Amar Sangbad
ঢাকা রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪,

সাধারণ মানুষের আস্থা-বিশ্বাসের প্রতীক বাহাউদ্দিন নাছিম

জাহিদ হাসান ও রাজু আহমেদ, কালকিনি (মাদারীপুর)

জাহিদ হাসান ও রাজু আহমেদ, কালকিনি (মাদারীপুর)

জুলাই ১৭, ২০২৩, ১২:৪৭ এএম


সাধারণ মানুষের আস্থা-বিশ্বাসের প্রতীক বাহাউদ্দিন নাছিম

সংসদ সদস্য নন; বরং কেন্দ্রীয় পদে থেকেই নিজ এলাকার সাধারণ মানুষের সেবায় নিরলস-নিরবচ্ছিন্ন কাজ করে যাচ্ছেন কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। স্থানীয়রা বলছেন, সময়-অসময় নেই, যখন-তখন তার কাছ থেকে নিঃসঙ্কোচে যেকোনো সেবা পাচ্ছেন কালকিনি-ডাসার ও সদর আসনের বাসিন্দারা। স্থানীয় মসজিদ-মাদ্রাসা, মন্দির-মক্তবসহ সর্বত্রই দিয়ে আসছেন নিঃস্বার্থ সেবা-সহযোগিতা। নেতা হিসেবে নয়, গরিব-অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন বন্ধু কিংবা অভিভাবকরূপে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে মেশার অসাধারণ গুণাবলি রয়েছে তার। 

এ কারণে যে কেউই নির্ভয়ে রাস্তায় তার চলমান গাড়ির সামনে দাঁড়িয়েও যাচ্ছেন হাত উঁচিয়ে। নিজের কষ্ট কিংবা সমস্যার কথা জানিয়ে তাৎক্ষণিক পাচ্ছেন সহযোগিতাও। সাহায্যপ্রত্যাশী কেউ ফিরেছেন খালি হাতে— এমন নজির নেই। বরং সাধারণভাবেই সাধারণের সাথে মিশে সহযোগিতার অসংখ্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি। যার চাউর হচ্ছে কালকিনি-ডাসার কিংবা সদর আসনের বাসিন্দাদের মুখেই। স্থানীয়রা বলছেন, সাধারণ মানুষের সঙ্গে তার আত্মিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। কেউ চাইলেও সে সম্পর্কের চির ধরানো কঠিন। তারা বলছেন, সাধারণ মানুষের সেবা করতে এমপি হওয়া লাগে না, এমন কথার যথার্থতাও ইতোমধ্যে প্রমাণ করেছেন তৃণমূল থেকে ধাপে ধাপে উঠে আসা কর্মী ও জনবান্ধব এই রাজনীতিবিদ। 

আগামী দ্বাদশ নির্বাচনে জনবান্ধব এই নেতাকেই আওয়ামী লীগ নমিনেশন দেবে দল— এমন স্বপ্নই দেখছেন কালকিনি-ডাসার ও সদর আসনের সাধারণ মানুষ। শুধু তাই নয়, একই স্বপ্ন দেখছেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরাও। তারা বলছেন, রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকেই যিনি দলীয় নীতি-আদর্শের প্রশ্নে কখনোই ছাড় দেননি এমনকী কর্মীদের স্বার্থ সংরক্ষণেও স্পষ্টবাদী— এমন নেতাকে ঘিরেই স্বপ্ন দেখছেন তারাও। এ ছাড়াও কর্মীদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক নিবিড় যোগাযোগও রাখছেন— এমন নেতাকেই তারা দলীয় প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান। আর এসব গুণাবলিসম্পন্ন স্বচ্ছ নেতা হিসেবে তাদের প্রথম পছন্দ বাহাউদ্দিন নাছিম। সূত্র বলছে, দ্বাদশ নির্বাচনে কালকিনি কিংবা সদর আসন থেকে নমিনেশনও চাইবেন তিনি।

মাদারীপুর সদর আসনের বাসিন্দারা বলছেন, ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সচিব-এপিএস থাকাকালে তিনি বিভিন্ন রাস্তাঘাট-কালভার্ট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বহুমুখী উন্নয়নকাজ করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালে মাদারীপুর ধান গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করেন। রাজৈরে করেছেন শেখ রাসেল কলেজ। সদরে তিনি তার বাসভবনের পাশেই প্রথমে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পরে আরেকটি হাইস্কুল এমপিওভুক্ত করেন। স্থানীয়রা জানান, তার ভাই মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদের মাধ্যমেও তিনি মাদারীপুর শহরের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করেছেন। এর মধ্যে মাদারীপুর লেক, বাস টার্মিনাল অন্যতম। একটি ল’ কলেজও করেছেন, যেটির জমিও কিনে দিয়েছিলেন তিনি।

