ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা মঙ্গলবার, ০১ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad

বাকৃবিতে সর্বস্তরে রাজনীতি নিষিদ্ধ, মানছে না সংগঠনগুলো 

আব্দুল্লাহ আল আমীন, ময়মনসিংহ

আব্দুল্লাহ আল আমীন, ময়মনসিংহ

জুন ৩০, ২০২৫, ১১:৫৯ পিএম

বাকৃবিতে সর্বস্তরে রাজনীতি নিষিদ্ধ, মানছে না সংগঠনগুলো 

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী—সবার জন্য রাজনীতি নিষিদ্ধ বলে আবারও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক এ. কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া। 

সোমবার ক্যাম্পাসের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি জানান, “সিন্ডিকেট সভায় গৃহীত রাজনীতি নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন এখনো বহাল রয়েছে। তা উপেক্ষা করে ছাত্রসংগঠনগুলো নিয়ম ভাঙছে, কোনো অনুমতি না নিয়ে কর্মসূচি পালন করছে। প্রশাসন এসব কার্যক্রমে বিরক্ত। অস্থিতিশীলতা ঠেকাতেই এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। জাতীয় নির্বাচন শেষে বাকসু ও শিক্ষক সমিতি নির্বাচন নিয়ে চিন্তা করা হবে।”

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের ২৮ আগস্ট শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর এক জরুরি সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. হেলাল উদ্দীনের স্বাক্ষরে প্রজ্ঞাপন জারি হয়।

তবে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকরে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় ক্ষোভ জানাচ্ছেন শিক্ষার্থীসহ শিক্ষক-কর্মচারীরা। তাদের অভিযোগ, ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট প্রকাশ্যেই দলীয় কর্মসূচি চালাচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন, ‘নিষেধাজ্ঞা কাগজে থাকলেও বাস্তবে প্রয়োগ নেই।’

ফজলুল হক হল, আশরাফুল হক হল, শহীদ শামসুল হক হল ও মওলানা ভাসানী হলের শিক্ষার্থীদের দাবি, ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা নিয়মিত সদস্য ফরম বিতরণ, কর্মী সংগ্রহ ও হলে আধিপত্য বিস্তারে তৎপর। অন্যদিকে ইসলামী ছাত্রশিবির সরাসরি মিছিল না করলেও দাওয়াতী কার্যক্রম, কোরআন বিতরণ, ইফতার আয়োজনের মতো কর্মসূচির মাধ্যমে ক্যাম্পাসে সক্রিয় রয়েছে। দেয়ালে নিয়মিত দলীয় স্লোগান লিখতেও দেখা যাচ্ছে তাদের।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টও নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রথম প্রকাশ্যে দলীয় ব্যানারে মিছিল করেছে বলে জানান শিক্ষার্থীরা। সাম্প্রতিক সময়ে তারা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (বাকসু) নির্বাচনের দাবিতে গণভোট কর্মসূচি পালন করছে। তবে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কোনো উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক তৎপরতা চোখে পড়েনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী বলেন, “সাধারণ শিক্ষার্থীরা রাজনীতি চায় না। আমরা চাই স্বাধীন ছাত্র সংসদ, যেখানে রাজনৈতিক প্রভাব থাকবে না। যারা লেজুরবৃত্তির রাজনীতি চর্চা করছে, তারা আন্দোলনের অর্জন নষ্ট করছে।”

এ বিষয়ে বাকৃবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো আতিকুর রহমান বলেন , যে জাতি নেতৃত্বহীন, তার ভবিষ্যৎ অন্ধকার। আর নেতৃত্ব তৈরি হয় আন্দোলনের আগুনে, মতের সংঘাতে, আদর্শের অনুশীলনে—আর এখানেই ছাত্ররাজনীতির প্রয়োজনীয়তা অনিবার্য।

একটি বিশ্ববিদ্যালয় যদি হয় জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র, তবে ছাত্ররাজনীতি সেই চর্চার সাহসী বিকল্পমত। এটি তরুণদের ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়াতে শেখায়, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলতে শেখায়। শাসকের চোখে চোখ রেখে কথা বলার যে শক্তি, সেটি পাঠ্যবই নয়—রাজনীতির ময়দানেই অর্জিত হয়।

যারা ছাত্ররাজনীতিকে নিষিদ্ধ করতে চায়, তারা আসলে চিন্তার স্বাধীনতাকে শৃঙ্খল পরাতে চায়। তারা চায় একদল মৌন, আত্মমগ্ন, দায়িত্ববিমুখ প্রজন্ম—যাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অব্যবস্থা নিয়ে কিছু বলার সাহস নেই।

তবে হ্যাঁ, বিগত ফ‍্যাসিস্ট শাসনামলে ছাত্ররাজনীতি অনেক ক্ষেত্রেই ছিল বিচ্যুত, বিকৃত ও ভ্রান্ত এর জন্য দায়ী নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ। এই ছাত্রলীগের অপকর্মের দায় ফ‍্যাসিস্স্ট বিরোধী প্রকাশ্যে ক্রিয়াশীল গনতন্ত্রে বিশ্বাসী অপরাপর ছাত্রসংগঠন কেন ভোগ করবে?
এর সমাধান রাজনীতিকে নিষিদ্ধ করা নয়—বরং রাজনীতির গুনগত পরিবর্তন আনা,জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল যা কায়মনবাক‍্যে বিশ্বাস করে।

একটি সুস্থ রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে চাইলে—ক্যাম্পাসে গঠনমূলক, আদর্শনিষ্ঠ এবং জবাবদিহিতামূলক ছাত্ররাজনীতি অপরিহার্য। কারণ ছাত্ররা নীরব থাকলে, ভবিষ্যৎ কথা বলতে পারে না। তাই আমরা চাই বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতন্ত্র চর্চার পথ উন্মুক্ত হোক এবং দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তৈরির ভিত্তি রচিত হোক।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, “লেজুরবৃত্তির রাজনীতির বিপরীতে আমরা শিক্ষাকেন্দ্রিক কর্মসূচি চালিয়েছি। প্রশাসন নীরব থেকেছে বলে অন্যরা দলীয় কার্যক্রম চালাচ্ছে। নিষেধাজ্ঞা থাকলে তা যেন সবার জন্যই সমভাবে প্রযোজ্য হয়।”

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা ও বৈষম্যমূলক আচরণ নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। তাদের দাবি, বাস্তবভিত্তিক ও সমভাবে প্রয়োগযোগ্য নীতিমালা না হলে এই নিষেধাজ্ঞা কেবলই কাগুজে থাকবে।

ইএইচ

Link copied!