ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

‘এখন আমার কি হবে, মনুরে লইয়া কোন পথে যামু’

এস.এম. পারভেজ, ঝালকাঠি থেকে

এস.এম. পারভেজ, ঝালকাঠি থেকে

এপ্রিল ১৯, ২০২৪, ০৩:৫৭ পিএম

‘এখন আমার কি হবে, মনুরে লইয়া কোন পথে যামু’

জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী শহিদুল খান (৪৬)। পিতা বাদশা খান ছিলেন নৌকার মাঝি। শহিদুলের মানসিক অবস্থা ভালো থাকলেও তার দু’পা ছিল বিকলাঙ্গ। হাতে ভর করে টিউব বেঁধে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ভিক্ষা করে সংসার চালাতো শহিদুল খান। বয়স যখন ৮ বছর সেই থেকে ঝালকাঠির গাবখান ফেরিঘাটে ও ফেরিতে ভিক্ষা করা শুরু করেছিল শহিদুল।

গত ৪-৫ বছর যাবৎ সে নিয়মিত ভিক্ষা করতো গাবখান সেতুর পূর্বপাড়ে টোল প্লাজায়। তার আপন দুই ছোট ভাই সেতুর টোল প্লাজার কর্মী হিসেবে কাজ করে।

বুধবার দুপুরে প্রতিদিনের মতো রামনগর গ্রামের বাড়ি থেকে মাত্র দুইশ গজ দূরত্বে গাবখান সেতুর টোলে ভিক্ষা করছিল শহিদুল। একটি সিমেন্ট বোঝাই ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি প্রাইভেটকার ও ৩টি অটোরিকশাকে চাপা দিয়ে খাদে পড়ে গেলে সেখানে গুরুতর আহত হয় প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক শহিদুলও। বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল ৪টার দিকে সে মারা যা্যে। স্বজনরা তার মৃতদেহ শনাক্ত করলে পুলিশ পরিবারের কাছে মৃতদেহ হস্তান্তর করে।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক  কবরস্থানে দাফন করা হয় শহিদুলের লাশ। আর কোনোদিন দেখা যাবে না শহিদুলকে ভিক্ষা করতে গাবখান সেতুর টোলে।

দাফনের পর শহিদুলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, স্ত্রী হেলেনা বেগম স্বামী হারানোর শোকে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। আড়াই বছর বয়সী ছোট মেয়েকে কোলে নিয়ে করুণ ভাষায় বিলাপ করে বলছেন ‘আল্লাহরে এখন আমার কি হবে, মনুরে লইয়া কোন পথে যামু, কেমনে বাঁচবো। ও আল্লাহ তুমি এ কেমন বিচার করলা !

শহিদুলের বাবা বাদশা খান ছিল নৌকার মাঝি। ঝালকাঠির অতুল মাঝির খেয়াঘাট আর গাবখান নদীতে সে খেয়া নৌকা চালাতো। বাবার মৃত্যুর পর ঝালকাঠির গাবখান ফেরিঘাটে ও ফেরিতে ভিক্ষা করা শুরু করেছিল শহিদুল। ২০০১ সালে গাবখান সেতু চালু হওয়ার পরে ঝালকাঠি আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী গাড়িতে ভিক্ষা করতেন। বয়স বাড়ার সাথে সাথে দৈহিক গঠন বৃদ্ধিতে শরীর ভার হলে কলেজ মোড়ে ভিক্ষা করতো। সেখান থেকে আকলিমা মোয়াজ্জেম কলেজের সামনে এবং সর্বশেষ গাবখান টোলপ্লাজায় স্পিড ব্রেকারের পাশে বসে ভিক্ষা করতো। ৩০ বছর বয়সে সদর উপজেলার নেছারাবাদ গ্রামের শ্রমিক আশ্রাফ আলীর মেয়ে হেলেনাকে বিয়ে করে শহিদুল। দা

ম্পত্য জীবনে শহিদুলের আড়াই বছর বয়সী সায়মা আক্তার নামে এক কন্যা সন্তান রয়েছে। ভিক্ষার টাকায় চলতো শহিদুলের সংসার। প্রতিবন্ধী হলেও শহিদুলকে ভালোবাসতে ও শ্রদ্ধা করতো এলাকাবাসী সবাই। তার আচরণে মুগ্ধ ছিল ভিক্ষাদানকারীরাও।

তার আপন দুই ভাই সাইদুল ও সাদ্দাম গাবখান সেতুর টোল আদায়ের কাজ করে।

ছোট ভাই সাদ্দাম বলেন, আমি বুধবার টোলের ডিউটি শেষ করে দুপুরে খাবারের জন্য বাড়িতে আসার পরে গোসলে যাই। হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পাই। পরে দৌড় দিয়ে টোলের সামনে গিয়ে দেখি আমার ভাই ঘাতক ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে আছে। স্থানীয়রা তাকে ট্রাকের নীচ থেকে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছে। পরে তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শেবাচিমে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা চিকিৎসা চালায়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভাই আমাদের ছেড়ে চলে যায়।

ইএইচ

Link copied!