ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

অবসরে যাওয়ার পরও শেবাচিম হাসপাতাল ছাড়ছে না

আরিফ হোসেন, বরিশাল ব্যুরো

আরিফ হোসেন, বরিশাল ব্যুরো

অক্টোবর ১৯, ২০২২, ০৪:০১ পিএম

অবসরে যাওয়ার পরও শেবাচিম হাসপাতাল ছাড়ছে না
  • অবসরে যাওয়া ও বহিরাগতদের পুলিশে ধরিয়ে দিন-পরিচালক
  • নবজাতককে জিম্মি করে টাকা দাবি করেন মালেক ও মমতাজ- রোগীর স্বজনরা
  • সেচ্ছাসেবীর নামে প্রতিদিন প্রত্যেকে হাতিয়ে নিচ্ছে রোগীদের অর্থ- সরকারী স্টাফরা
  • রোগীর স্বজনদের পক্ষে প্রতিবাদ করায় বিনা ও স্বর্নার হাতে লাঞ্চিত স্টাফ নার্স

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের গাইনী ওটির সাবেক অফিস সহায়ক মোঃ আঃ মালেক ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী মোসাঃ মমতাজ বেগম প্রায় ৩ বছর পূর্বে অবসরে যাওয়ার পরেও কর্মস্থল ছাড়ছেনা বলে এমনই অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে হাসপাতালের কর্মচারীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে নানা ধরনে প্রশ্ন।

তবে একটি সূত্র জানিয়েছে, হাসপাতালের ৫ম তলার গাইনী ওটির ইনর্চাজ ও ওয়ার্ড মাস্টারকে ম্যানেজ করেই ওটিতে রয়েছে মালেক ও মমতাজ সহ কয়েকজন বহিরাগত লোক। হাসপাতালের কাগজ পত্রে সাবেক অফিস সহায়ক আঃ মালেক ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী মমতাজ বেগম অবসরে থাকলেও বর্তমানে ডিউটি করছেন হাসপাতালের গাইনী ওটিতে। রোগীর স্বাজনদের জিম্মি করে প্রতিদিন প্রত্যেকে হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা। বিষয়টি নিয়ে কঠোর কোন ভূমিকার নেই হাসপাতাল কর্তপক্ষের।

সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রোগীর সন্তান প্রসব করার পরে স্বজনদের কাছে নবজাতক বাচ্চা হস্তান্তর করার সময় মিষ্টি খাওয়ার কথা বলে স্বজনদের কাছে ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা দাবি করেন সাবেক অফিস সহায়ক আঃ মালেক ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী মোসাঃ মমতাজ বেগম সহ ওটিতে থাকা কয়েকজন বহিরাগত ব্যক্তি। রোগীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ায় রবিবার (১৬ আগস্ট) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে হাসপাতালের ৫ম তলার পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডে বসে সিনিয়র স্টাফ নার্স মমতাজ বেগমসহ ডিউটিরত নার্সরা রোগীদের পক্ষে প্রতিবাদ করায় তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে খারাপ আচারন করেন বিনা বেগম ও স্বর্না বেগম।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের একাধিক কর্মচারী জানান, সরকারী কোন অনুমতি ছাড়া এক্সটা ভাবে কি ভাবে মালেকের মেয়ে খুকু মনি, মমতাজের নাতি স্বর্না আক্তার, ওয়ার্ড মাস্টার আবুল কালামের আত্ময়ীয় আব্দুর আজিজ, তহমিনা আক্তারের ভাইয়ের ছেলে নোবেল, মোসলেমের মেয়ে বিনা বেগম ও সনিয়াসহ বেশ কয়েকজন বহিরাগত লোক বছরের পর বছর কাজ করে যাচ্ছে ওটিতে। 

