ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

পদ্মা সেতু দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলে ছুটবে ট্রেন, উচ্ছ্বসিত সর্বস্তরের মানুষ

এন কে বি নয়ন, ফরিদপুর

এন কে বি নয়ন, ফরিদপুর

অক্টোবর ৭, ২০২৩, ১২:১৫ পিএম

পদ্মা সেতু দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলে ছুটবে ট্রেন, উচ্ছ্বসিত সর্বস্তরের মানুষ

স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালুর পর এবার পদ্মা সেতু দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলে ছুটবে দ্রুতগামী ট্রেন। সড়কপথে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগের উন্নয়ন যাত্রার সঙ্গে এবার যোগ হতে যাচ্ছে নতুন মাত্রা।

এর ফলে রেলপথে সারাদেশের সঙ্গে যুক্ত হবে ফরিদপুরসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আরও বেশ কয়েকটি জেলা। এদিকে, ট্রেন চালুর দিন-ক্ষণ যতোই এগিয়ে আসছে ততই যেনো এই জনপদের মানুষের কানে বাজছে ট্রেনের হুঁইসেল আর ঝকঝকা ঝক শব্দ। আনন্দিত-উচ্ছ্বসিত দক্ষিণ অঞ্চল তথা ফরিদপুরের সর্বস্তরের মানুষ।

জানা যায়, গত বছরের জুনে পদ্মা সেতু চালুর এক বছর দুই মাস পর আসছে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। আগামী ১০ অক্টোবর ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে ট্রেন চলাচল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই দিন নতুন এ রেলপথের উদ্বোধন করবেন। ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৮২ কিলোমিটার রেলপথ চালু হচ্ছে। আগামী বছর জুনে যশোর পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ার কথা।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাগেছে,পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের আওতায় ২০১৯ সালে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত রেললাইন প্রকল্পের প্রায় ১৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেলপথ নির্মাণের কাজ শুরু করে বাংলাদেশে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। পদ্মা সেতুর রেললিংক ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করবে প্রকল্পের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (সিআরইসি)।

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিল মোঃ এনায়েত হোসেন বলেন, পদ্মা সেতু আমাদের স্বপ্ন পুরণ করেছে। জীবনযাত্রার মানসহ নানা দিক দিয়ে অনেক পরিবর্তন এনে দিয়েছে। ভোগান্তি শেষ হয়েছে। কয়েকদিন পরেই রেল চলবে এমন খবর ঢাকা যাওয়ার পথে ভাঙ্গায় যাত্রাবিরতি করে ঘুরে দেখলাম। অনেক আনন্দ লাগছে। গর্ব লাগছে।

বোয়ালমারীর শাহজাফর টেকনিক্যাল এন্ড বিএম কলেজের অধ্যক্ষ লিয়াকত হোসেন লিটন বলেন,পদ্মা সেতুর চালুর সুফল পাচ্ছে দক্ষিণ অঞ্চল তথা ফরিদপুরের মানুষ। তবে সড়কপথে বাসে ঢাকায় যেতে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা ভাড়া লাগে। সেখানে ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় ঢাকায় নিরাপদে যাওয়া যাবে। এটি সব শ্রেণির যাত্রীর ক্ষেত্রেই বড় প্রভাব ফেলবে। সর্বস্তরের মানুষ নিরাপদ ও সাশ্রয়ী যোগাযোগ সুবিধার পাশাপাশি সকল ক্ষেত্রে লাভবান হবে।

মধুখালী উপজেলার বাসিন্দা ও সানভ্যালী পার্ক এ্যান্ড রেস্টুরেন্টের পরিচালক প্রিন্স মাহমুদ উজ্জ্বল বলেন, এলাকায় ও ঢাকায় ব্যাবসা-বাণিজ্য রয়েছে। ফরিদপুর-মধুখালী-ঢাকায় সপ্তাহে দুই তিনবার যাতায়াত করতে পারসোনাল প্রাইভেটকার ব্যাবহার করা হয়। পদ্মাসেতু চালুর পর যাতায়াত ব্যাবস্থা খুবই সহজ হয়েছে। দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষের সবক্ষেত্রে জীবনমানের পরিবর্তন হয়েছে। ট্রেন চালুর পর প্রাইভেটকারে আর চড়তে হবেনা। এ অঞ্চলের মানুষের একটি নয় কয়েকটি স্বপ্ন পুরণ হয়েছে।

ফরিদপুর শহরের বাসিন্দা ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতা সঞ্জীব দাস বলেন, এখনই দিনে প্রায় দুইবার ফরিদপুর-ঢাকা যাওয়া আসা যায়। ট্রেন চালুর পর সড়কপথে যাত্রায় আরো সহজতর হবে। ইতিমধ্যে রেল চালুর খবরে অত্র অঞ্চলের মানুষের মাঝে আনন্দের বন্যা বইছে। যেন তর সইছে না।

ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক নিয়াজ জামান সজীব বলেন, স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালুর পর দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষের সবক্ষেত্রে উন্নয়নের ব্যাপক ছোঁয়া লেগেছে। ইতিমধ্যে ট্রেন চালুর খবরে মানুষ নতুন পরিকল্পনার স্বপ্ন বুনছে। এমন খবরে আনন্দিত-উচ্ছ্বসিত সর্বস্তরের মানুষ।

বোয়ালমারী উপজেলা কৃষি অফিসার এস এম রাশেদুল হাসান বলেন,ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, বরিশাল,খুলনা, যশোর, মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর থেকে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার বিভিন্ন ধরনের কাঁচাপণ্য পরিবহনে ভাঙ্গায় আসে। ভোক্তা পর্যায়ে সেই পণ্যই বিক্রি হয় প্রায় দ্বিগুণ দামে। এর পরিবর্তনের পাশাপাশি ব্যাপক সফলতা মিলবে। এতে মানুষ খুশি ও আনন্দিত।

এ ব্যাপারে বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোশারেফ হোসাইন বলেন, পদ্মা সেতুতে ট্রেন চলাচল শুরুর পর সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য বড় সুযোগ। এ অঞ্চলের মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তানরা এখন অর্ধেক ব্যয়েই রাজধানীতে শিক্ষার জন্য যাতায়াত করতে পারবে। এতে ভোগান্তির পাশাপাশি কমবে শিক্ষার খরচ। এ অঞ্চলের মানুষের সবক্ষেত্রেতো বটেই,  ব্যবসা-বাণিজ্যে দ্বিগুণ গতি সঞ্চারিত হবে বলে আশা ব্যবসায়ী মহলের। জিনিসপত্রের দামেও পড়বে ইতিবাচক প্রভাব।

ফরিদপুর রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার তাকবীর হোসেন বলেন, এই রুটে ক’টি ট্রেন চলবে, যাত্রীপ্রতি ভাড়া কত হবে। এখনও আমাদের কাছে কোনো সুস্পষ্ট নির্দেশনা আসেনি। তবে অনুমান অনুযায়ী, ঢাকা-ফরিদপুর জনপ্রতি ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২০০ টাকার মতো ভাড়া হতে পারে। কারণ, ফরিদপুর থেকে রাজশাহী চলাচলকারী মধুমতী এক্সপ্রেসে আড়াইশ কিলোমিটারের ভাড়া ২৫০ টাকা। ঢাকা-ফরিদপুর রেল দূরত্ব ১১০ কিলোমিটার।

এ বিষয়ে এফবিসিসিআইয়ের সহ সভাপতি ও ফরিদপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সিআইপি যশোদা জীবন দেবনাথ বলেন, পদ্মা সেতু চালু একটি স্বপ্ন পুরণের পর ট্রেনচালু, আরেক স্বপ্ন পুরণ হয়েছে। ভাঙ্গার পর যশোর পর্যন্ত রেল যোগাযোগ চালু হলে ট্রেনে এসব পণ্য অল্প খরচে আনতে পারবেন ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া মহাসড়কে যানজট ও বিভিন্ন দুর্ভোগ এড়িয়ে ট্রেনে কম ভাড়ায় এবং সঠিক সময়েই বিভিন্ন পণ্য আনা-নেওয়ার সুফল মিলবে।

এ বিষয়ে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক(ডিসি) মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালুর পর এবার রেল নিয়ে নতুন পরিকল্পনার স্বপ্ন বুনছে।দখিনের মানুষ ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে রেলপথে ঘরে ফিরবে। রেল ভ্রমণ সব সময়ই নিরাপদ ও সাশ্রয়ী। শুধু যাত্রী নন, পণ্য পরিবহনেও ব্যবসায়ীরা ঝুঁকবেন রেলপথে।

তিনি আরও বলেন, ট্রেন চালুর পর সাধারণ যাত্রী, ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থীসহ এই এলাকার সর্বস্তরের মানুষ নিরাপদ ও সাশ্রয়ী যোগাযোগ সুবিধার পাশাপাশি সকল ক্ষেত্রে লাভবান ও সুফল ভোগ করবে। বাঁচবে অর্থ,বাঁচবে সময়। বাড়বে ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিসর।ফলে দক্ষিণ অঞ্চল তথাফরিদপুরের সর্বস্তরের মানুষ আনন্দিত-উচ্ছ্বসিত।

এআরএস

Link copied!