Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪,

বটিয়াঘাটায় ৩’শ কোটি টাকার তরমুজ বিক্রির সম্ভাবনা: চাষীদের মুখে হাসি

বটিয়াঘাটা (খুলনা) প্রতিনিধি:

বটিয়াঘাটা (খুলনা) প্রতিনিধি:

এপ্রিল ২৭, ২০২৪, ১১:৩২ এএম


বটিয়াঘাটায় ৩’শ কোটি টাকার তরমুজ বিক্রির সম্ভাবনা: চাষীদের মুখে হাসি

খুলনার বটিয়াঘাটায় ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে খরিপ-১ মৌসুমে তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। তার মধ্যে ড্রাগন-৯৪০ হেক্টর, পাকিজা- ৫৮০ হেক্টর, বাদশা-১৮০ হেক্টর, সুইট ড্রগন পাকিজা- ৫৪০ হেক্টর, হানিকুইন-১৩০ সহ মোট ২ হাজার ৬শ হেক্টর জমিতে ১ লাখ ১৭০ মেট্রিক টন তরমুজ উৎপাদিত হয়েছে।

সব থেকে বেশি চাষ হয়েছে ড্রাগন জাতের তরমুজ। এসব তরমুজের বাজার মূল্য প্রায় ৩শ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে দাবি করছে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের। উৎপাদিত এসব তরমুজ উচ্চমূল্যে বিক্রি করতে পেরে খুশি কৃষক।

গত বছরের বৃষ্টিতে তরমুজ চাষের ক্ষতি পুষিয়ে এবার লাভবান হবে চাষিরা। তরমুজের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসির ঝলক চোখে মুখে। উপকূল এলাকার চারপাশে লবণ পানি, বেড়ীবাধের মধ্যে মিষ্টি পানির আঁধার তৈরি করে বটিয়াঘাটা উপজেলার তরমুজ চাষিরা।

উপ-সরকারী কৃষি কর্মকর্তা সরদার আব্দুল মান্নান বলেন, ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে উপজেলার সুরখালী ইউনিয়নে ১৫ শ হেক্টর, গঙ্গারামপুর ইউনিয়নে ৭৬০ হেক্টর,সদর ইউনিয়নে ১১৯ হেক্টর,ও জলমা ইউনিয়নে ৬ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, মাঠের পর মাঠ তরমুজ ক্ষেত।

চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে তরমুজ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভাল হয়েছে। তবে বৃষ্টি হলে তরমুজের ফলন দ্বিগুণ বেড়ে যেত। ক্ষেত থেকে তরমুজ তুলে জড়ো করে রেখেছেন বিক্রির জন্য। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যাপারীরা তরমুজ কিনতে ক্ষেতে গিয়ে চাষিদের সঙ্গে দরদাম করে ক্ষেতসহ কিনে নিচ্ছেন।

এই তরমুজ ক্ষেত থেকে ট্রলি বোঝাই করে ট্রাক ও কার্গো ভর্তি করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানো হচ্ছে। বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই ক্ষেত থেকে তুলে বাজারজাত করার জন্য ব্যস্ত চাষি ও ব্যবসায়ীরা। বাজার দাম ভালো পাওয়ায় খুশি কৃষকেরা। কেউ ক্ষেত হিসাবে তরমুজ বিক্রি করছেন আবার কেউবা পাইকারি বাজারে তরমুজ বিক্রি করছেন। এতে উৎপাদন খরচ পুষিয়ে লাভবান হচ্ছেন কৃষকেরা। ইতিমধ্যে ৪০ শতাংশ তরমুজ ক্ষেত বিক্রি হয়ে গেছে।

স্থানীয় সুকদাড়া এলাকার কৃষক তমাল গোলদার, নিখিল রায়,উজ্জ্বল বিশ্বাস, ও রায়পুর এলাকার আরোজ আলী গাজী জানান, বিগত বছরে তরমুজ চাষে আর্থিকভাবে লোকসান হলেও এবার লাভের মুখ দেখছেন চাষিরা। তবে অনাবৃষ্টির কারণে পানি দিতে অধিক টাকা খরচ হয়েছে।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জীবনানন্দ রায় ও দীপন কুমার হালদার বলেন, তরমুজ চাষ করতে বিঘা প্রতি খরচ হয় ২৫/ ৩০ হাজার টাকা । প্রতি বিঘা তরমুজ ৯০ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে । আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গত বছরের তুলনায় এ বছর তরমুজের ফলন ভালো হয়েছে।

বটিয়াঘাটা উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ আবু বকর সিদ্দিক বলেন, এ বছর তরমুজের ফলন ভালো হয়েছে। তবে মিষ্টি পানির পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় তরমুজ চাষে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। এসব এলাকায় খাল খনন করে মিষ্টি পানি সংরক্ষণ করতে পারলে তরমুজের চাষ আরও বাড়ানো যেত। এখন পর্যন্ত বাজারে তরমুজের দাম সন্তোষজনক। ইতিমধ্যে উপজেলার বিভিন্ন ক্ষেতের ৪০/৪৫ ভাগ তরমুজ বিক্রি হয়ে গেছে।

এ বছর বাম্পার ফলন হওয়ায় আগামীতে তরমুজ চাষে কৃষকদের আগ্রহ আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিআরইউ

Link copied!