দলীয় একটি সূত্র বলছে, রাজনীতিতে তারকা হিসেবে যেমন, তেমনি শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত সহযোদ্ধা হিসেবেই অধিক পরিচিত তিনি। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে যখন প্রতিকূল পরিস্থিতিতে দেশে ফেরেন, তখন তার সুরক্ষার জন্য চারপাশে বিশ্বস্ত ও আস্থাভাজন যেসব কর্মীরা ছিলেন তাদের অন্যতমও তিনি। আর এ কারণেই তিনি আওয়ামী লীগের কোন পর্যায়ের নেতা বা কোন পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন তার চেয়েও শেখ হাসিনার নিজস্ব লোক, নিজস্ব কর্মী ও নিকটতম সহযোদ্ধা হিসেবেই সমধিক পরিচিতি লাভ করেছেন। ’৮১ পরবর্তী সময়ে শেখ হাসিনার এমন অসংখ্য সহযোদ্ধার নানা রকম উত্থান-পতন হয়েছে। অনেকেই ছিটকে পড়েছেন, কেউ বেশি দিন থাকতে পারেননি। কিন্তু যে কজন সহযোদ্ধা এখনো নদীর চিরায়ত স্র্রোতের মতো বহমান রয়েছেন তাদের অন্যতম একজন বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ। শুরু থেকেই ত্যাগ, আদর্শ আর নেত্রীর (শেখ হাসিনা) সঙ্গে বিদ্যমান সম্পর্কে দিনে দিনে তিনি হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিশ্বাস ও আস্থার প্রতীক। 

১৯৯৬ সালে দীর্ঘ ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হন। এই সময়ে বাহাউদ্দিন নাছিম তার সহকারী একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সভাপতি চারবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, কিন্তু বাহাউদ্দিন নাসিমকে তিনি ভুলেননি। ওই সময়ে রাজনৈতিক কর্মীরা যেভাবে গণভবনে যেতে পারতেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ করতে পারতেন, তার সঙ্গে তাদের সমস্যার কথা বলতে পারতেন, তা এখনো রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মুখে মুখে। তিনি সবাইকে সময় দিতেন। সবার সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করতেন। রাজনৈতিক নেতা ও কর্মীদের জন্য তার দরজা সবসময় খোলা ছিল, এখনো তার ধারাবাহিকতা তিনি বজায় রেখেছেন। এরপর ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের তাণ্ডব শুরু হয় সারা দেশে। ওই তাণ্ডবে আওয়ামী লীগের যে সমস্ত বিশ্বস্ত এবং আস্থাভাজন নেতা বিএনপি-জামায়াতের নির্মমতার শিকার হন তাদের মধ্যেও তিনি অন্যতম। সে সময় তাকে অমানবিকভাবে নির্যাতন করা হয়। যে পৈচাশিকতা তার সঙ্গে দেখিয়েছিল বিএনপি-জামায়াত জোট, তা গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ইতিহাসে শুধু নিন্দনীয়ই নয়, গর্হিতও বটে। 

২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ কর্মী এবং শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত সহযোগী হিসেবেই নিজেকে বিকশিত করেছেন তিনি। এর মধ্যে তিনি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন, এমপি হয়েছেন, এখন তিনি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এসব পরিচয়ের চেয়েও তার সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি দলীয় বিশ্বস্ততা ও আস্থার প্রতীক। শেখ হাসিনার যেকোনো সংকট কিংবা দুঃসময়ে যারা পাশে থাকবে বলে নিশ্চিত আস্থা রাখা যায়, তাদের মধ্যে তিনি অন্যতম। রাজনৈতিক প্রাপ্তি নিয়ে না ভাবা বাহাউদ্দিন নাছিম শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত কর্মীর পরিচয়েই নিজেকে পরিচিত করতে চান। তারই ধারাবাহিকতায় যখন রাজনীতিকে গ্রাস করছে রাজনৈতিক অবিশ্বাস, সিন্ডিকেট, দুর্বৃত্তায়ন, দুর্নীতি, ঠিক ওই মুহূর্তেই তার মতো রাজনৈতিক আদর্শে বিশ্বাসী রাজনীতিবিদের রাজনীতিতে আরো বেশি প্রয়োজন বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। দলীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, আওয়ামী লীগের দুটি গুরুত্বপূর্ণ ও অত্যন্ত ক্ষমতাবান বোর্ডের একটি স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ড। বাহাউদ্দিন নাছিমকে স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডেরও সদস্য করা হয়েছে একমাত্র আস্থা ও বিশ্বস্থতার কারণেই।

উল্লেখ্য, বাহাউদ্দিন নাছিম ১৯৬১ সালের ১১ নভেম্বর মাদারীপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মাদারীপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগেরও সদস্য ছিলেন। তিনি স্বেচ্ছাসেবক লীগেরও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করলে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির তিনবার সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা বাহাউদ্দিন নাছিম এখন দ্বিতীয়বারের মতো যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
 

Link copied!