ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

বন্ধই হয়ে গেল বিশ্বের একমাত্র ফাইলেরিয়া হাসপাতাল

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি

জুন ৭, ২০২৩, ০১:০০ পিএম

বন্ধই হয়ে গেল বিশ্বের একমাত্র ফাইলেরিয়া হাসপাতাল

গাদ রোগের চিকিৎসায় প্রতিষ্ঠিত নীলফামারীর সৈয়দপুরে ‘বিশ্বের একমাত্র ফাইলেরিয়া হাসপাতালের’ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ৯ মাস ধরে বেতন-ভাতা বন্ধ। বিল বাকি থাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। নানা সমস্যা নিয়ে ধুঁকে ধুঁকে চলছিল হাসপাতালটি। এবার চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। গত ৮ মে দুপুরে হাসপাতালটি বন্ধ ঘোষণা করেন হাসপাতালের অস্থায়ী আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মান্না চক্রবর্তী।

হাসপাতালের স্টাফদের অভিযোগ, পরিচালনা কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জামানতের টাকা আত্মসাৎ, বিদেশি সাহায্য বন্ধ হওয়াসহ নানা কারণে বিশেষায়িত এ হাসপাতালটির এমন অবস্থা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে এ অঞ্চলের প্রায় এক হাজার গোদ রোগী ঝুঁকির মুখে পড়েছেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, দেশের উত্তরাঞ্চলের নীলফামারী জেলাসহ ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধায় ফাইলেরিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি। এ রোগের চিকিৎসার জন্য ২০০২ সালে জাপান সরকারের অর্থায়নে উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের ধলাগাছ এলাকায় যাত্রা শুরু করে ফাইলেরিয়া হাসপাতালটি। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল ইম্যুনোলজি (আইএসিআইবি) হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠার দায়িত্বে ছিল।

হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও প্রকল্প পরিচালক ডা. মোয়াজ্জেম হোসেন ওই সময় স্থানীয়ভাবে ১৮ জন দেশি-বিদেশি চিকিৎসককে নিয়ে কার্যক্রম শুরু করেন। জাপান, কানাডা ও বাংলাদেশ সরকারের আর্থিক সহায়তায় দুটি বহুতল ভবন নিয়ে হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হয়। জাপান ও অন্যান্য দেশ থেকেও গবেষণাকর্মীরা আসেন এখানে।

তবে ২০১২ সালে হাসপাতালটিকে ঘিরে স্থানীয়ভাবে সংকট সৃষ্টি হয়। পরিচালনা কমিটির দ্বন্দ্বে ভেঙে পড়ে সেবা কার্যক্রম। মুখ ফিরিয়ে নেয় দাতা সংস্থাগুলো। এর পর থেকে ধুঁকে ধুঁকে চলতে থাকে এ হাসপাতাল।

সূত্রটি আরও জানায়, ২০২১ সালের ৩ অক্টোবর সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে টোকেন মূল্যে চিকিৎসা দেওয়ার প্রত্যয়ে সৈয়দপুর ফাইলেরিয়া জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ল্যাব নামে নতুন করে যাত্রা শুরু করে হাসপাতালটি। যুক্তরাজ্যভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা লেপরা বাংলাদেশের সঙ্গে বাংলাদেশ প্যারামেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবাবিষয়ক সব ধরনের সহযোগিতা করবে লেপরা বাংলাদেশ। বাংলাদেশ প্যারামেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব রাকিবুল ইসলাম তুহিন পরিচালকের দায়িত্ব নেন। এরপর বিভিন্ন জেলা থেকে নতুন করে প্রায় ৩৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রত্যেকের কাছে ফেরতযোগ্য জামানতের কথা বলে নেওয়া হয়েছে ৫০ হাজার থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত। এভাবে প্রায় ৫০ লাখ টাকা নিয়ে গা-ঢাকা দেন পরিচালক। এর পর থেকে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। জামানতের টাকা ও বেতন পরিশোধের দাবি জানালে বিভিন্ন অজুহাত দেওয়া হচ্ছে।

হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, তাঁদের কাছ থেকে ফেরতযোগ্য জামানতের কথা বলে ৫০ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক। ৯ মাস ধরে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। বকেয়া বেতনের দাবিতে সম্প্রতি কর্মবিরতি পালন করেছেন। বেতনের অপেক্ষায় থাকতে থাকতে অনেকে চলে গেছেন। পরিচালনা কমিটির সদস্যরাও এখন আর হাসপাতালে যান না। বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়ায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে নেসকো। রোগী বহনের অ্যাম্বুলেন্সটি পরিচালনা কমিটির এক সদস্য ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন। সম্প্রতি অর্থ নিয়ে দ্বন্দ্বে পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও হাসপাতালের সমন্বয়কারী পদত্যাগ করেছেন। দৈনিক আয়ের অর্থ প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের পরিবর্তে জমা হয়েছে পরিচালকের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবে।

তাঁরা আরও বলেন, হাসপাতালের অস্থায়ী আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মান্না চক্রবর্তী গত ৮ মে দুপুরে হাসপাতালটি বন্ধ করে হাসপাতাল ত্যাগ করেন। 

ডা. মান্না চক্রবর্তীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন থেকে হাসপাতালের চিকিৎসকসহ কর্মচারীদের বেতন বন্ধ। হাসপাতালে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন, প্রয়োজনীয় জনবল ও আসবাবপত্রের অভাব, অপারেশন থিয়েটারসহ অন্যান্য বিভাগের যন্ত্রপাতি এখনো বুঝে পাইনি। কিছু কর্মকর্তা, কর্মচারীদের অনধিকার চর্চা, পেশিশক্তির ব্যবহার এবং আরএমও ও তাঁর অধীন কর্মচারীদের লাঞ্ছিত করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই পরিচালককে চিঠি দিয়ে হাসপাতাল বন্ধ করার সুপারিশ করেছি।’

হাসপাতালের প্রধান হিসাবরক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান মিলন বলেন, ‘কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা আগে হাসপাতালের আয় থেকে পরিশোধ করা হতো। তবে এক বছর ধরে আয়ের টাকা পরিচালক ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবে জমা করছেন। বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে বেতন-ভাতা দিচ্ছেন না। আমরা বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেছি। এরপরও কর্তৃপক্ষ কোনো কর্ণপাত করছেন না।’

এ বিষয়ে কথা বলতে হাসপাতালের পরিচালক রাকিবুল ইসলাম তুহিনের ফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এআরএস

Link copied!