তারা আরো বলেন, এক্সটা লোক আর সেচ্ছাসেবী নামে যারা হাসপাতালে কাজ করছেন তাদের হাতে প্রতিদিনই রোগীর স্বজনরা নানা ধরনের হয়রানীর শিকার হয়ে থাকে। যেমন টাকা ছাড়া ঘুরে না ট্রলির চাকা, তেমনই হাসপাতালের গাইনী ওটিতে থাকা অবসরে যাওয়া মালেক, মমতাজ, খুকু মনি, স্বর্না আক্তার, আব্দুর আজিজ, নোবেল, বিনা বেগম, সনিয়ার কাছ থেকে টাকা ছাড়া মিলছেনা কোন সেবা। 

বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত সাবেক সরকারী পরিচ্ছন্নতাকর্মী মমতাজ বেগম’র কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি অবসরে গিয়েছি এটা সত্য। তবে এখন পর্যন্ত এলপিআরের টাকা পাইনি। এলপিআরের টাকা পেলে হাসপাতালে আসা বন্ধ করে দিবো।

রোগীর স্বজনদের জিম্মি করে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মমতাজ বলেন, আমি কোন রোগীকে জিম্মি করে টাকা নেই না। তবে চা খাওয়ার জন্য রোগীর স্বজনরা কিছু টাকা দিয়ে থাকে আমাদের। অবসরে যাওয়ার পরে আপনি হাসপাতালে রয়েছে সেটা কি বৈধ না অবৈধ জানতে চাইলের তিনি বলেন, এটা সম্পূর্ণ অবৈধ।

প্রশ্নের জবাবে মমতাজ আরো বলেন, ভাই এখান থেকে কোন বেতন পাই না। তাই রোগীদের কাছ থেকে চা খাওয়ার জন্য কিছু টাকা চাই। তবে হাসপাতালের সহকারীর পরিচালক স্যার আমাকে ডিউটি করার জন্য মৌখিক ভাবে অনুমতি দিয়েছে। বাবা নিউজ টা করিয়েন না। আপনি হাসপাতালের আসেন আপনার সাথে কথা বলি।

অবসরে যাওয়া অফিস সহায়ক মোঃ আঃ মালেকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবসরে যাওয়ার পরেও আমি কর্মস্থলে রয়েছি এটা সম্পূর্ন বেআইনী। তবে আমি পুরানো লোক বিধায় গাইনি বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. খুরশীদ জাহান ম্যাডাম আমাকে রেখেছে। তারা আমাকে চলে যেতে বললে আমি চলে যাবো।

রোগীর স্বজনদের কাছে নবজাতক বাচ্চা দিয়ে মিষ্টি খাওয়ার কথা বলে টাকা দাবি করা বিষয়ে জানতে চাইলে সেচ্ছাসেবী নোবেল বলেন, ভাই আমরা কোন বেতন পাই না। তাই রোগীদের কাছ থেকে কিছু টাকা পাই তা দিলে চলি। তবে কোন রোগীকে জিম্মি করি না।

গাইনী ওটির ইনর্চাজ বেবি নাজমিন বলেন, অফিস সহায়ক আঃ মালেক ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী মমতাজ বেগম অবসরে গিয়েছে এটা সত্য। তবে অবসরে যাওয়ার পরে কোন কর্মচারী তার কর্মস্থলে থাকতে পারবে না এটা সরকারী নিয়ম। কিন্তু তারা কিভাবে কাদের মাধ্যমে ওটিতে কাজ করছে সেটা আমার জানা নেই।

তিনি আরো বলেন, বিষয়টি নিয়ে পরিচালক সাহেব তাদেরকে তিন দিনের মধ্যে হাসপাতাল ত্যাগ করার জন্য একটি লিখিত আদেশ দিয়েছিলেন। পরে তারা হাসপাতালে এডি স্যারকে বলে নাকি কাজ করার অনুমতি নিয়েছে শুনেছি। সরকারী কোন অনুমতি ছাড়া ওটিতে বহিরাগত লোক মালেকের মেয়ে খুকু মনি, মমতাজের নাতি স্বর্না আক্তার, ওয়ার্ড মাস্টার আবুল কালামের আত্ময়ীয় আব্দুর আজিজ, তহমিনা আক্তারের ভাইয়ের ছেলে নোবেল, মোসলেমের মেয়ে বিনা বেগম সহ বেশ কয়েকজন কি ভাবে কাজ করছে জানতে চাইলের তিনি বলেন, ভাই বিষয়টি দেখার নিয়ম হলো ওয়ার্ড মাস্টারদের। তারা যাদের এনে এখানে দেয় তাদের দিয়েই আমাদের কাজ করাতে হচ্ছে। আমার জানতে চাওয়ার কেউনা। এটা হাসপাতাল কতৃপক্ষের বিষয়।

