Amar Sangbad
ঢাকা রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪,

ফেনীর যুবলীগ নেতা বেন্ডু হাজারী হত্যার বিচার হয়নি ২৭ বছরেও

ফেনী প্রতিনিধি

ফেনী প্রতিনিধি

জুন ১৭, ২০২৩, ০৫:০০ পিএম


ফেনীর যুবলীগ নেতা বেন্ডু হাজারী হত্যার বিচার হয়নি ২৭ বছরেও

ফেনী জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন বেন্ডু হাজারী হত্যার বিচার হয়নি ২৭ বছরেও। সাক্ষ্য প্রদান সংক্রান্ত জটিলতায় এ হত্যা মামলার নিষ্পত্তি করা যাচ্ছে না।

জেলার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ মো. কায়সার মোশারফ ইউসূফের আদালতে মামলাটি চলমান রয়েছে। এত বছরেও বিচার না পেয়ে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৬ সালের ৬ জুন জাতীয় নির্বাচনের দু’দিন আগে ফেনী সদর উপজেলার ধলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়সংলগ্ন সড়কের দক্ষিণ পাশে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারণায় বেন্ডু হাজারীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।

পরে তাকে উদ্ধার করে ফেনী সদর হাসপাতাল ও পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই বছরের ১৫ জুন তিনি মারা যান।

এ ঘটনায় তার ভাই মীর হোসেন হাজারী বাদী হয়ে ফেনী থানায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এ মামলায় বিভিন্ন পর্যায়ে এসআই অরুণ কুমার চন্দ্র, পরিদর্শক মোস্তাক আহমেদ ও কামরুল হাসান মামলার তদন্ত করেন। ১৯৯৭ সালের ২৬ এপ্রিল পরিদর্শক কামরুল হাসান ২৬ জনকে আসামি করে ফেনীর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

১৯৯৮ সালের ১৯ আগস্ট এ মামলায় অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। ১৯৯৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর মামলার প্রথম সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

আদালত সূত্রে জানা যায়, আলোচিত এ মামলায় ১৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৪ জন সাক্ষ্য প্রদান করেন। মামলার তিন তদন্তকারী কর্মকর্তার মধ্যে পুলিশ পরিদর্শক মোস্তাক আহমেদ সাক্ষ্য দিলেও কামরুল হাসান ও এসআই অরুণ কুমার চন্দ্র এখনও সাক্ষ্য দেননি।

সর্বশেষ ২০০৮ সালের ২৪ মার্চ এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। এর পর থেকে দুই পুলিশ কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য বার বার মামলার তারিখ নির্ধারণ করা হচ্ছে। কিন্তু সাক্ষীরা আসছেন না। বর্তমানে পুলিশ পরিদর্শক কামরুল হাসান ও এসআই অরুণ কুমার চন্দ্রের সাক্ষ্যের জন্য মামলার নিষ্পত্তি হচ্ছে না।

সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানায়, আলোচিত এ মামলায় ২৬ জন আসামি অভিযুক্ত রয়েছেন। তন্মধ্যে শহীদুল্লাহ ওরফে কানা শহীদ কারাগারে রয়েছেন। বাকি ৯ জন জামিনে ও ১৩ জন পলাতক রয়েছেন। মামলার তিনজন আসামি মারা গেছেন।

নিহতের স্ত্রী স্কুল শিক্ষিকা হাসনা আক্তার বানু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দলের জন্য জীবন দিয়েছেন আমার স্বামী। আমার সন্তানরা বাবার আদর বঞ্চিত হয়ে বেড়ে উঠেছে। বছরের পর বছর স্বামীর হত্যাকারীদের বিচারের জন্য দৌড়েছি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও দু’বার দেখা করেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত স্বামী হত্যার বিচার পাইনি। এখন আর পারছি না। তাই বিচারের বিষয়টি ভাগ্যের উপর ছেড়ে দিয়েছি।  

নিহতের বড় ছেলে ফেনী সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এসআই বিপ্লব হাজারী বলেন, আমার বাবা দু’বার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থাকার সময় তাঁকে হত্যা করা হয়।

দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ টানা রাষ্ট্র ক্ষমতায়। তারপরও আমার বাবার হত্যার বিচার হয়নি। আমরা বেন্ডু হাজারীর হতভাগা সন্তান।নিজের দল ক্ষমতায় থাকার পরও আমরা পিতা হত্যার বিচার পাচ্ছি না।এর থেকে দূর্ভাগ্যের আর কি হতে পারে?

আরএস

 

Link copied!