Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪,

চট্টগ্রাম খাদ্য বিভাগ

টেন্ডার ছাড়াই পরিবহন ঠিকাদার নিয়োগের চেষ্টা

মামুনুর রশিদ, চট্টগ্রাম ব্যুরো

মামুনুর রশিদ, চট্টগ্রাম ব্যুরো

নভেম্বর ২৩, ২০২৩, ০৫:৫৬ পিএম


টেন্ডার ছাড়াই পরিবহন ঠিকাদার নিয়োগের চেষ্টা

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে টেন্ডার ছাড়া পরিবহন ঠিকাদার নিয়োগের পাঁয়তারার অভিযোগ উঠেছে। 

খাদ্য বিভাগ সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের আওতাধীন বিভাগীয় সড়ক পরিবহন ঠিকাদারদের মেয়াদ শেষ হয় তিন বছর আগে—২০২০ সালের ডিসেম্বরে। এই দপ্তরে ৪৬৯টি প্রতিষ্ঠান পরিবহন ঠিকাদার হিসেবে তালিকাভুক্ত রয়েছে। ২০২০ সাল থেকে এতদিন অনিবার্য কারণ দেখিয়ে খাদ্য পরিবহন ডিআরটিসি ঠিকাদারদের তিন মাস অন্তর মেয়াদ বাড়ান চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক। এবার দরপত্র ছাড়াই আবারও ১৬ শতাংশ দর বাড়িয়ে আগের ঠিকাদারকে পুনরায় নিয়োগ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর থেকে ২ নভেম্বর জারি করা বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা যায়, বর্তমান ঠিকাদারদের ২৬ নভেম্বর বেলা ১টার মধ্যে আবেদন করতে বলা হয়েছে। ২০২২-২০২৩ সালে ৭৫ শতাংশ কাজের সন্তোষজনক ভিত্তিতেই নিয়োগ দেওয়া হবে এবং বর্তমান দরের ওপর ভিত্তি করে ১৬ দশমিক ৯২ শতাংশ দর বাড়ানো হবে।

ডিআরটিসি সূত্রে জানা গেছে, প্রতি দুই বছর অন্তর দরপত্র আহ্বান করে নতুন পরিবহন ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে এরপরও ২০২০ সালে মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া ঠিকাদারদের বারবার সময় বাড়িয়ে কাজ দেওয়া হচ্ছে। সর্বশেষ তাঁদের মেয়াদ চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়েছে খাদ্য বিভাগ।

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. এস এম কাইছার আলীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি।

সহকারী উপ-পরিচালক দোলন দেব আমার সংবাদকে বলেন, ‘নিয়মের বাইরে কিছু হচ্ছেনা। তারা (পরিবহন ঠিকাদার) মন্ত্রণালয় থেকে একটি অর্ডারের মাধ্যমে  করে যাচ্ছেন এবং আমরাও মন্ত্রণালয় নির্দেশে করে যাচ্ছি।’

এদিকে বিভাগীয় খাদ্য পরিবহন ঠিকাদার নিয়োগ না হওয়ায় পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের খাদ্য নিয়ন্ত্রকের আওতাধীন অভ্যন্তরীণ সড়ক পরিবহন ঠিকাদার নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা যাচ্ছে না।

খাদ্য বিভাগ সূত্র জানায়, বর্তমানে চট্টগ্রাম বিভাগীয় খাদ্য পরিবহন ঠিকাদার হিসেবে ৪৬৯টি প্রতিষ্ঠান তালিকাভুক্ত রয়েছে। একটি সূত্র জানায়, এসব ঠিকাদারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় পরিবহন না করে সরকারি চাল চুরি করে বাইরে বিক্রিতে সহায়তার অভিযোগ রয়েছে। গত ২৮ জুন চট্টগ্রাম ডিআরটিসির নিবন্ধিত খাদ্য পরিবহন ঠিকাদার মেসার্স হারুন এন্টারপ্রাইজকে একটি ট্রাকে ১৫ টন (৩০৩ বস্তা) চাল রাঙামাটির সদর গুদামের জন্য পাঠানো হয়। কিন্তু চাক্তাই আড়তে চুরি করে বিক্রির সময় পুলিশের হাতে আটক হয় সেই ট্রাক। এ ছাড়া গত বছর চট্টগ্রাম বন্দর থেকে নোয়াখালীর চরবাটা গুদামে চাল পাঠানো হলে সংশ্লিষ্ট পরিবহন ঠিকাদার এসব চাল পাহাড়তলি বাজারে পাচারের সময় পুলিশের হাতে ধরা পড়েন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চট্টগ্রাম বিভাগের সরকারি খাদ্যশস্য পরিবহনের কাজে নিয়োজিত ৪৫টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় নগরীর আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকার এক ঠিকানায়।

খাদ্য বিভাগের (চট্টগ্রাম অঞ্চলের চলাচল ও সংরক্ষক) নিয়ন্ত্রক জ্ঞানপ্রিয় বিদুর্শী বলেন, ঠিকাদারদের তিন মাস অন্তর মেয়াদ বাড়ানো হয়। ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ রয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় সড়ক পরিবহন ঠিকাদার (ডিআরটিসি) সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল হাই। তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক যেহেতু ২০২০ সালে ঠিকাদারদের মেয়াদ শেষ হয়েছে, তাই অন্তবর্তীকালের জন্য বর্তমান ঠিকাদারদের নিয়োগ দিতে এই উদ্যোগ। এই উদ্যোগে বর্তমানের চেয়ে ১৬ শতাংশ দর বাড়ানো হবে। এই লক্ষ্যে দরপত্র আহ্বানের পরিবর্তে পরিবহন ঠিকাদারদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। এই চিঠির মাধ্যমেই নিয়োগ করা হবে পরিবহন ঠিকাদার।

এআরএস

Link copied!