ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad
যশোরের যশ খেজুরের রস

রস সংগ্রহের জন্য গাছ প্রস্তুত করছেন গাছিরা

এম এ মান্নান, চৌগাছা (যশোর)

এম এ মান্নান, চৌগাছা (যশোর)

অক্টোবর ১২, ২০২৩, ০৬:৪০ পিএম

রস সংগ্রহের জন্য গাছ প্রস্তুত করছেন গাছিরা

যশোরের যশ খেজুরের রস। যশোরের চৌগাছায় খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য গাছ প্রস্তুত করার কাজে ব্যস্ত গাছিরা। শীতের আগমন বার্তা ঋতু বৈচিত্রে এখন রাতের শেষে কুয়াশা জানান দিচ্ছে। আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য খেজুর রস সংগ্রহে চৌগাছা উপজেলার মাঠে মাঠে খেজুর রস সংগ্রহের জন্য গাছিরা খেজুর গাছ প্রস্তুত কাজে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গাছি সমাবেশ, খেজুরের গুড়ের মেলা ও প্রায় ৫ লাখ খেজুর গাছা রোপণ করা হয়েছে।

অল্পকদিনের মধ্যে পূবালি বাতাসে চির সবুজের বুকচিরা অপরুপ সৌন্দর্যে সকলের মন মাতিয়ে তুলবে মিষ্টি খেজুর রস ও গুড়ের ঘ্রাণ। কাক ডাকা ভোরে থেকে চলবে রস সংগ্রহ। সন্ধ্যায় চলবে গাছ পরিচর্যার কাজ। চলতি মৌসুমে কিছুটা আগেই উপজেলার প্রান্তিক গাছিরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ জনপদের গ্রামে গ্রামে সকালের শিশিরের সাথে অনুভুত হচ্ছে মৃদু শীত।

বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) সরেজমিনে উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের যাত্রপুর এলাকায় গেলে চোখে পড়ে গাছিরা রস সংগ্রহের জন্য গাছ প্রস্তুত করছেন। এ সময় কথা হয় যাত্রাপুর গ্রামের লেদু মিয়ার ছেলে গাছি আজিজুর রহমান, মসলেম আলীর ছেলে বাবু, মৃত এরশাদ আলীর ছেলে নুর হোসেন নুরো, রমজান আলীর ছেলে  নাজিম উদ্দীন ও আমজেদ হোসেনের ছেলে গাছি গেসু মিয়ার সাথে তারা জানান, আগাম খেজুরের গুড় পেতে শীত মৌসুমের শুরুতেই গাছ প্রস্তুত শুরু করেছি। এ বছর ১টি গাছ প্রস্তুত করতে মুজুরি ১শ টাকা। এক জন দিনে ১৫/১৬টি গাছ প্রস্তুত করতে পারে।

আর মাত্র কয়েক দিন পর রস সংগ্রহ করে রস থেকে গুড় ও পাটালি তৈরি শুরু হবে। চলবে প্রায় ফালগুন মাস পর্যন্ত। খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের প্রস্তুতি উপজলার প্রতিটি গ্রামে চোখে পড়ছে। খেজুর রস ও গুড়ের জন্য চৌগছিার সুনাম/খ্যাতি রয়েছে দেশ জুড়ে। সময়ের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী খেজুর গাছ ও গাছি। একদশক আগেও বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ পতিত জমিতে, ক্ষেতের আইলে, ঝোপ-ঝাড়ের পাশে ও রাস্তার দুই ধার দিয়ে ছিল অসংখ্য খেজুর গাছ।

এখনও শীতকালে শহর থেকে মানুষ দলে দলে ছুটে আসে গ্রাম বাংলার খেজুর রস-গুড় খেতে। এক সময় সন্ধ্যাকালীন সময়ে গ্রামীন পরিবেশটা খেজুর রসে মধুর হয়ে উঠতো। রস আহরণকারী গাছিদের প্রাণচাঞ্চল্য ছিলো চোখে পড়ার মত। গাছির গলাই শুনা যেত “ঠিলে ধুয়েদে বৌ গাছ কাটতে যাবো, খেজুর গাছেচোমর বেরেছে তোরে এনে দেব, সন্ধ্যে রস পেড়ে এনে জাও রেনদে খাবো”। ভোর থেকে শুর করে সারা বেলা যেন গাছিরা মেতে থাকতো  রস জ্বালিয়ে পাতলা ঝোলা, দানা গুড় ও পাটালী তৈরির কাজে। নলেন গুড়ের সাধ ও ঘ্রাণ ছিল স¤পূর্ণ ভিন্ন। নতুন প্রজন্মের কাছে এখন অবশ্যই রূপকথা মনে হবে। যত বেশি শীত পড়বে তত বেশি মিষ্টি রস দেবে খেজুর গাছ।

উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের পেটভরা গ্রামের গাছি আব্দার রহমান বলেন, শীতের পুরো মৌসুমে চলে রস, গুড়, পিঠা, পুলি ও পায়েস খাওয়ার মহা উৎসবা। শহরে থেকে সকলে গ্রামের বাড়ীতে আসে রস-গুড় খেতে। তবে নতুন করে কেউ আর খেজুর গাছ তোলা-কাটার কাজ করতে চাচ্ছে না। তবে খেজুর গাছ আমাদের অর্থনীতি, সংস্কৃতি, সাহিত্য তথা জীবনধারায় মিশে আছে। এই ঐতিহ্যকে যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করতে হবে। একটি খেজুর গাছ ১৫থেকে ২০ বছর পর্যন্ত রস দেয়। এটাই তার বৈশিষ্ট্য। এছাড়া খেজুরর পাতা জ্বালানি কাজেও ব্যাপক ব্যবহার হয়ে থাকে। কিন্তু জয়বায়ু পরিবর্তন, কালের বির্বতনসহ বন বিভাগের নজরদারী না থাকায় বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুর গাছ এখন উপজেলা জুড়ে প্রায় বিলুপ্তির পথে।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুসাব্বির হুসাইন বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলেই খেজুর গাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। গাছিদের খেজুর গাছ কাটার কাজটি শিল্প আর দক্ষতায় ভরা। ডাল কেটে গাছের শুভ্র বুক বের করার মধ্যে রয়েছে কৌশল, রয়েছে ধৈর্য ও অপেক্ষার পালা। এ জন্য মৌসুমে আসার সাথে সাথে দক্ষ গাছিদের কদর বাড়ে। আমরা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের গাছিদের এ পেশায় টিকে থাকার জন্য প্রশিক্ষণ, উঠান বৈঠক, সমাবেশ করেছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা বলেন, যশোরের যশ খেজুরের রস এ আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যরক্ষা করতে উপজেলার বিভিন্ন সড়কের দু ধারে খেজুর গাছের চারা রোপন করেছি। এ পেশার সঙ্গে জড়িত গাছিদের নিয়ে সমাবেশ করে তাদেরকে উৎসহ দিয়ে যাচ্ছি। চলতি বছরের ১৫ ও ১৬ জানুয়ারী দুইদিন ব্যাপী উপজেলা চত্বরে খেজুর গুড়ের মেলাও করা হয়। এ মৌসুমেও মেলা করা হবে। 
এআরএস

Link copied!