসায় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা তার বিরুদ্ধে ওইসব প্রচারণা চালাচ্ছেন।

সল্লা ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম জানান, হাসানুজ্জামান তালুকদার রঞ্জু ছাত্রাবস্থায় জাসদ ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। সিরাজগঞ্জে গিয়ে তিনি বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নয়া কমিটিতে একজন শীর্ষ রাজনীতিকের সুপারিশে তাকে আ.লীগের সদস্য করা হয়েছে।

কালিহাতী উপজেলা পরিষদের প্রথম (১৯৮৫) নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আব্দুল হামিদ প্রামাণিক জানান, পরিবারিকভাবে রঞ্জু তার পরিচিত। জেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হয়েছেন। রঞ্জু ইদানিং আওয়ামী লীগ করছেন বলে তিনি শুনেছেন।

উল্লেখ্য, টাঙ্গাইল জেলা পরিষদ নির্বাচনে কালিহাতী আসনে সদস্য পদে তিন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

কেএস

Link copied!