ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

ডাক্তার হতে চেয়েছিল মা-ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ হারানো জুবায়ের

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

এপ্রিল ৫, ২০২৪, ০৬:৪৯ পিএম

ডাক্তার হতে চেয়েছিল মা-ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ হারানো জুবায়ের

ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করার স্বপ্ন ছিল চলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দেওয়া মা-ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ হারানো (১৮) বছর বয়সী জুবায়ের রহমান জামিলের।  

ছোটবেলা থেকেই সে ভালোবাসতো মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে। সুযোগ পেলেই পাশে দাঁড়াত বিপন্ন মানুষের। তাই বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনে সর্বদা সক্রিয় ভূমিকা ছিল জুবায়েরের।

বুধবার দুপুরে সাঘাটা উপজেলার ভরতখালী গ্রামে জুবায়েরের বাড়ির এলাকা ঘুরে এসব তথ্য মেলে।

একমাত্র সন্তান জুবাযে়রকে হারিয়ে শোকে কাতর বাবা জাহিদুল ইসলাম বলেন, মানুষের বিপদ দেখলে জুবায়ের নিজেকে সামলে রাখতে পারত না। তাদের পাশে দাঁড়াত। শুধুমাত্র মানুষের সেবা করার লক্ষ্যেই বড় হয়ে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখত জুবায়ের।

কাঁদতে কাঁদতে তিনি আরও বলেন, দুদিন আগে ছেলের সঙ্গে তার মোবাইল ফোনে কথা হয়। জোবায়ের ঈদে তাকে একটি পাঞ্জাবি উপহার দিতে চেয়েছিল। টাকা কোথায় পাবে? জিজ্ঞাসা করলে বলেছিল, তোমরা প্রতি মাসে আমাকে যে টাকা দাও, সেখান থেকে বাঁচায়ে তোমাকে পাঞ্জাবি গিফট করবো। কিন্তু ছেলের পাঞ্জাবি গায়ে দেওয়ার সৌভাগ্য আমার হলো না। সে বাড়িতে ফিরলো লাশ হয়ে।

কথা বলার মতো অবস্থা ছিল না জোবায়েরের মা জেবা বেগমের। ছেলে হারানোর শোকে তিনি বিলাপ করছিলেন।

গাইবান্ধা এসকেএস স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষিকা লিজা আক্তার বলেন, নম্র-ভদ্র স্বভাবের জুবায়ের ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছিল। সে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি পেয়েছিল। এসএসসিতে পেয়েছিল জিপিএ-৫। কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ৭১ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে তার রোল ছিল ১৩। ভালো ফলাফলের কারণে নবম শ্রেণি থেকেই এখানে বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ পায় জুবায়ের।

শহরের থানাপাড়া এলাকার আদিল ছাত্রাবাসে থেকে পড়াশুনা করত জুবায়ের। আসছে জুনে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল তার।

তিনি আরও জানান, সোমবার দুপুরের দিকে সদরের মাঝিপাড়া এলাকা দিয়ে প্রাইভেট পড়তে যাচ্ছিল জুবায়ের। এ সময় ছেলেসহ এক নারীকে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিতে দেখে তাদের বাঁচানোর চেষ্টা করে জুবায়ের। একপর্যায়ে শিশুটিকে বাঁচাতে পারলেও ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় রাজিয়া ও জুবায়ের।  

নিহত রাজিয়া বেগম মাঝিপাড়া এলাকার শ্রমিক আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিন বছর আগে মোবাইলে প্রেমের সম্পর্কের পর সুনামগঞ্জ থেকে গাইবান্ধায় এসে আনোয়ার হোসেনকে বিয়ে করেন রাজিয়া। পরিবারের অমতে বিয়ে হওয়ায় রাজিয়ার বাড়ি থেকে কেউ গাইবান্ধায় আসতেন না। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাজিয়াকে নিয়মিত শারীরিক নির্যাতন করতেন আনোয়ার।

এরই ধারাবাহিকতায় ঘটনার আগের দিন রাতে দাম্পত্য কলহের জেরে রাজিয়াকে শারীরিক নির্যাতন করে রাতভর দেড় বছরের শিশু সন্তানসহ ঘরে উঠতে দেননি আনোয়ার। সকালে পরিবেশ স্বাভাবিক হলেও দুপুরে রান্নায় দেরি করায় স্ত্রীর ওপর ফের চড়াও হন আনোয়ার। এতে মনের ক্ষোভে ছেলেকে কোলে নিয়ে দুপুর দেড়টার দিকে লালমনিরহাট থেকে সান্তাহারগামী টোয়েন্টি ডাউন ট্রেনের সামনে আত্মহত্যার জন্য দাঁড়ান রাজিয়া।  

বিষয়টি টের পেয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁচাতে এগিয়ে যান জুবায়ের। প্রাণপণ চেষ্টায় শিশু আবিরকে রেললাইনের বাইরে ফেলতে পারলেও ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ট্রেনে কেটে প্রাণ হারান জুবায়ের ও রাজিয়া।

ইএইচ

Link copied!