ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

ঠাকুরগাঁওয়ে খেজুরের রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরিতে ব্যস্ত গাছিরা

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

ডিসেম্বর ৩১, ২০২২, ০২:১৭ পিএম

ঠাকুরগাঁওয়ে খেজুরের রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরিতে ব্যস্ত গাছিরা

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নারগুন ইউনিয়নের বোচাপুকুর এলাকায় মোহন ইক্ষু খামারের সাথেই ঠাকুরগাঁও সুগার মিলস লিমিটেডের খেঁজুর বাগান। শীত এলেই প্রতি বছরের ন্যায় এবারেও বাগানটি লিজ নিয়ে গাছ থেকে রস সংগ্রহ ও সেই রস দিয়ে গুড় তৈরির কাজ শুরু করেছেন প্রতি বছরের ন্যায় এবছরেও গাছিরা প্রতিদিন এই বাগানের সাতশ গাছ থেকে প্রায় এক হাজার লিটার খেঁজুরের রস সংগ্রহ করছেন গাছিরা।

প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত গাছে হাড়ি টানান গাছিরা। গাছের ফোটাফোটা রসে পূর্ণ হয় হাড়ি। সেই রস ভর্তি হাড়ি ভোর রাত থেকে শুরু হয় নামানোর কাজ, হাড়ি নামিয়ে চুলোর উপরে বিশেষ বড় টিনের কড়াইয়ে ঢেলে সেই রসকে আগুনে জ্বালিয়ে ঘন করার পর কড়াই চুলো থেকে নামিয়ে সেটি ঘুটনির সাহায্যে কিছুক্ষণ ঘুটা হয়। ঘুটার পরে সেই ঘন তরল গুড় ছোট ছোট মাটির সাচে ঢালা হয়। কিছুক্ষণ পর সেগুলো জমাট বেঁধে ঢিকা গুড়ে পরিণত হয়। এভাবেই দিনভর চলতে থাকে গাছিদের কর্মযজ্ঞ। আর প্রাকৃতিক পরিবেশে এমন কর্মযজ্ঞ দেখতে, খেজুরের রস ও গুড় খেতে এবং কিনতে স্থানীয়দের পাশাপাশি প্রতিদিন দূরদূরান্তের দিনাজপুর, পঞ্চড় সহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসেন শতশত দর্শনার্থী ও ক্রেতা।

ঠাকুরগাঁও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে আসা কিছু স্টুডেন্টদের সাথে কথা হলে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, খেজুরের রস দিয়ে গুড় তৈরির দৃশ্য দেখতে ভোর পাঁচটায় আমরা এখানে এসেছি। সরাসরি গাছ থেকে রস পেয়ে গুড় তৈরির প্রক্রিয়াটি দেখলাম। এবং টাটকা রস খেলাম মন জুড়িয়ে গেলো।  

স্থানীয় একজন মোঃ লুৎফর রহমান বলেন, এখানকার গুড় ও রস খুবই সুস্বাদু। তাই দূরদূরান্ত থেকে অনেক মানুষ এখানে আসেন রস ও গুড় কিনতে। দিনাজপুর থেকে লিটন আহম্মেদ এসেছেন গুড় কিনতে। তিনি বলেন, আমি ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। সেখানকার বস আমাকে খেঁজুরের গুড় নিয়ে যেতে বলেছেন। তাই আমি এখানে গুড় কিনতে এসেছি। এখানকার গুড়ে কোনো ভেজাল মিশ্রণ নেই, আমাদের সকলের সামনেই তৈরি গুড় কিনে আমরা আনন্দিত।

নাটোর জেলার লালপুর থেকে খেঁজুরের রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরির করার জন্য এসেছেন আব্দুল মালেক, তিনি বলেন, সকাল ১০টা থেকে গাছের ছাল কেঁটে হাড়ি টানানোর কাজ দুপুর পর্যন্ত চলে। আর এই হাড়িতে ফোটায় ফোটায় রস জমতে থাকে। পরে সেই হাড়ি গুলো রাত ৩টা থেকে গাছ থেকে নামানো হয়। হাড়ি ভর্তি সেই রস দিয়ে গুড় তৈরি করা হচ্ছে। এখানে দুই প্রকার গুড় তৈরি করা হয়। একটি স্থনীয় ভাষায় ঢিকা গুড় ও লালি গুড় যেটিকে ঝোলা গুড় বলা হয়।

শীত বৃদ্ধি হওয়ায় গাছ থেকে রস বেশি বের হচ্ছে। বর্তামানে সাতশ গাছ থেকে দিনে ২ হাজার লিটার রস বের হচ্ছে। শীত আরও বাড়লে এই বাগান থেকে দিনে ৩ হাজার লিটার রস সংগ্রহের আশা করছেন।

তিনি বলেন, এখানে নির্ভেজাল গুড় তৈরি করা হচ্ছে। তাই এখান থেকে প্রচুর মানুষ রস ও গুড় কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এখানে ভোর রাত থেকে সারা দিনে অনেক মানুষের ভিড় হয়। মানুষের এমন ভিড় দেখে আমাদের অনেক ভালো লাগে। আমরা আনন্দিত।

লিজ নেয়া ব্যক্তি মনিরুজ্জামান মনির বলেন, গুড়ে কোনো প্রকার ভেজাল দেয়া হয় না। এখন শীত বাড়ছে তাই গুড় উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। ভালো টাকা আয় হচ্ছে এখান থেকে।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মো. সামসুজ্জামান বলেন, নারগুণ এলাকায় প্রতি বছরের মতো এবারো খেজুরের রস থেকে গুড় তৈরি করা হচ্ছে। তবে গুড়ে যেন ভেজাল মেশাতে না পারে সে বিষয়েও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে বলে জানান প্রশাসনের এই কর্মকর্তা।

বাগান লিজ নেয়া ব্যক্তির তথ্যমতে, ছয় শতাধিক খেজুর গাছের রস থেকে প্রতিদিন ১২০ কেজি গুড় উৎপাদন করছেন। আর প্রতি কেজি গুড় বিক্রি করছেন ২৫০ টাকায়।

বর্তমানে এই খেঁজুর বাগানটি দর্শনীয় জায়গায় পরিণত হচ্ছে। এটিকে বিকশিত করার জন্য উপজেলা প্রশাসনের সর্বোচ্চ সহযোগিতা থাকবে বলে জানিয়েছেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু তাহের মোঃ সামসুজ্জামান।

কেএস 

Link copied!