বিষয়টি নিয়ে গাইনি বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. খুরশীদ জাহান বেগম’র সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমাদের জনবল সংকট থাকায় অবসরে যাওয়া পুরানো দুইজন লোককে পরিচালক স্যারকে বলে গাইনী ওটিতে রাখা হয়েছে। তবে সেচ্ছাসেবীরা রোগীদের জিম্মি করে তাদের স্বজনদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করছে এটা সত্য। কিছু দিন আগে আমি দুই জনকে হাতে নাতে ধরেছি। এবং কি রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে নেওয়া টাকা ফেরত দিতে বাধ্য করেছি।

বিষয়টি নিয়ে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মনিরুজ্জামানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, হাসপাতালে সেচ্ছাবেসীর নামে যারা কাজ করছেন তারা রোগীদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে এটা সত্য। তবে আমাদের জনবল সংকট থাকার কারনে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। তিনি আরো বলেন জনবল সংকট সমাধান হলে আমি আশা করি সব সমস্যা সমাধান হবে।

টাকা বিনিময় ওয়ার্ড মাস্টাররা সেচ্ছাবেসীদের নিয়োগ দিচ্ছে বিষয়টি নিয়ে কথা হলে তিনি বলেন, এই বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে আমাদের কাছে কোন ব্যক্তি লিখিত কোন অভিযোগ এখন পর্যন্ত দেয়নি।  অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অবসরে যাওয়ার পরে অফিস সহায়ক আঃ মালেক ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী মোসাঃ মমতাজ বেগম কি কর্মস্থলে কাজ করতে পারেন প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন জনবল সংকট থাকায় বর্তমানে সেচ্ছাসেবী হিবেসে তারা কাজ করছেন।

এ বিষয়ে শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক সাইফুল ইসলামের বলেন, অবসরে যাওয়ার পরও যারা কর্মস্থলে রয়েছে তারা অবৈধ ভাবে রয়েছে। তাদের কর্মস্থল ত্যাগ করার জন্য বারবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। এবং কি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও বলা হয়েছে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার জন্য। হাসপাতালের সরকারী কর্মচারী ছাড়া যারা রয়েছেন তারা সবাই অবৈধ ভাবে রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে খুব শিগ্রই আমরা অভিযান পরিচালনা করবো। অবসরে যাওয়া সাবেক অফিস সহায়ক আঃ মালেক ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী মোসাঃ মমতাজ বেগমকে নাকি আপনি গাইনী ওটিতে সেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করার অনুমতি দিয়েছেন বিষয়টি বলেছে সহকারী পরিচালক ও গাইনি বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক তাদের বক্তব্যে।

প্রতিবেদকের প্রশ্নের জবাবে পরিচালক বলেন, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। আমি অবসরে যাওয়া কোন কর্মচারীকে কর্মস্থলে থাকার অনুমতি দেইনি। তবে জনবল সংকট রয়েছে এটা সত্য। তাই বলে কি বহিরাগতদের দিয়ে কাজ করাতে হবে।

উল্লেখ্য, শেবাচিম হাসপাতালের একজন সেচ্ছাবেসী, আয়া ও ট্রলিম্যান প্রতিদিন দালাল নিয়ন্ত্রিত ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে কমিশন নিচ্ছেন ২ হাজার টাকার উপরে। আর এতে প্রতারিত হচ্ছেন দূর-দূরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ রোগী ও তার স্বজনরা।

কেএস 

Link copied!