Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪,

‘ঈদে জামা ক্রয়ের সামর্থ্য নাই , বলে শার্টটা ফ্রী নিয়ে যাবেন’

জাজিরা (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি

জাজিরা (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি

এপ্রিল ১৫, ২০২৩, ০৪:৫০ পিএম


‘ঈদে জামা ক্রয়ের সামর্থ্য নাই , বলে শার্টটা ফ্রী নিয়ে যাবেন’

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় ব্যাংক মোড় এলাকায় ইয়াং ফ্যাশন শপ নামের একটি ছোট কাপড়ের দোকানের মালিক জাজিরা পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সজীব মোল্লা। ঈদুল ফিতরে জামা কেনার সামর্থ্য না থাকা মানুষদের বিনামূল্যে জামা দেওয়ার মতো ব্যতিক্রমী সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রেখেছে দোকানের সামনে। 

এই বছর প্রথম রমজান (২২ই মার্চ) থেকেই তার দোকানের সামনে ঝুলতে দেখা যাচ্ছে এই সাইনবোর্ড। এরমধ্যে মোট ৮টি শার্ট ও ৪টি প্যান্ট উপহার দিয়েছেন এই খুদে ব্যবসায়ী সজিব। তার এই ব্যতিক্রমী চিন্তা দরিদ্র পরিবারগুলোতে কিছুটা হলেও ঈদের আনন্দ বাড়িয়ে দিবে বলে মনে করছেন আশপাশের দোকানিরা।

জানা গেছে, সজিব তার এই ছোট্ট দোকানটিতে প্রায়ই নানা রকম ভিন্ন আয়োজন রাখেন দরিদ্রদের জন্য। গত শীতেও তার দোকান থেকে অতি দরিদ্রদের বিনামূল্য শীতের পোশাক বিতরণ করা হয়।

এ বিষয়ে সজিব মোল্লার সাথে কথা বললে তিনি বলেন,আমাদের সমাজে এক এক শ্রেণীর মধ্যবয়সী বাবা আছেন, যারা তার নিম্ন আয়ের পরিবারে সবার মন রক্ষার্থে পরিবারের সকল সদস্যদের ঈদে পোশাক কিনে দিলেও নিজের পোশাক কেনার কথা ভুলে যায় অথবা সুযোগ হয়না।

আমার টার্গেট সেই ধরনের বঞ্চিত বাবাদের মাঝে নতুন পোশাক দিয়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করা। তবে দু:খ বশত এখনো পর্যন্ত এমন একজন বাবা ও আমার কাছে আসেনি। এদের মূল সমস্যা এরা না পারে নিজের শখ পূরণ করতে না পারে আমাদের কারো কাছে হাত পাততে। 

তাও আমি মনে করি এমন একজনকে সহযোগিতা করতে পারলেও আমার এই উদ্যোগ সফল হবে। ইতিমধ্যে আমি যাদের দিয়েছি তারা সবাই অতিদরিদ্র। ২৭ রমজান পর্যন্ত আমার চিন্তা আরও ১০-১৫ টি পোশাক বিতরণ করব।

 

পোশাক বিতরণের সময় তার অনুভূতির কথা জানতে চাইলে সজিব জানায়, যখন কেউ আমার দেয়া ছোট্ট উপহারটি নিয়ে গায়ে দিয়ে দেখে তার মানিয়েছে কিনা তখন তার চোখে আমি যে খুশি দেখতে পাই তা কোটি টাকা দিয়েও কেনা সম্ভবনা। অনেকে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে দোয়া করে যায় তখন মনটা তৃপ্তিতে ভরে যায়।

এবিষয়ে সমাজকর্মী জামাল মাদবর বলেন, সজিবের এই উদ্যোগ আসলেই প্রশংসনীয়। আমরা ২০১৬ সাল থেকেই নানা সময়ে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে জাজিরায় দরিদ্রদের মাঝে ইফতারি ও নানা রকম সাহায্য সহযোগীতা করে আসছি। সজিব আমাদের ই একজন সহকর্মী। সংগঠনের বাইরেও সজিবের মত অনেক তরুন নিজ নিজ জায়গা থেকে এই ধরণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখছে। 

আসলে ঈদে নতুন পোশাক পড়ার ইচ্ছেটা সবার মাঝেই থাকে, হয়তো কেউ কিনতে পারে আর সামর্থহীনরা পারেনা। প্রত্যেকটা কাপড় ব্যবসায়ী যদি নিজ নিজ জায়গা থেকে এমন করে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে হয়তো প্রতিটি পরিবারে ঈদের আনন্দ কয়েক গুণ বেড়ে যাবে।

এমএইচআর
 

Link copied!